বেশ্যার বারমাস্যা

পর্ব: ১১০

লিঙ্গপুরাণ শাস্ত্রে পাতায় পাতায় অশ্লীলতা ও বিকৃত যৌনতা।

সুজিৎ চট্টোপাধ্যায় : এই পর্বে হিন্দু শাস্ত্রের লিঙ্গ পুরাণে একটু খোঁজখবর করব। পুরাণকে হিন্দু ধর্মে প্রবল পবিত্র ধরা হলেও পাতায় পাতায় রয়েছে অশ্লীলতা। শুধু অশ্লীলতা বললে ভুল হবে অনেক ক্ষেত্রে বিকৃত রুচি ধরা পড়ে। মান বাঁচাতের অনেক হিন্দু পণ্ডিত বিষয়টিকে স্থান কাল পাত্র হিসেবে ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। বেশ্যা শব্দের সঠিক অর্থ সম্বন্ধে অবহিত না হয়েই আমরা শব্দটিকে ব্যবহার করি। এমনটাই লিখেছেন সন্দীপ ঘোষ লিঙ্গ পুরাণে বেশ্যা প্রবন্ধে। প্রবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছিল বাংলা ও বাঙালি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রথম বর্ষের ১৯/২১ সংখ্যায় ২০১২ সালে।

বাৎস্যায়নের কামশাস্ত্রে চৌষট্টিকলার পারদর্শিনীকেই।বেশ্যা বলা হয়েছে।

লেখক লিখেছেন,,,, চৌষট্টি কলায় পারদর্শিনী অসামান্য রূপবতী , গুণবতী, শীলবতী হলেও বাৎস্যায়নের মতে তাঁরা কুম্ভদাসী, রূপাজীবা, পরিচারিকা, কুলটা স্বৈরিণী, নটী, শিল্পকারিকা, প্রকাশবিনষ্টা ছাড়াও গণিকা হতে পারেন। কিন্তু বেশ্যা নৈব নৈব চ। তন্ত্রে পূর্ণাভিষিক্তা শক্তিই বেশ্যা। ব্যভিচারিণী কুলটা _এঁরা বেশ্যা নন। কালী , তারা ত্রিপুরা ইত্যাদি দশমহাবিদ্যা ও তাঁদের আবরণ দেবতাদের বেশ্যা বলা হয়।

শাস্ত্রে বৈশ্যা ভিন্নার্থক পারিভাষিক শব্দ। যে পণ্ডিতেরা একে সমর্থন করেন তাঁদের মতে বেশ্যাদার পূণ্যশোষী। যে পুরুষ বেশ্যালয়ে প্রবেশ করে তার সমস্ত পূণ্যবল ঐ বেশ্যাদার শোষণ করে নেয়। শ্রুতি সুখকর হলেও তা শাস্ত্রসম্মত নয়। বেশ্যা শব্দের বর্ণ বিশ্লেষণ করলে দাঁড়ায় ব ঋ এ ঋ শ ঋষ ঋ আ। শ্রীপঞ্চানন শাস্ত্রীর মতে, তন্ত্রাবিধানের বর্ণবিধানে আছে _ ব = বাল বা নব, এ= শক্তি, শ= বৃষঘ্ন, বৃষ যদি ধর্ম হয় তবে বৃষঘ্ন ধর্মহানি বোঝায় য= কালী, আ= প্রতিষ্ঠা। সব মিলিয়ে যা দাঁড়াল তা হল বালশক্তি বা নবজাতক সাধনাশক্তি সহায়ে বৃষঘ্ন বা ধর্মহানি ( দূর করে) কালীতত্ত্বে প্রতিষ্ঠাতা সাধিকাই বেশ্যা।( চলবে)

আগামী পর্ব ,৯ মে, শুক্রবার,২০২৫

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *