বেশ্যার বারোমাস্যা

পর্ব: ৮৬

সুজিৎ চট্টোপাধ্যায় : গত পর্ব থেকে ভারত ছেড়ে গ্রিসে গিয়েছিলাম। কয়েকটি পর্ব এখন গ্রিসেই থাকব। গ্রিসের রাজরক্ষিতাদের নিয়ে শুরু করেছিলাম। ইতিহাসের আর এক রাজরক্ষিতার কথা ইতিহাসে মিলছে। নাম তার কোটিনা। যিনি একটি গরুর ব্রোঞ্চ মূর্তি বসিয়ে স্পার্টায় স্থাপন করেন। সত্যিই যে তারা শরীর বেচে বিশাল অর্থ সঞ্চয় করেছিলেন, তেমনই জীবনের বেদনাময় অভিজ্ঞতা বা অপছন্দের পুরুষের হাতে নিজের শরীর যখন হাসি মুখে তুলে দিতেন, সেই কষ্টকর অনুভূতি তো নিজেদেরই হৃদয়ে পুষে রাখতে হয়েছে।

সক্রেটিস এবং যৌনকর্মী থিয়োডেট।

কথিত আছে, স্বয়ং সক্রেটিস তাঁর শিষ্যদের মুখে বারবণিতা থিয়োডেটের প্রশংসা শুনে তাকে চোখে দেখার জন্য থিয়েডারের বাড়িতে যান। ওর সৌন্দর্যের জন্যই শুধু নয়, বাড়ির অঙ্গসজ্জাতেও মুগ্ধ হন। থিয়োডার সক্রেটিসকে আমন্ত্রণ জানান, বিনোদনের জন্য তিনি যেন ইচ্ছে হলেই চলে আসেন। সক্রেটিস বলেছিলেন, আমি তোমার প্রতি আকৃষ্ট হতে চাই না। তুমি বরং এসো। আমি তোমাকে স্বাগত জানাবো। যদি না তখন অন্য কোনো সুন্দরী আমাকে মোহিত করে রাখে। ইতিহাস বলে , সুবক্তা হাইপেরিডেস কোনো কারণে রক্ষিতা ফ্রাইনেকে নিয়ে আইনসভায় হাজির হতে হয় বাভিযুক্ত হয়ে। অভিযোগ, ফ্রাইনের প্রতি মোহগ্রস্ত হয়ে তিনি তাঁর কাজে ফাঁকি দিচ্ছিলেন।

প্রাচীন গ্রিসে সেরা সুন্দরী যৌনকর্মী ছিলেন ফ্রাইনে।

অভিযুক্ত হাইপেরিডেস জানান, ফ্রাইনের পাগল করা রূপও আকর্ষণীয় দেহবল্লভ তাঁকে মোহিত করে রাখে। প্রমাণ হিসেবে ভরা আইনসভায় ফ্রাইনে পোশাক ছিঁড়ে তাকে নগ্ন করে দেন। বিচারকরাও ফ্রাইনের দেহ সৌন্দর্যে মোহিত হয়ে অভিযুক্ত হাইপেরিডেসকে মুক্ত করে দেন। ফ্রাইনের আসল নাম মেনেসারেটি। বারবণিতারা বহুজনের ভোগ্যা হলেও স্বপ্ন দেখতেন কোনও একজন পুরুষের প্রেমে তাঁরা মজবেন। যে পুরুষ শুধু শরীর নয়, প্রেমিকা হিসেবে এক নারীর অস্তিত্বকে শ্রদ্ধা করবে। কিন্তু এমন ইচ্ছা তাদের পূরণ হয়নি। ( চলবে)

আগামী পর্ব ১০ ফেব্রুয়ারি, সোমবার ২০২৫

*****

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *