*******
শ্রীজিৎ চট্টরাজ : কবি ভারতচন্দ্র লিখেছিলেন, আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে। কথাটা একটু পাল্টে বাঙালি এও বলে থাকে আমার সন্তান যেন থাকে মাছে ভাতে। এছাড়া এমনও প্রবাদ আছে , মৎস্য মারিব খাইব সুখে। কিন্তু সময় পাল্টেছে। আমার সন্তান কেন আমি নিজেই আর কতদিন মাছে ভাতে থাকব সেটা প্রশ্নবোধক চিহ্নের মুখে। আর মৎস্য মারা নয়, বিষে মাখা মাছ খেয়ে গাইতে হবে আমি জেনেশুনে বিষ করেছি পান।
বাজারে গিয়ে মাছের কানকো উল্টে , গন্ধ শুঁকে টাটকা মাছ কিনে বিজয়ী সম্রাটের মত বাড়ি ফিরছির। ঝাল ঝোল কালিয়ায় মাছের টুকরো জারিত করে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলছি। কিন্তু বাংলার ভূমিপুত্র মৎস্যজীবীরা যা বলছেন তাতে রক্তচাপ বাড়ানো ছাড়া আর কিছু নয়। কি বলছেন মৎস্যজীবীরা? আমরা নদী পুকুর বা সমুদ্রের যে টাটকা মাছ খাচ্ছি আসলে তা বিষের আকর। পরিবেশ বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, ডলোমাইট দূষণে বিপন্ন দেশের জলাশয়। বিপন্ন মাছ। যে সব মাছ জীবিত , তারা আক্রান্ত বিষক্রিয়ায়। সেই মাআমরা যখন খাচ্ছি তখন নিজের অজান্তেই আক্রান্ত হচ্ছি ক্যান্সারসহ মারাত্মক কিছু রোগে।ইয়েট কথার প্রতিধ্বনি মিলল মঙ্গলবার বিকেলে প্রেস ক্লার কলকাতায়।
ফ্লেজারগঞ্জ থেকে ফারাক্কা জলপথে নৌ প্রচারে নেমেছেন দক্ষিণবঙ্গ মৎস্যজীবী ফোরাম । সংগঠনটি ন্যাশনাল ফেডারেশন অফ স্মল স্কেল ফিশ ওয়ার্কার্স নথিভুক্ত। মৎস্যজীবীদের অস্তিত্ব রক্ষার সঙ্গে সঙ্গে দূষণমুক্ত দেশগড়তে জল বাঁচাও , মাছ বাঁচাও , মৎস্যজীবী বাঁচাও শ্লোগান নিয়ে। সংগঠনের নেতৃত্বের পক্ষে বক্তব্য রাখেন দক্ষিণবঙ্গ মৎস্যজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মিলন দাস, ন্যাশনাল ফেডারেশন অফ স্মল স্কেল ফিশ ওয়ার্কার্স এর সভাপতি প্রদীপ চ্যাটার্জি . পরিবেশকর্মী ও সবুজ মঞ্চের সম্পাদক নবকুমার দত্ত প্রমুখ। এঁরা প্রত্যেকেই বলেন,সরকারীর মহলের পূজিপতি তোষণে বঞ্চিত করে ক্ষুদ্র মৎস্যজীবীদের জীবন জীবিকার অস্তিত্ব সংকট করে তুলেছেন। বিভিন্ন কর্পোরেট গোষ্ঠী কারখানা চালিয়ে যে বর্জ্য পদার্থ সৃষ্টি করছে তাই পাঠাচ্ছে নদীতে সমুদ্রে। অন্যদিকে চুক্তির চাষে ব্যবহৃত রাসায়নিক পদার্থ মিশছে খালে , দীঘি,পুকুরে ও ডোবায় ।
সবচেয়ে বড় কথা বাংলার ভূমিপুত্র মৎস্যজীবীদের জলে অধিকার কেড়ে নেওয়ার হয়েছে। অবিলম্বে মৎস্যচাষের অঞ্চলকে পাট্টা দেওয়ার দাবি জানানো হচ্ছে। মাছের বাজারের সংস্কার ও উন্নত মৎস্য বিপণন কেন্দ্র নির্মাণের দাবি রাখা হয়েছে। গঙ্গার মৎস্য শিকারের জায়গাগুলি দিয়ে বাণিজ্যিক জাহাজে চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হোক। এঁদের একটের শ্লোগান। জল যেখানে,জেলের সেখানে জাল যাঁর, জল তাঁর। রাজ্যে অনেকদিন ধরেই একজন মৎস্যমন্ত্রী থাকেন। কিন্তু বিবৃতি দিয়ে মাছ সংখ্যায় বাড়ছে এমন মিথ্যে কথা প্রচার চলছে বাম আমল থেকেই। এখনত তার পরিবর্তন ঘটেনি।