সল্টলেকের মিলাপ শাড়িতে এবার পুজোয় মাতবে বাংলা

*

শ্রীজিৎ চট্টরাজ : সত্তরের দশকে ১৬ থেকে ৮০ মহিলার হার্টথ্রব ছিলেন উত্তমকুমার। কখনও তিনি চোরকাঁটা হতে চান শাড়ির ভাঁজে, কখনও পাছা পেড়ে শাড়ি হয়ে নারীর কোমরে দুলতে চেয়েছেন। সেই কলির কেষ্টকে ছেড়ে আসল কেষ্ট কি বলেছেন দেখুন । কবি চন্ডীদাস কৃষ্ণকে দিয়ে বলিয়েছেন, চলে নীল শাড়ি নিঙাড়ি নিঙাড়ি পরান সহিত মোর,,,,,, অর্থাৎ চলমান নীল শাড়ি আমার পরাণ নিংড়ে নিচ্ছে।

মুকুন্দরামের মঙ্গলকাব্যে নারীর সাজসজ্জার তৎকালীন ললনার রূপচর্যা বিবরণে বলা হয়েছে , ললনার চরণে প্রণাম করে চেড়ী। মানিক ভাণ্ডারে আনে আভরণ পেড়ী ।। অবধানে আলুয়ায় বন্ধনের দড়ি। দোছুটী করিয়া পরে বারো হাতশাড়ি।। সে আমলের লোকগীতিতে উল্লেখ হত অগ্নিফুলি, আসমান তারা, উদয়তারা , ময়ূরপাঙ্খা, মেঘডম্বুর, যাত্রাসিদ্ধি, লক্ষ্মীবিলাস কনক লতা ও নীলাম্বরী শাড়ির কথা। সেযুগে নাকি গঙ্গার জল নামে এমন শাড়ি ছিল যে শুকনো জায়গায় মেলে রাখলে পিঁপড়ে টেনে নিয়ে যেত। সে শাড়ি আজ নেই। সেই কারিগর নেই, সেই সুতো আজ নেই। গুয়ারফুল শাড়ি বুনতে বিশ্বকর্মা ঠাকুর সময় নেন ছ মাস। বাংলা সাহিত্যে শুধু শাড়ি নয়, তাঁতিদের কথাও ছিল।

মঙ্গলবার বিকেলে সল্টলেকের সিটি সেন্টার ওয়ানের ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে ছিমছাম আসাধরণ অঙ্গসজ্জা নিয়ে গ্রাহকের সন্তুষ্টি সংগ্রহের জন্য অপেক্ষায় মিলাপ ব্যুটিক। শহুরে সংস্কৃতি আর গ্রামীণ শিল্পের যুগলবন্দি নিয়ে উৎকর্ষতার প্রতীক মিলাপ ব্যুটিকের জোড়া কর্ণধার শ্রীময়ী সরকার ও শ্রীপর্ণা সরকার জানালেন, ঐতিহ্য আর পরম্পরার যৌথ নির্মাণে আমাদের সংগ্রহের শাড়ি। অনলাইন ব্যবস্থা থাকলেও বলব, সামনে পুজো। একবার এসে প্রত্যক্ষ করুন আমাদের সংগ্রহ । হাতে টানা তাঁত কলে ফেব্রিকের বিষ্ণুপুরের ৫০ টি লুমে দিবারাত্রির কাব্যের ছন্দে গাঁথা হচ্ছে একেকটি শাড়ি নির্মাণ। এদিন উপস্থিত ছিলেন শহরের দুই নামী মডেল স্নেহা ধর ও জাসমিন রায় সেজেছিলেন মিলাপের শাড়িতে। ছিলেন অভিনেত্রী পায়েল সরকার।কে জানে এবারের পুজোয় কতজন নব বিবাহিতা স্ত্রী তাঁদের এই শুনছো’ র কাছে চেয়ে বসবেন , এনে দে মিলাপ শাড়ি, নইলে যাবো বাপের বাড়ি,,,,,,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *