পর্ব: ৯৫

সুজিৎ চট্টোপাধ্যায়: গ্রিক সভ্যতার প্রথমদিকে গণিকা ছিল না। কারণ প্রত্যেক পুরুষের রক্ষিতা রাখার অধিকার ছিল। প্রথমত পুরুষের অবাধ যৌনতা তো বটেই, তাছাড়া বৈধ স্ত্রী যদি বন্ধ্যা হয়বা শুধু কন্যা সন্তানের জন্ম দেয় সেক্ষেত্রে স্বামী পুত্রসন্তান লাভের জন্য রক্ষিতার সঙ্গে সঙ্গম করতে পারে। ফলে বেশ্যাবৃত্তির প্রয়োজন ছিল না গ্রিকে একটা সময়ে। রক্ষিতা রাখার বিষয়টি প্রাচীন যুগ থেকে আজও কিছু অবশিষ্ট থেকে গেছে। তবে শুধু গ্রিসে নয়, প্রাচ্যেও রক্ষিতা রাখার আজও প্রচলন রয়েছে।

গ্রিসের রক্ষিতাদের অধিকাংশ এথেন্সে আসতেন গ্রিসের অন্যান্য নগর থেকে। খ্রিষ্টপূর্ব ৪৫১ বছর পর্যন্ত রক্ষিতাদের নাগরিক অধিকার ছিল না। পরবর্তী সময়ে নাগরিক অধিকার মিললেও এথেন্সের কোনো পুরুষকে বিয়ের অধিকার ছিল না। সেক্ষেত্রে এঁরা রক্ষিতা হিসেবেই থাকতেন। গ্রিসের বিভিন্ন নগর থেকে এথেন্সে আসা মেয়েরা ছিল গরীব। অনেকক্ষেত্রেই বিয়ের যৌতুক দেওয়ার অক্ষমতার জন্য মেয়েদের বিয়ে হতো না। তাঁরাই চলে আসতেন এথেন্সে রক্ষিতা হয়ে বাঁচতে। যেসব ক্ষেত্রে পিতা কন্যাকে বিয়ে দিতে পারতেন না, তাঁরা ধনীদের কাছে মেয়েদের রক্ষিতা রাখতেন এমন শর্তে যেখানে বলা হত কোনোদিন যদি গ্রহীতা রক্ষিতাকে ত্যাগ করেন সেক্ষেত্রে মহিলার পিতা কোনো ক্ষতিপূরণ চাইতে পারবেন না।

গ্রিক স্থাপত্যে যৌনতা।
এবার তাকাবো গ্রিসের যৌন অভ্যাস প্রসঙ্গে। রুশ লেখক নিকোলাওস এ ভ্রিসিমটজিস এর প্রাচীন ভ্রিসের প্রেম ও যৌনতা নিয়ে গ্রন্থের বাংলা অনুবাদে আনোয়ার হোসেনইন মঞ্জু লিখেছেন, গ্রিক সভ্যতায় যৌনতার এতই প্রভাব ছিল তা খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ ও চতুর্থ শতাব্দীর অনেক পাত্রের গায়ে আমরা প্রত্যক্ষ করেছি গ্রিকদের যৌন অগ্রাধিকারের দৃশ্য। এছাড়াও ধর্মীয় নিবেদনমূলক চিত্রে সমৃদ্ধ অনেক পাত্র রয়েছে, যেগুলো প্রধানত প্রজনন ( উদ্ভিদ ও প্রাণী) বিষয়ক b, অন্যগুলো কোনো অশুভ প্রভাব দূরীকরণজনিত। গ্রিক শিল্পীদের তুলিতে রূপকথার প্রাণী কল্পনায় যুক্ত হয়েছে যৌনতার ছবি। (চলবে)
পরবর্তী পর্ব, আগামী সোমবার ১৭ মার্চ ,২০২৫

***