পর্ব : ৯০

হারেমে রাখা রক্ষিতা।
সুজিৎ চট্টোপাধ্যায়: প্রাচীন বৈদিক যুগই হোক বা আজকের আধুনিক যুগ, পুরুষের বহুগামিতা মান্যতা পায় মূলত তিনটি কারণে। এক, শারীরিক সক্ষমতা মেয়েদের চেয়ে বেশি। দুই, আর্থিক স্বাধীনতা কুক্ষিগত, তিন নারীর মত যৌনমিলনে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার সুযোগ নেই। ফলে নারীর তুলনায় যৌনতায় সক্ষমতা কম হলেও প্রতিদিন বছরব্যাপী যৌনতা বজায় রাখা সম্ভব। ফলে বহু নারীতে পুরুষের অদম্য আগ্রহ। কোথাও নারীর পরিচয় বিবাহিত স্ত্রী হিসেবে, কোথাও উপপত্নী হিসেবে কিম্বা গণিকালয় পরিষেবায় নিয়ে।

তুর্কি রাজার হারেম।
এই পর্ব থেকে কয়েকটি পর্বে হারেমের জীবন ও যৌনতা নিয়ে বলব। আজকের পর্বে সাযযাদ কাদিরের লেখা হারেমের কাহিনী গ্রন্থ থেকে কিছু তথ্য তুলে ধরছি। হারেম শব্দের উৎপত্তি বলত হয়, হারেম শব্দটির এসেছে আরবি হারাম ( অবৈধ) কথাটির থেকে। তুর্কিরা কথাটিকে সহনীয় করে নেয় ,তারপর যোগ করে লিক। ফলে তুর্কি ভাষায় বাড়ির যে অংশে মহিলারা থাকেন তার নাম হয় হারেমলিক। ইউরোপীয়রা হারেমকে জানে সেরালিয়ো নামে।এখানে ইতালিয়ান ওর ফারসি ভাষার একটি অদ্ভুত সংমিশ্রণ ঘটেছে।ইটলিয়ণী ভাষায় সেররালিয়োন কথাটির অর্থ বন্য প্রাণীর খাঁচা। এর উৎপত্তি লাতিন সেরা ( গরাদ) থেকে। তবে ফারসি সরা ও সরাই ( ভবন , বিশেষ করে প্রাসাদ , কিন্তু উপমহাদেশে অর্থ দাঁড়িয়েছে বিরতিস্থল ও পান্থশালা) শব্দের সঙ্গে কাকতালীয় সাদৃশ্যের কারণে এমন অর্থান্তর ঘটেছে এর।

হিন্দু রাজার হারেমকে বলা হত অন্তঃপুর।
লেখক লিখেছেন, রাজপরিবারের মহিলাদের আবাসস্থল হিন্দু সমাজে অন্তঃপুর নামে পরিচিত। একথাটি থেকে বোঝা যেতো প্রাসাদে তাদের অবস্থান কোথায়? নিরাপদ, আশ্রিত ও সাধারণ লোকচক্ষুর আড়ালে। তবে হিন্দু ও মুসলিম হারেমে সাদৃশ্য ছিল অনেক। অন্তঃপুর কথাটির আদি অর্থ ছিল নগরীর কেন্দ্রস্থলে নির্মিত নিরাপত্তা ও সংরক্ষণমূলক ব্যবস্থা। পালি ভাষায় মহিলাদের আবাসস্থলকে বলা হয় ইত্থাগারা ( স্ত্রী আগার)। ( চলবে)
আগামী পর্ব ,২৪ ফেব্রুয়ারি, সোমবার,২০২৫

*****