পর্ব: ২২
বিশ্বের প্রথম সমকামী খনুম মোটেম ও নিয়াংখুম
সুজিৎ চট্টোপাধ্যায়: নারী সমকাম নিয়ে অর্ণব সাহা ফুকো ও বাটলার তত্ত্বে দ্য আদার _ লেসবিয়ান ও কুইয়ার শীর্ষক একটি প্রবন্ধ লিখেছেন সানন্দা সেন ও পিয়ালী হালদার সম্পাদিত প্রসঙ্গ নারী সমকাম একটি পাঠ গ্রন্থে। গ্রন্থটির প্রকাশক গ্রন্থ মিত্র ( প্রথম প্রকাশ ফেব্রুয়ারি ২০২৩)। অর্ণব লিখেছেন, ফেমিনিস্ট আইডিওলজির ধারায় লেসবিয়ান ফেমিনিজম একটি সদর্থক, বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন যা মেয়েদের শরীর ও অস্তিত্বের মুক্তির নিরিখে একটি কাউন্টার _ কালচার এর জন্ম দেয়। আত্ম পরিচিতি, যৌনতা এবং গোষ্ঠী হিসেবে লেসবিয়ান ফেমিনিস্ট -রা নিজেদের জাহির করেন। পাশ্চাত্যের সেকেন্ড ওয়েভ ফেমিনিজম সম্পর্কে নিজেদের অসন্তুষ্টি থেকেই এর জন্ম, এঁরা মনে করতেন , নিজেদের যৌন পরিচিতি এবং যৌন চাহিদার সঠিক ব্যাখ্যা ওই দ্বিতীয় পর্যায়ের নারীবাদের কাছে নেই। এঁরা হেটে রোনর ম্যাটিভিটি -কে একটি দমনমূলক সাংস্কৃতিক নির্মাণ হিসেবে চূড়ান্তভাবে প্রত্যাখ্যান করেন, যৌনমুক্তির পরিসরে পুরুষকে প্রত্যক্ষভাবে বাধা দেন এবং এর মধ্যে দিয়েই পিতৃতন্ত্রের মূলে কুঠারাঘাত করেন। অ্যাড্রিয়েন রিচ বলেন , লেসবিয়ান কন্টিনিউয়াম ‘- এর কথা, যার মাধ্যমে লেস বিয়ানিজম _ এর আন্দোলন নিছক শরীর/ যৌনতার বৃত্ত থেকে বেরিয়ে একটি বৃহত্তর পরিচিতি পায়। বিষম যৌন স্টিরিওটাইপের বাইরে এসে , উইমেন আইডেনটিফিকেশন ‘ এর মধ্য দিয়ে এঁরা চান নিজেদের নিজেদের পৃথক সত্তা গড়ে তুলতে। তাঁরা যেকোনও ধরনের ফিক্সড আইডেন্টিটি পলিটিক্সের বিরোধিতা করতে চান।
১৯৭০ সালে গড়ে ওঠা র্যাডিক্যাল লেসবিয়ান সংগঠনের সদস্য।
এই প্রবন্ধে অর্ণব সাহা লিখেছেন,১৯৭০ সালে র্যাডিক্যাল লেসবিয়ানস্ নামে একটি বহুল আলোচিত লেসবিয়ান গোষ্ঠী তাঁদের বিখ্যাত ম্যানিফেস্টো প্রকাশ করেন, যার নাম ছিল উওমেন আইডেন্টিফায়েড উওম্যান। এখানে সোচ্চারে হেটেরো _ সেক্সুয়াল নর্ম থেকে মেয়েদের বেরিয়ে আসার কথা ঘোষণা হয়েছিল।Only women can give to each other a new sense of self.That identity we have to devolop with reference to ourselves and not in relation to men,.This consciousness is the nrevilutionary force from whitch all elso follow,for ours is organik revolution.For this we must be abailable and supportive to one another n,give our commitment and our love,give the emotional support necessary to sustain the movement Our energies must flow towards Our oppressor।( Mark Blasius,and Shane phelan ,(eds),we are Everywhere . A Historical soucebook of Gay and Lesbiyan politics .( New York: Routledge,2997)p.399.
নারী সমকামিতা যে সভ্য সমাজে সৃষ্টি এমন ভাবাটা ভুল হবে। আমরা জানি, আফ্রিকায় প্রথম মানবের সৃষ্টি। সেখানেই ২৪০০ খ্রিস্টপূর্বে মেলে বিশ্বের প্রথম দুই সমকামী খনুমমোটেম ও নিয়াংখুম। আফ্রিকার লেসোথোর মহিলারা সমাজে সমকামে লিপ্ত হত। বলা হত মৎসোয়ালে। গণ প্রজাতন্ত্রী কঙ্গোতে পুরুষ যোদ্ধারা তাঁদের যৌন পুরুষ সঙ্গ পুষত। যাঁদের বয়স n১২ থেকে b৩০। তাদের কাজ ছিল ঘরের ফাই ফরমাসখাটা ও পায়ু মৈথুনে যোদ্ধাদের তৃপ্ত করা। মনোবিজ্ঞান বলে একি লিঙ্গে আকর্ষণের অন্যতম কারণ , বিপরীত লিঙ্গের মানুষ সম্পর্কে ভীতি। যৌন বিজ্ঞানের পরিভাষায় পাঁচ রকমের প্রবৃত্তির কথা বলা হয়েছে। অযৌন, উৎকামী, বিষমকামী, সমকামী ও সর্বকামী অযৌন বলতে বোঝায়, যৌনতায় অনিচ্ছা। উদাহরণ হিসেবে রামকৃষ্ণদেবের কথা বলা যায় , তিনি ছিলেন অযৌন। কিন্তু এমন কিছু ঘটনার কথা জানা যায়, যেখানে ওঁকে অযৌন বলা যায় না। সন্ধের পর দক্ষিণেশ্বরে আরতি হয়ে গেলে পশ্চিম দিকের বারান্দায় রামকৃষ্ণদেব শিষ্যদের মাদুর পেতে দিতে বলতেন। তারপর স্বামী অখণ্ডানন্দকে তাঁর কোমরের বাঁধন খুলে দিয়ে কোলে বসাতেন। বলতেন মা’র কাছে ছেলে যেন। ব্রহ্মানন্দ ছিলেন গৃহ সন্ন্যাসী। তাঁকেও রামকৃষ্ণদেব কোলে বসাতেন।ব্রহ্মানন্দের স্ত্রী বিশেশ্বরী দেবী আত্মহত্যা করেছিলেন। রামকৃষ্ণেরএই লক্ষণ বিজ্ঞানের ভাষায় বলে Gunac comastia. নারী সম্পর্কে একটা বিতৃষ্ণা ওঁর ছিল। কেউ পা ছুঁয়ে প্রণাম করলে বলতেন , পা জ্বলে যাচ্ছে।( চলবে)
আগামী পর্ব ২৩ , সোমবার ১ জুলাই,২০২৪