পর্ব : ৯৩

গ্রীসে রক্ষিতা রাখা ছিল সামাজিক সম্মান
সুজিৎ চট্টোপাধ্যায় : প্রাচীন গ্রিসের প্রেম ও যৌনতা নিয়ে আলোচনা শুরু করেছি। এব্যাপারে তথ্য হিসেবে রুশ লেখক নিকোলাওস এ ভ্রিসিমজিসের লেখা গ্রন্থটির কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতেই হয় । মূল ইংরেজি বইটির বাংলা অনুবাদ করে কাজটা সহজ করে দিয়েছেন বাংলাদেশের অনুবাদক আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু। ঢাকার আহমদ পাবলিশিং হাউস থেকে প্রকাশিত বইটির ৪১ নম্বর পৃষ্ঠায় রক্ষিতা শীর্ষক অধ্যায়ে যা লিখিত সেটায় এবার নজর দিচ্ছি।

প্রাচীন গ্রীসে রক্ষিতা
অনুবাদক লিখেছেন, গ্রীসের অনেক জায়গায় বর্তমান শতাব্দীর সূচনাতেও এই আদিম ব্যবস্থাটি টিকে ছিল এবং এখনো কোন না কোন রূপে টিকে আছে। শুধু গ্রীস নয় , প্রাচ্যের অনেক দেশেই রক্ষিতা রাখার প্রচলন আছে। রক্ষিতা বা উপপত্নী ব্যবস্থাটির প্রধান কারণ ছিল তার গর্ভে সন্তান উৎপাদন, বিশেষ করে কারো বৈধ স্ত্রী যদি বন্ধ্যা হয় অথবা শুধু মাত্র কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়, সেক্ষেত্রে রক্ষিতার কাছে গমন অথবা তাকে বাড়িতে স্থায়ীভাবে রেখে মিলিত হওয়াকে আইনসম্মত বিবেচনা করা হতো। এবং দৃশ্যত: রাষ্টেরও তাই কাঙ্ক্ষিত ছিল। পেলোপনেসিও ( peloponnesian) যুদ্ধের সময় এথেন্সের প্রত্যেকটি নাগরিককে উৎসাহিত করা হয় রক্ষিতা গ্রহণের জন্য, এমনকি বিদেশি রক্ষিতা হলেও আপত্তি ছিল না। যুদ্ধে যে প্রাণহানি ঘটেছিল তা বৈধ সন্তানের জন্মদানের মাধ্যমে পূরণ করার জন্যই গৃহীত হয়েছিল এই ব্যবস্থা।

লেখক লিখেছেন, দার্শনিক সক্রেটিস স্বয়ং তার বৈধ স্ত্রী জান্থিপে থাকা সত্ত্বেও একজন রক্ষিতা গ্রহণ করেছিলেন , যার নাম ছিল ডায়োজেনিস লেয়ারটিয়াস। রক্ষিতা গ্রহণের ক্ষেত্রে গৃহীত একটি আইন অনুসারে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা পালনের প্রয়োজনীয়তা ছিল না। রক্ষিতারা পুরোপুরিভাবে স্বাধীন ছিল এবং দাসদের মতো আচরণ করা হতো না তাদের সাথে। এসব মহিলার অধিকাংশই এথেন্সে আসতো গ্রীসের অন্যান্য নগর রাষ্ট্র থেকে এবং তারা নাগরিক অধিকার বঞ্চিত ছিল।( চলবে)
পরবর্তী পর্ব : আগামী সোমবার ১০ মার্চ ২০২৫

*****