*
শ্রীজিৎ চট্টরাজ : জিরো ফুড সমীক্ষায় ভারত বিশ্বে প্রথম। অর্থাৎ পুষ্টিকর খাদ্য তো দূরের কথা,দুবেলা দু মুঠো অন্নের মুখ দেখে না মহান ভারতের ৭৬% শতাংশ শিশু। ইউনিসেফের সমীক্ষায় ৯২ টি দেশের মধ্যে শিশুর খাদ্যহীনতায় ভারত ৮৪ তম। এছাড়াও উচ্চতার দিক থেকে ভারতের শিশুর প্রায় ১৮.৭ শতাংশ ওয়েস্টেড। অর্থাৎ খর্বাকৃতি। সংখ্যার নিরিখে ৩৫.৫ শতাংশ।৬ থেকে ২৩ মাস পর্যন্ত বয়সী শিশুদের ১৯.৩ শতাংশের জোটে কেবল পানীয় জল। সেটাও পরিশুদ্ধ নয়। এই পরিস্থিতি ৩২ বছর আগেও ছিল। সেই সময়ে নলিনী মুখার্জি গ্রামাঞ্চলের প্রান্তিক অঞ্চলে বাচ্ছাদের পড়াতেন। ব্যবসায়ী কমলপ্রকাশের সঙ্গে পরিচয়। আরও কয়েকজন মিলে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে ব্রাত্য শিশুদের শিক্ষার জন্য এক তহবিল গড়ে তোলেন নিজেদের উদ্যোগে।কিন্তু লক্ষ্য করে দেখা যায়,খাদ্যের অভাবে অপুষ্টির শিকার বাচ্ছারা। প্রথমে দরকার খাদ্য। তারপর শিক্ষা। সেই লক্ষ্যে পথ পরিক্রমা।কেটে গেছে ৩২ টা বছর। দক্ষিণী প্রয়াসের এই জীবনবোধের উদ্যোগে রবিবার সকালে মধ্য কলকাতার আই সি সি আর মঞ্চে ছিল কচিকাঁচাদের ভিড়। এছাড়াও এসেছিলেন সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ কিছু মানুষ।
দক্ষিণী প্রয়াস এর সৃষ্টি আর্থিক দূর্বল শিশুদের বিনামূল্যে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া। এই মূহূর্তে প্রায় ৪০০ শিশু এই সুযোগ পাচ্ছে। ৩৭ জন শিক্ষক শিক্ষিকা ও ১৫ জন অশিক্ষক কর্মীদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় শুধু শিশুদের নয়,তাদের পরিবারের সদস্যদেরও স্বাস্থ্য পরিষেবা ও স্বকর্মসংস্থানের পরিকল্পনা রূপায়ণ করছে। পরিবারের হাতে তৈরি মান সম্পন্ন পণ্য বিশ্বের নজরে বিক্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই আয়ে শিশু ও তাদের পরিবারের শিক্ষা ও স্বাস্হ্য
পরিষেবায় খরচ হচ্ছে।৩২ তম বার্ষিক অনুষ্ঠানে শুধু মনোরঞ্জনের জন্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নয়, শিক্ষণীয় মনোরঞ্জনের অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়েছে। শিক্ষার্থীরা পরিবেশন করেছে পূর্ব কলকাতা জলাভূমি: পরিবেশ ও অর্থনীতি। বিশেষ কর্মশালার মাধ্যমে শিশুদের জলাভূমি ও প্রকৃতি রক্ষার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতন করার ব্যবস্থা হয়।
দক্ষিণী প্রয়াসের সভানেত্রী অনুভূতি প্রকাশ বলেন,সংগঠনের লক্ষ্য বজায় রেখে আমরা বিস্তৃতি নজর দিয়েছি।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক শান্তুনু রায়। তিনি সংস্থা ও পরিচালকমন্ডলী ও শিক্ষক- শিক্ষিকা এবং অশিক্ষক কর্মীদের আন্তরিক প্রয়াসের প্রশংসা করে বলেন , দেশকালের অবক্ষয়ের মুহূর্তে দক্ষিণী প্রয়াসের এই উদ্যোগ যথেষ্ট প্রশংসনীয়।