পর্ব: ১১৬

ঋগ্বেদে আছে বশীকরণ মন্ত্র।
সুজিৎ চট্টোপাধ্যায় : সুরেশ চন্দ্র বন্দোপাধ্যায় ও রমলাদেবী তাঁদের ভারতীয় সমাজে প্রান্তবাসিনী গ্রন্থে ৪৩ পৃষ্ঠায় লিখেছেন, ঋগ্বেদেয় বিশেষত অথর্ববেদে অলৌকিক ব্যাপারে বিশ্বাস,কুসংস্কার,প্রভৃতির প্রতিফলিত হয়। বশীকরণ চর্চার বিশ্বস্ত ছিল।( ঋগ্বেদ ১০/৩৯/৫); স্বামী বা সতীনকে বশে আনার উল্লেখ আছে। দুঃস্বপ্ন ছিল ভীতিকর। নানারকম ভূতপ্রেতে বিশ্বাস ছিল বৈদিক যুগের লোকের। যাদু ও ইন্দ্রজালের অনেক তথ্য আছে বেদে।; অথর্ব বেদেই আছে অধিক পরিমাণে।
যুবতীর মনে যাতে প্রেমের সঞ্চার হয় b, এইজন্য প্রার্থনা আছে অথর্ববেদে। ঋগ্বেদে লিঙ্গপূজার উল্লেখ আছে (৭/২১/৫,১০/৯৯/৩)। এই প্রথা মেনে যাঁরা এইরূপ পূজা করত তাদের প্রতি যে প্রতিকূল মনোভাব ব্যক্ত হয়েছে তা থেকে b মনে হযঅনার্য সমাজে এই পূজার প্রচলন ছিল। এই বেদে বিভিন্ন পার্থিব দ্রব্যের মধ্যে সুন্দরী রমণী লাভের প্রার্থনা আছে m স্বামীর প্রেমলাভে স্ত্রীর ব্যগ্রতা লক্ষিত হতো। পতিবিরহ স্ত্রীর অত্যন্ত ভয়ের কারণ। উপপতির প্রতি আসক্তি অতিশয় ঘৃণিত। নরনারীর গোপন প্রেম নিন্দিহলেও এরূপ ব্যাপারে উল্লেখ আছে।

অথর্ববেদে বিভিন্ন দ্রব্যের সঙ্গে রমণীলাভের কামনা জানানো হতো ঈশ্বরকে।
লেখকদ্বয় আরও লিখেছেন, স্ত্রীলোকের চলাফেরা অন্তঃপুরেই সীমিত ছিল না। নারী পাহাড়েও আরোহণ করত। বিয়ে সাধারণতঃ অভিভাবকেরা ঠিক করলেও স্বয়ংবরের রীতি ছিল।( ১০/২৭/১২)। বিয়ের বয়সের ব্যাপারে কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম ছিল না। বোধহয় যোগ্য বরের অভাবে কোন কোন স্ত্রীলোককে অবিবাহিত অবস্থায় বুড়ো বয়স পর্যন্ত পিত্রালয়ে থাকতে দেখা যায়। এইভাবে সারা জীবন থাকলে সে পৈতৃক সম্পত্তির অংশ পেত।(২/১৭/৭) এইরূপ নারীকে বলা হতো অমাজ ( ঋগ্বেদ ২/১৭/৭)। (চলবে)
পরবর্তী পর্ব আগামী ৩০ মে,২০২৫
