দিলীপ ঘোষকে হারাল বিজেপি

সুজিৎ চট্টোপাধ্যায় : ইয়ে তো হোনাই থা। দলের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে জ্যোতি বসু দলের আপত্তিতে প্রধানমন্ত্রী হলেন না। এবার শুভেন্দু শিবিরের অঙ্গুলি হেলনে আর এস এস সৈনিক নিজেকে দলীয় নিষ্ঠা পালন করতে আত্মাহুতি দিলেন। তাঁকে দল জয়ী আসন মেদিনীপুর থেকে সরিয়ে পাঠানো হলো বর্ধমান – দুর্গাপুর কেন্দ্রে। ব্যথিত দিলীপ ঘোষ দলের আদেশ মাথা পেতে নেন। দিলীপ ঘোষ কে প্যাভিলিয়নে পাঠালেন কীর্তি আজাদ। বলা যায় দিদির কীর্তিতেই বর্ধমানের মাটিতে আজাদ পনছি হলেন ক্রিকেটার আজাদ। তবে দিলীপকে হারানোর সাফল্য যদি কাউকে দিতে হয় সেই শুভেন্দু অধিকারীর প্রাপ্য। গত পাঁচবছর মেদিনীপুরে কাজ করেন দিলীপ ঘোষ।

বিজেপিতে দিলীপ ঘোষ অনুগামী হওয়ায় দলে ব্রাত্য রাজু ব্যানার্জি ও সায়ন্তন ঘোষ

অথচ তাঁকে সরিয়ে দিল্লি নেতৃত্বকে বুঝিয়ে শুভেন্দু সরিয়ে দিলেন দিলীপ। এমনটাই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বর্ধমান – দূর্গাপুর কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয় শুভেন্দু শিবিরের অগ্নিমিত্রা পলকে। সুকান্ত মজুমদারকে যেদিন বিজেপি রাজ্য সভাপতি পদে দিলীপের স্থলাভিষিক্ত করল, সেদিন থেকেই দিলীপ ঘোষ অনুগামী রাজু ব্যানার্জি, সায়ন্তন ঘোষ চলে গেলেন পিছনের সারিতে। সন্দেশখালি কাণ্ডে শুভেন্দু অনুগামীরা সামনে এলেও দিলীপ ঘোষকে দেখা যায়নি।সাংবাদিকদের দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, অনেকের থেকে সন্দেশ খালি আমি ভালো চিনি।তবু আমাকে ওখানে যেতে বলে নি দল। গলায় অভিমান থাকলেও আর এস এস করা সৈনিক মুখ বুঝে অপমান মেনে নিয়েছিলেন। দিলীপ ঘোষের অতি বড় শত্রুও স্বীকার করেন বাংলায় বিজেপির উত্থানে যাঁর সবচেয়ে বেশি অবদান তিনি দিলীপ ঘোষ। এরপর থেকেই পুরানো আর এস এস কর্মীরা মেনে নিতে পারেননি দিলীপ ঘোষকে ব্রাত্য করে রাখার ছক।

অকৃতদার দিলীপ ঘোষ দেশ জুড়ে আর এস এস প্রচারকের ভূমিকা নিয়েছেন। বঙ্গে আর এস এস প্রভাব সরিয়ে তৃণমূল থেকে আসা শুভেন্দু অধিকারী ও ২০১৪ সালে বিজেপিতে আসা সুকান্ত মজুমদার শিক্ষকতা ছেড়ে বালুরঘাট কেন্দ্রে ২০১৯ সালে তৃণমুলের অর্পিতা ঘোষকে হারিয়ে সামনের সারিতে আসেন। এই দুই নেতাকে দিল্লি বিজেপি গুরুত্ব দেওয়ায় দিলীপ ঘোষ দলে গুরুত্ব হারান। রাজনীতির আবর্তে এমন বহু নেতা হারিয়ে যান। কিন্তু দিলীপ ঘোষকে গুরুত্বহীন করার মাশুল বিজেপি যা পেল তার থেকে কি দিল্লি বিজেপি শিক্ষা নেবে? রোজ যেভাবে টিভিতে থাকেন শুভেন্দু অধিকারী ফল ঘোষণার দিন সকাল থেকে আজ বিকেল পর্যন্ত শুভেন্দু অধিকারীর কোনো খোঁজ নেই। তাঁর অস্তিত্ব কি সংকটে। কেননা ভবিষ্যতের মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্ন নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে এলেও বর্তমানে প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের উত্থান তাঁকে চাপে রাখছে। তমলুকে জিতেছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। যেটা শুভেন্দু অধিকারীর জন্য অস্বস্তির কারণ হতে চলেছে। এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *