বেশ্যার বারোমাস্যা

পর্ব : ৪৬

বৈদিক যুগেও নারী ছিল পুরুষের ভোগ্যা।

সুজিৎ চট্টোপাধ্যায় : বেশ্যার বারোমাস্যা ধারাবাহিক শুরু করার মূহূর্তে বলেছিলাম বিষয়বস্তুর পরিধির হবে বৈদিক যুগ থেকে আজ পর্যন্ত। সেই শর্তেই এখন ফিরব বৈদিক যুগে। নেশায় কবি পেশায় সাংবাদিক সাযযাদ কাদির বাংলাদেশের নাগরিক। কিন্তু তিনি যখন তাঁর গবেষণাধর্মী হারেমের কাহিনী, জীবন ও যৌনতা গ্রন্থ রচনা করেন তখন তিনি হয়ে ওঠেন বিশ্বনাগরিক তাই অশেষ যত্নে তিনি গবেষণা করেন। তিনি তাঁর গ্রন্থে লিখেছেন,,,,একট পুরুষ কর্তৃক নারীভোগের বিষয়টি উল্লিখিত হয়নি বেদে। এপ্রথা বেদ- উত্তরকালের । ব্রাহ্মণ্য উপনিষদে ( আনুমানিক ৫০০ পূর্বাব্দ) অবশ্য বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। জাতক’কে যদি প্রাক- বৌদ্ধযুগের সমাজচিত্র বলে গ্রহণ করাযায় তাহলে বলতে হয় বুদ্ধের আবির্ভাবের আগে, পূর্বাব্দের পঞ্চম শতকে, পুরুষদের বহুগামিতা প্রচলিত ছিল বিশেষভাবে। মহা পদ্মজাতক- এ ১৬ হাজার রমণী অধ্যুষিত এক রাজকীয় সেরালিয়ো’র উল্লেখ আছে।

রাজা বিম্বিসার ও রাজগণিকা আম্রপালি।

তিনি আরও লিখেছেন, অবন্তীর রাজা প্রদ্যোৎ, মগধের রাজা বিম্বিসার ( আনুমানিক ৫৪৬-৯ পূর্বাব্দ) বিম্বিসারের পুত্র অজাতশত্রু ( আনুমানিক ৫৬৬-৪৮৬ পূর্বাব্দ)- এর সমসাময়িক রাজা উদয়নের শাসনকালে হারেম ছিল বলে উল্লেখ আছে ওই বৃত্তান্তে। বনভোজনে যাওয়ার সময় উদয়ন ( পালি বৃত্তান্তে উদেনা) তাঁর হারেম নিয়ে যেতেন সঙ্গে। একবার তিনি যখন তাঁর শিবিরে ঘুমিয়ে ছিলেন তখন হারেমের রমণীরা গিয়েছিল প্রখ্যাত বৌদ্ধ সন্ন্যাসী পিণ্ডোলা ভরদ্বাজের – এর মুখে ধর্মকথা শুনতে। ঘুম থেকে জেগে এ খবর পেয়ে উদয়ন এত ক্রুদ্ধ হন যে পিণ্ডোলাকে ধরেএনে তাঁর দেহে বেঁধে দেন পিঁপড়ার বাসা। পরে উদয়ন অবশ্য ওই সন্ন্যাসীর কাছে দীক্ষিত হন বৌদ্ধধর্মে। আরেকবার বনভোজনের সময় অনেক সহচরীসহ রাণী সমাবতী মৃত্যুবরণ করেন নারী – অবাসে সংঘটিত এক অস্বাভাবিক অগ্নিকাণ্ডে।( পৃষ্ঠা ৯)

বৈদিক যুগে হারেমের ভারতীয় নাম ছিল অন্তঃপুর।

এবার আসছি কঙ্কর সিংহ রচিত ধর্ম ও নারী, প্রাচীন ভারত গ্রন্থে যা লিখেছে সেই প্রসঙ্গে।লেখক লিখেছেন,,,, নারীর ইচ্ছাক্রমে বা ও অনিচ্ছাক্রমে নারীহরণের কথাও ঋগ্বেদ মধ্যে আছে। পুরু মিত্রের কন্যাকে বিমদ হরণ করেছেন।( ১/১১২/৭;১১৬/১) কোনো পুরুষ রাত্রে একটি নারীকে হরণ করতযাবেন তাই প্রার্থনা করছেন, মেয়েটির ভাইয়েরা যেন জেগে না যায়, কুকুরগুলো যেন না ডেকে ওঠে।[৭/৫৫/৫-৮]২। পুরুষের বহুবিবাহ ঋগ্বেদের সমাজে প্রচলিত ছিল। তার জন্য নারীর সপত্নীযন্ত্রণাও ছিল সেজন্যেই বারে বারে সপত্নীকণ্টক উদ্ধারের জন্য দেবতার কাছে প্রার্থনা করত নারী। ঋগ্বেদের দশকে মণ্ডলের ১৪৫ সূক্তের দেবতাই হলেন সপত্নীপীড়ন । ঋষি ইন্দ্রানী সূক্তের রচয়িতা। (চলবে)

পরবর্তী পর্ব আগামী সোমবার,২৩ সেপ্টেম্বর,২০২৪

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *