পর্ব: ১০০

হিন্দু রাজাদের অন্তঃপুর।
সুজিৎ চট্টোপাধ্যায় : আগের পর্বে হারেমে রাজাকে হত্যার ঘটনা উল্লেখ করেছিলাম।এবার বলব হিন্দু রাজাদের হারেম যা অন্তঃপুর নামে পরিচিত সেই হারেমের কথা। রাজার বিবাহিত স্ত্রীদের বলা হয় পাটরাণী। বাকিরা উপপত্নী। উপপত্নী মানে রক্ষিতা। বেশ্যা যাদের বলা হয় তাদের সঙ্গে পার্থক্য এরা শুধু রাজা ও রাজার বন্ধুদের উপভোগের বস্তু হিসেবে ব্যবহৃত হতেন। রাজা কলষের রাণীর সংখ্যা ছিল ৭২। তাঁর পূর্বসুরী উন্মন্তবন্তি’র ছিল ১৪ জন। এই রাজার রাজত্বকাল ছিল ৯৩৭ থেকে ৯৩৯ সাল।

হিন্দু রাজাদের রক্ষিতাদের সম্পর্কে তথ্য লিপিবদ্ধ করেছিলেন পরিব্রাজক নিনিজ।
লেখক সাযযাদ কাদির তাঁর হারেমের কাহিনী জীবন ও যৌনতা গ্রন্থে লিখেছেন,১৩৪৬। – ১৬৪৬ অব্দে বিজয়নগরে অন্তঃপুরের জন্য নির্মাণ করা হতো বৃহৎ অট্টালিকা। পর্তুগিজ পর্যটক পায়েস (১৫২০-২২) লিখেছেন, রাজার প্রত্যেক বৈধ পত্নী থাকতেন নিজস্ব ভবনে। তাঁদের সেবাযত্নের জন্য ছিল সহচরী , পরিচালিকা , প্রহরিণী ও দাসী। ভবনের ভেতর খোজা প্রহরী ছাড়া কোনও পুরুষের প্রবেশাধিকার ছিল না। বিজয়নগর ভ্রমণকারী আরেক পর্যটক নুনিজ (১৫৩৫-৩৭) দিয়েছেন কিছুটা ভিন্ন বিবরণ। তিনি জানিয়েছেন, ওই রমণীরা মূল প্রাসাদের অভ্যন্তরেই থাকতেন বিভিন্ন কক্ষে। রাজপ্রাসাদের কক্ষগুলি ছিল বিশাল। এছাড়াও ছিল ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কক্ষ – মাঠে বা আশ্রমে যেমন থাকে। ওই কক্ষগুলোতে থাকতেন এক- একজন পত্নী, তাদের দাসীদের নিয়ে।
বিশ্রামের জন্য সভাকক্ষ থেকে ফেরার পথে রাজা ওইসব কক্ষের সামনে দিয়েই যেতেন। তখন দরজায় দাঁড়িয়ে তাঁকে ভেতরে আসার জন্য ডাকাডাকি করতেন পত্নীরা। তবে তারা কেউ পাট রাণী ছিলেন না। নুনিজ লিখেছেন, ওই রমণীরা ছিলেন সেনাধ্যক্ষ ও অমাত্যদের কন্যা । পরের পর্বে বলব মোঘল হারেমের কথা। ( চলবে)
আগামী পর্ব ৪ এপ্রিল ২০২৫
