বেশ্যার বারোমাস্যা

পর্ব: ৯২

পারস্যে হারেম।

সুজিৎ চট্টোপাধ্যায় : গত পর্ব থেকে রাজা নবাবদের হারেমের কথা বলছি। সূত্র ধার করেছি বেশ কিছু বই থেকে। অন্যতম সাযযাদ কাদিরের হারেমের কাহিনী জীবন ও যৌনতা বইটি। লেখক ১০ পৃষ্ঠায় লিখেছেন, হারেম রমণীদের জন্য থাকতেন নির্ধারিত চিকিৎসক। হারেমের একপ্রান্তে বিশেষ করে পেছন দিকে থাকত ধাত্রীবিদ্যা ও বিভিন্ন ব্যাধিতে ব্যবহৃত ওষুধ-পথ্যের
ভাঁড়ার। মুসলিম ও হিন্দু শাসনামলে হারেম -রমণীদের জন্য আলাদা চিকিৎসালয় স্থাপনগণ্য হতো অত্যাবশ্যক বলে। হারেমে গুরুত্ব পেতো আমোদ -প্রমোদের ব্যবস্থা । অন্তঃপুরের একাংশে থাকতো বাদ্যযন্ত্র এবং হাতি, ঘোড়া ও রথের সাজসজ্জা। এগুলোর বিশেষ প্রয়োজন পড়তো পুরনারীদের বিহারকালে।

আকবরের আমলে মীনাবাজার বসত। যেখানে ক্রেতা বিক্রেতা হারেমের মেয়েরা। একমাত্র পুরুষ আকবরের অধিকার ছিল সেই মেলায় উপস্থিত থাকার।

লেখক জানিয়েছেন, কামকাতর রাজা নবাবরা মাঝেমাঝে মেলা বসাতেন প্রাসাদে। সেসব মেলায় অন্তঃপুরের মহিলাদেরই থাকতো প্রাধান্য।আকবরের এমন মিনা বাজার ছিল বিখ্যাত। সেমেলায় প্রবেশাধিকার একমাত্র ছিল রাজার। ক্রেতা -বিক্রেতা সবাই মহিলারা। কাশ্মীরের রাজা হর্ষ যিনি জ্ঞান রত্নাচূড় ভূষণে ভূষিত তিনি ছিলেন পণ্ডিত ব্যক্তি।আমদের তাঁর ছিল দুর্বলতা। দিনের বেশিরভাগ সময় তিনি ঘুমোতেন। সারারাত বসত মেহফিল।হাজার হাজার প্রদীপের আলোয় আমোদর বাসর উজ্জ্বল হয়ে উঠতে। একদিকে জ্ঞানবিজ্ঞানের আলোচনা , অন্যদিকে নাচগান। পান চিবানোর শব্দ মেয়েদের কলহাস্য ও অঙ্গের গহনার ঠুং ঠুং শব্দের মাদকতায় যেন এক স্বর্গীয় পরিবেশের। লেখক এই পরিবেশের তুলনা করতে গিয়ে লিখেছেন, এই মেলাকে বলা হতো ধন দেবতা কুবের ও মৃত্যু দেবতা যমের সম্মিলন স্থল _ স্বেচ্ছাচার ও আতঙ্কের এক যৌথ বিনোদন ব্যবস্থার।

কাশ্মীরের রাজা হর্ষ। দিনে ঘুমোতেন। রাতে মেহফিল।

রক্ষিতা রাখার চল সভ্যতার শুরু থেকেই ছিল বিশ্বের সর্বত্র। নিকোলাওস এ ভ্রিসিমটজিস এর একটি গ্রন্থের বাংলায় অনুবাদের করেছেন আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু। গ্রন্থটির নাম প্রাচীন গ্রীসে প্রেম ও যৌন জীবন। রক্ষিতা শীর্ষক এক অধ্যায়ে অনুবাদক ৪০ পৃষ্ঠায় লিখেছেন,,,,, রক্ষিতা হিসেবে পরিচিত ব্যবস্থাটি অতি প্রাচীন এবং সুবিস্তৃত ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের প্রতিটি প্রাচীন সভ্যতায় এর অস্তিত্ব দেখতে পাওয়া যায়।( চলবে)

পরবর্তী পর্ব আগামী ৩ মার্চ , সোমবার,২০২৫

******

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *