ইন্দো ওয়েস্টার্ন শাড়ি শিল্পী ইরানী মিত্র প্রকাশ করলেন অভিনব বাংলা পাঁজি ডাইরি

শ্রীজিৎ চট্টরাজ : যুগের দাবিতে আজ শাড়ি শুধু মেয়েদের পোশাক নয় ,পুরুষদের ফ্যাশনেও ঠাঁই পেয়েছে শাড়ি। পল্লী কবি থেকে আধুনিক কাব্যে সাহিত্যে শাড়ি তার স্থান করে নিয়েছে নিজের আভিজাত্যের স্ফুরণে। পল্লীকবি জসীমউদ্দীন রোমান্টিকতায় লেখেন তবুও আবার রজনী আসিল, জামদানি শাড়িখানি, পেটেরা খুলিয়া সযতনে দুলী অঙ্গে লইল টানি। ষাটের দশকে বাংলাদেশের কবি আবুল হাসান লেখেন তুমি তো নও আম্রপালী, বর্তমানের নারী , তোমার লাগে লিনোলিয়াম সিফিংহেরা শাড়ি । চর্যাপদের সেই যুগ থেকে অবশ্য তাঁত ও তাঁতির উল্লেখ থাকলেও ছিল না শাড়ির কথা।১৪ শতকে প্রথম বৈষ্ণব পদাবলীর রচয়িতাবাঙালি কবি চন্ডীদাস লেখেন দীঘির জলে সদ্যস্নাত রাধা নীলাম্বরী শাড়ি পরে ঘরে ফিরছেন , কৃষ্ণ আবেগে প্লাবিত হয়ে বলে ওঠেন চলে নীল শাড় নিঙাড়ি পরান সহিত মোর,,,,,,,। আবার চন্ডীমঙ্গল কাব্যর ছন্দে কবিকঙ্কন মুকুন্দরাম বিয়ের অনুষ্ঠানের বর্ণনা দিতে গিয়ে লিখলেন , কেহ নেত কেহ সেত কেহ পাট শাড়ি চন্দন কুসুম কেহ বাটাভরা কড়ি। আবার দ্বিজ ঈশান লিখেছেন, অগ্নি পাটের শাড়ি কন্যা যখন নাকি পরে, স্বর্গের তারা লাজ পায় দেখিয়া কন্যারে।

ঠাকুর বংশের বৌঠান জ্ঞানদানন্দিনী দেবী স্বামীর সঙ্গে কর্মসূত্রে মুম্বাই গিয়ে সিন্ধি মহিলাদের শাড়ি পরার ধরনে আকৃষ্ট হয় বঙ্গ ললনাদের উপহার দিলেন আধুনিক শাড়ির ফ্যাশন। যুগের দাবিতে বাংলায় পোশাক শিল্পীরা সেই শাড়িকে দিয়েছেন নানা রূপ। এমনই এক পোশাক শিল্পী ইরানী মিত্র। শাড়ি নিয়ে তাঁর কল্পনার জগতে সৃষ্টি করে চলেছেন নিত্য নতুন রূপ। ইন্দো ওয়েস্টার্ন শাড়ির আবিষ্কার তাঁকে এনে দিয়েছে খ্যাত, যশ , সম্মান। বাংলা চলচ্চিত্রের শিল্পীরা তাঁর শাড়ির নান্দনিক শিল্পে অভিভূত। ২০০৮ এর সেই সন্ধিক্ষণ থেক সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলেছে। সোমবার সন্ধ্যার দক্ষিণ কলকাতায় নিজের স্টুডিওতে তিনি মিলিত হলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে । উপলক্ষ বাংলা পাঁজির ডাইরি নিয়ে। তিনবছর আগে ভেবেছিলেন এমন কিছু উপহার মডেল , চলচ্চিত্র জগতের অভিনেত্রী প্রযোজক ও পরিচালক বন্ধুদের ও মেকাপ আর্টিস্টদের দিতে চান যা বাজারে মেলে না। ইরানী মিত্রের মা চাইতেন বছরের নতুন পাঁজি। মাথায় এলো ডাইরিতে যদি পাঁজি সংযোজন করা যায়। তারপর সেই কল্পনা বাস্তবে রূপ নিল। সাড়া পরে গেল তাঁর পরিচিত মহলে। এবারেও প্রতিষ্ঠিত ও নবাগত মডেল ও মেকাপ আর্টিস্টদের তিনি ডাইরিতে স্থান দিলেন। তাঁদের সম্বর্ধনায় তাঁদের হাতে তুলে দিলেন স্মারক ও ডাইরি। ডাইরি প্রকাশ করলেন পরিচালক রাজা সেনের স্ত্রী পাপিয়া সেন সম্বর্ধিত হলেন মডেল ও মেকাপ আর্টিস্টরা। তালিকায় ছিলেন, মহুয়া রায়, রেহান চৌধুরী , দিব্যজ্যোতি বিশ্বাস, শালিনী ভট্টাচার্য, সাগরিকা গুপ্তা , রিক্তা আচারিয়া, পারমিতা চ্যাটার্জি , রাজলক্ষ্মী, শুভশ্রী সেন, নীলাঞ্জনা রায় সরকার,চন্দ রায,সোর্যেন্দু, আকাশ, সায়নী সম্প্রীতি ও সীমা দাস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *