বেশ্যার বারোমাস্যা

পর্ব: ১০৩

সম্রাট জাহাঙ্গীরের বড় ছেলে শাহজাদা খসরু।

সুজিৎ চট্টোপাধ্যায়: মুসলিম কট্টরপন্থীরা আল্লার বিধান নামে বলে ছবি আঁকা হারাম। তবে মোঘল প্রাসাদে এত আঁকা ছবি এলো কোথা থেকে?হারেমের কাহিনী , জীবন ও যৌনতা গ্রন্থে সাযযাদ কাদির লিখেছেন, শাহজাদা খসরুর মায়ের নাম ছিল শাহ বেগম। তিনি ছিলেন। রাজা ভগবান দাসের কন্যা ও রাজা মানসিংহের বোন। তাঁর মহলের সামনে ছিল এক উঁচু বাতিস্তম্ভ। এই ধরণের বাতিস্তম্ভ থাকত রাজাদের তাঁবুর সামনে।

মোঘল যুগের হারেম।

শাহ বেগম যেহেতু সম্রাটকে পুত্র তথা উত্তরাধিকারী। উপহার দিয়েছিলেন সেজন্যই এমন সম্মাননার ব্যবস্থা করা হয়। তবে এই বাতিস্তম্ভ ছিল হিন্দু ও জৈনদের দীপস্তম্ভ ঐতিহ্যের অনুকরণে। সেই মহলের বারান্দাও ছিল প্রশস্ত। যেখানে সম্রাট জাহাঙ্গীর মাঝেমাঝেই বসতেন। তাঁর মাথার ওপর দেয়ালেও ছিল বীভৎস ও কুৎসিত সব চিত্র। সম্ভবত ভারতীয় ও মোঘল চিত্রকলা সম্পর্কে পর্যটক উইলিয়াম ফ্রিঞ্চের সম্যক ধারণা ছিল না।

সম্রাট জাহাঙ্গীর।

সেই মহলে ছিল আরও কিছু ছবি। রাণীদের সঙ্গে রাজার। এছাড়া রাজার বিভিন্ন ভঙ্গিমার প্রতিকৃতি। যেমন রমণীদের সঙ্গে, সেই রমণীরা কেউ হাতে সুরাপাত্র নিয়েকারও হাতে সুরাপিয়ালি। কারও হাতে তোয়ালে, কারও হাতে সম্রাটের তলোয়ার, তীর ধনুক। যাঁরা নারী সশস্ত্র প্রহরী। সম্রাট জাহাঙ্গীর যেখানে বসতেন , পিছনের দেওয়াল ছিল সোনায় মোড়া। দেয়ালে পূর্বপুরুষ আকবর, হুমায়ূন ও বাবরের প্রতিকৃতি। কিন্তু তাঁদের পোশাক ছিল ফকিরের মত।

সম্রাট জাহাঙ্গীরের অমাত্য আসফ খানেরও ছিল হারেম।

শুধু রাজার হারেম ছিল এমনটা নয়। রাজার অমাত্যরাও গড়ে তুলেছিল নিজেদের হারেম। লাহোর দুর্গের পূর্বদিকে প্রাচীর ঘেঁষে ছিল আসফ খান ওরফে জাফর বেগের প্রমোদ-উদ্যান। জাহাঙ্গীরের এলাহাবাদে ছিল বেলে পাথরের লাল দুর্গ। দেখতে অবিকল আগ্রার প্রাসাদের মত। প্রাসাদের অন্তঃপুরে হারেমে থাকতেন ১৬ জন রক্ষিতা।, বেগম ও দাসী বাঁদি। দুর্গের মাঝখানে বাদশার ত্রিতল ভবন। প্রতি তলায় v১৬ টি কামরা। মোট ৪৮ টি কামরা ছিল বিচিত্র রঙের চিত্রাবলী। একতলায় মাঝখানে এক সুদৃশ্য দিঘি।( চলবে )

পরবর্তী পর্ব আগামী সোমবার ১৪ এপ্রিল,২০২৫

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *