পর্ব : ৪৭
বৈদিক যুগে পুরুষ চলত ঘোড়ার পিঠে। নারী সন্তানসহ পদব্রজে।
সুজিৎ চট্টোপাধ্যায় : হিন্দুত্ববাদীরা বৈদিক ধর্মকেসনাতন আখ্যা দিয়ে প্রচার করেন সেযুগের নারীর সম্মান ছিল প্রচণ্ড।উদাহরণটি হিসেবে কয়েকজন বাগ্ম নারীর উল্লেখ করেন।অথচ বৈদিক গ্রন্থে নারীকে কি চোখে দেখা হতো সেটা হয়ত জেনের নয় নয় জেনে এরিয়ের যান। সুকুমারী ভট্টাচার্য তাঁর প্রাচীন ভারতে নারী ও সমাজ গ্রন্থে লিখেছেন,,,, নারী নিজেই পাপ। কতটা? অনৃতকে দেখবের না। অর্থাৎ নারী কালো কুকুর, কালো পাখি দেখবে না।; অন্যথায় পুণ্য ও পাপ জ্যোতি ও অন্ধকার সত্য ও মিথ্যা মি,,, যাবে । (আপস্তম্ব ধর্মসূত্র ১/১০/৫১-৫৩)
বৈদিক যুগে নারী ছিল মদ ও জুয়ার ব্যসন।
সুকুমারী ভট্টাচার্যের লিখেছেন, এমন কি যজুর্বেদের সময়েও শুনি, নারী মিথ্যা, দুর্ভাগ্য, সে মদ বা জুয়ার মতো ব্যসন মাত্র।( মৈত্রীয়নী সংহিতা ১/১০/১১;৩/৬/৩ গর্ভাবস্থার পূর্বে নারীর জন্য কোনো যজ্ঞকর্মের বিধান নেই, এখনও পুত্রসন্তান জন্ম দেবার জন্য এবং তার জন্মের পূর্বে ও পরে তার মঙ্গলকামনায় পুংসবন অনুষ্ঠান। যে যজ্ঞে তার উপস্থিতি থাকে, সেখানেও মন্ত্র ছাড়াই তার কাজ অনুষ্ঠিত হয়। বৈদিক সমাজের নারীর প্রত মনোভাব সবচেয়ে পরিস্ফুটভাবে প্রমাণিত হয় একটি বেদাঙ্গ সূত্রে ( মাত্র একদিনের কৃচ্ছসাধন) কাল পাখি, শকুনি, নেউল, ছুঁচো, কুকুর, শুদ্র ও নারী হত্যার জন্য প্রায়শ্চিত্ত।( আপস্তম্ব ধর্মসূত্র ১/৯/২৩/,৪৫) সামগ্রিক ছবিটা ঊনমানব এবং সম্পূর্ণ ভাবে পাপের। তাই তাকে যে নিম্নশ্রেনীর জীব বলে গণ্য করা হয় তাকিছু বিচিত্র নয়। অতএব সর্বগুণসম্বিতা নারীও অপকৃষ্টতম পুরুষের চেয়ে নিকৃষ্ট।( তৈ সং ২/৩/৭/১০) পৃষ্ঠা: ৭
বৈদিক যুগে নারী দান হতো ভোগের সামগ্রী হিসেবে।
এই গ্রন্থে লেখিকা লিখেছেন,সমাজে নারীর স্থান ঊনমানবীর, তাকে শুধু ভোগের সামগ্রীরূপে দেখা হতো। তার দেবী, তার শ্রম তার প্রভুর ভোগের জন্য। তাই তাকে বন্ধক রাখা যেত, কেনা যেত, বিক্রি করা যেত, যজ্ঞের দক্ষিণা হিসাবে বা অতিথির উপহার হিসাবে দানও করা যেত। শাস্ত্রে স্পষ্টই বলা হয়েছে, নারী সম্ভোগ আনে। তাছাড়া পশু , ভূমি ও নারীর অতিভোগ নয়। গৌতম ধর্মসূত্র ১২/৩৯ সারস্বতস্বস্তয়ন নামক যজ্ঞের দক্ষিণা একটি ঘোটকী এবং একটি সন্তানবতী দাসী। অন্য অনে যজ্ঞেই নারী দক্ষিণা, অনেক নারী, কখনো হতো, মহাকাব্যে তার প্রমাণ পাওয়া যায়। এই নারীদের শ্রেণীভাগ ছিল কুমারী, সধবা , সন্তানবতী বা নিঃসন্তানরূপে। কারা পেত তাদের? পুরোহিতরা। তারা এত নারী নিয়ে কি করত? তাদের মধ্যে কারোকে গ্রহণকর্তা ভোগ করত, বাকিদের,,,,,,,, কারোকে দান করত, কারোকে বিক্রি। কেউ কেউ আবার সমাজের নানার অন্ধকার এলাকায় আঁকাবাঁকা পথ ঘুরে শেষপর্যন্ত উপস্থিত হতো বেশ্যালয়ে।( পৃষ্ঠা : ৮) ( চলবে)
পরবর্তী পর্ব: আগামী শুক্রবার ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪