বেশ্যার বারোমাস্যা

পর্ব : ৬৭

মৃচ্ছকটিকা নাট্যে বসন্তসেনা ও চারুদত্ত। রচনটি বৌদ্ধ যুগের সামাজিক অবস্থায় গণিকাদের তথ্য মেলে।

সুজিৎ চট্টোপাধ্যায়: এই প্রবন্ধে আগের কিছু পর্বে যেমন বৈদিক যুগে ও রামায়ণ এবং মহাভারতের যে সময়কাল দাবি করা হয়, সেখানে গণিকাদের অবস্থান সমাজে কেমন ছিল জানাবার চেষ্টা করেছি। তেমনই মোঘল আমলে ও মিশর পারস্যে কি গণিকাদের অবস্থান তার কিছু তথ্য দিয়েছি।অগণিত সংখ্যগুলিতেও থাকবে আরও তথ্য। এই পর্বে বলব বৌদ্ধ যুগে ও জৈন সমাজে কথা। বৌদ্ধদের আদর্শ কুলবধু হিন্দুদেরই মত তবে যেমন হিন্দু সমাজে তেমনই বৌদ্ধদের মধ্যে , সর্বক্ষেত্রে যে গৃহিণীর প্রতি স্বামী সুবিচার করতেন তা মনে হয় না।এমনটাই ভারতীয় সমাজে প্রান্তবাসিনী গ্রন্থে পৃষ্ঠা ৮৪ তে লিখেছেন, সুরেশচন্দ্র বন্দোপাধ্যায় ও রমলাদেবী।

বুদ্ধদেবের স্মরণে এসে গণিকাবৃত্তি ত্যাগ করে সুজাতা।

লেখকদ্বয় আরও লিখেছেন, বৌদ্ধ সাহিত্যে থেকে জানা যায় যে ধনীদের কাছে স্ত্রী ভোগের সামগ্রী বা সন্তান প্রসবের একটি যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই ছিলেন না। হিন্দুদের শাস্ত্র সাহিত্য থেকেও এই কথাই মনে হয় যে, বৈদিক যুগে নারীর ধর্মচর্চায় পুরুষের সমান অধিকার থাকলেও, তিনি গৃহে সম্রাজ্ঞীরূপে প্রতিষ্ঠিত হলেও পরবর্তীকালে পুরুষের তুলনায় তাঁর প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ স্পষ্ট। বৌদ্ধ ধর্মে স্ত্রীলোককে ধর্মচর্চায় অধিকার দেওয়া হলেও তাঁকে একটু সন্দেহের চোখেই দেখার হত। কারণ এই যে স্ত্রীলোকের সংস্পর্শে পুরুষের দূর্বলতাহেতুর স্খলন হতে পারে। এই আশঙ্কায় বুদ্ধদেব প্রথমে স্ত্রীলোকের প্রবেশাধিকার দিতে অসম্মত ছিলেন। পরে ঘনিষ্ট ব্যক্তিদের নির্বন্ধাতিশর্য্যে রাজী হয়েছিলেন।( পৃষ্ঠা ৮৫)

কঙ্কর সিংহ তাঁর ধর্ম ও নারী প্রাচীন ভারত গ্রন্থে অর্থশাস্ত্র ও নারী প্রবন্ধের লিখেছেন,,,,, কৌটিল্যের সময় নারী ও পুরুষের ব্যবহার প্রাপ্তির বয়স নির্ধারণ করা হত। এই বয়স নারীর ক্ষেত্রে ১২ এবং পুরুষের ক্ষেত্রে ১৬।[ অর্থশাস্ত্র ৩/৩/১]। বিবাহের বয়স সংক্রান্ত আইন অমান্য করলে তাদের দণ্ডনীয় করা হত। কোন ধর্মশাস্ত্রে নর-নারীর বিবাহের বয়স নিয়ে কোনও বয়স নির্ধারণ নেই । পৃষ্ঠা ১৩৮( চলবে)

পরবর্তী পর্ব আগামী শুক্রবার ৬ ডিসেম্বর,২০২৪

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *