বেশ্যার বারমাস্যা

পর্ব: ১১৫

বৈদিক যুগের দ্বিতীয় পর্যায়ে দেবতাদের মধ্যে নারী স্থান পেলেও সংখ্যায় ও প্রভাবে নগণ্য। একমাত্র সরস্বতী ছিলেন প্রধানা।

সুজিৎ চট্টোপাধ্যায়: এই পর্বে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বেশ্যা গণিকদের ছেড়ে চলুনযাই বৈদিক যুগে। বৈদিক যুগে মুনি ঋষিরা তপ ধ্যান আর যজ্ঞ করতেন। বৈদিক যুগের প্রথমার্ধে অগ্নি, বায়ু ও বরুণ থেকে পুরুষ দেবতাদের পাশে সময়ের দাবিতে নারী ঈশ্বরের সৃষ্টি। তবে সংখ্যায় কম। যেমন ঊষা। গায়ত্রী। তিলোত্তমা। সরস্বতী। আবার কিছু নারী দেবতা সৃষ্টি হলো যা অস্পষ্ট। যেমন মিত্রা বরুণ, ইন্দ্রাগ্নি, ইত্যাদি। বেদে দেবীরা তেমন প্রাধান্য পাননি একমাত্র সরস্বতী ছাড়া।
বৈদিক যুগের পর পৌরাণিক যুগ। রাজাদের পারিবারিক কাহিনী, মিত্রতা, শত্রুতা, যৌনতা বর্ণিত হলো বসে যুগের সমাজব্যবস্থার প্রেক্ষাপটে।

অথর্ববেদে যৌনতা ক্রমশ প্রাধান্য পেতে থাকে।

অবাক করা বিষয়, বৈদিক যুগ থেকেই সমাজে আচার অনাচার , বিষয়গুলি ছিল অদ্ভুত। যেমনঅতিরিক্ত মদ্যপান, জুয়া খেলে সর্বস্বান্ত হয়ে ঘরের মেয়েদের বাজি রাখা ছিল সমাজ স্বীকৃত। আবার এই বৈদিক সমাজে যৌন সম্পর্কে বিশ্বাসঘাতকতা, পিতা কন্যার অবৈধ যৌনতা, ভ্রাতা ভগ্নীরঅবৈধ যৌনতা ও গর্ভোৎপত্তি, বিধবা নারীর ও দেবরের যৌন মিলন , দস্যুতা, চৌর্য বৃত্তি, প্রতারণা ছিল অনাচার। কিন্তু স্বামীর মৃত্যুর ফলে অপুত্রক নারী একটি পুত্র সন্তান জন্ম না দেওয়া পর্যন্ত দেবরের সঙ্গে সহবাস করার প্রথা ছিল সমাজস্বীকৃত।

অথর্ববেদে স্বেচ্ছায় গর্ভপাতাদি পাপের প্রায়শ্চিত্ত বিহিত আছে। ব্রাহ্মণ নারীর অপহরণ অথবা তার সঙ্গে অবৈধ যৌন সম্বন্ধ মহাপাপ বলে গণ্য হতো কিন্তু বেশ্যাবৃত্তি ছিল স্বীকৃত। ঋকবেদে যা অনাচার অথর্ব বেদে সেটা স্বীকৃত। যেমন পিতা কন্যার , ভ্রাতা ভগ্নীর যৌন সম্বন্ধের উল্লেখ আছে জীবনে যৌন সম্ভোগ অতি সুখকর তার উল্লেখ আছে। অথর্ব বেদের ৪/৪ ও কৌশিক সূত্রে (৪০.১৪) তে রতিশক্তি বৃদ্ধির জন্য দেবতার কাছে প্রার্থনার মন্ত্র আছে। এই বেদে বিয়ে সংক্রান্ত একটি মন্ত্রে মহানগ্নী’র কল্পনায় কামশাস্ত্রের প্রভাব দেখা গেছে। এসবই উল্লেখ আছে সুরেশ চন্দ্র বন্দোপাধ্যায় ও রমলাদেবী লিখিত ভারতীয় সমাজে প্রান্তবাসিনী গ্রন্থের ( প্রকাশক সংস্কৃত পুস্তক ভাণ্ডার)৪৩ নং পৃষ্ঠায়। (চলবে )

আগামী পর্ব , সোমবার ২৬ মে,২০২৫

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *