পর্ব: ১০৫

পর্যটক বারনিয়ের অন্ধ হেকিম সেজে শাহাজানের হারেমে ঘুরে এসে বর্ণনা লিপিবদ্ধ করেন।
সুজিৎ চট্টোপাধ্যায়: আগের পর্বে জানিয়েছিলাম,এই পর্বে হারেমের মেয়েদের বলা হত জেনানা। এই জেনানাদের কি ভাবে সংগ্রহ করা হত সেই সম্পর্কে জানাবো। এইত বিষয়ে আবার সাহায্য নিচ্ছি লেখক সাযযাদ কাদিরের বৈর হারেমের কাহিনী জীবন ও যৌনতা থেকে। সম্ভবত পর্যটক বারনিয়ের এক খোঁজাকে অর্থাৎ দিয়ে রাজি করায় হারেমে নিয়ে যাওয়ার জন্য।কিন্তু নবাব ছাড়ার কোনো পুরুষের অধিকার ছিল না হারেমে প্রবেশের করার। একমাত্র অসুস্থ্ জেনানাদের চিকিৎসার জন্ ছাড় ছিল হেকিমদের।জনৈক খোজা বারনিয়েরকে অন্ধ হেকিম সাজিয়ে নিয়ে যায়। তাঁকে আপাদমস্তক ঢেকে দেওয়া হয়েছিল কাশ্মীরি শালে। ফলে শাহাজানেরের হারেম সম্পর্কে কিছু বিবরণ পর্যটক বারনিয়ের দিয়ে যেতে পেরেছিলেন।

যুদ্ধ বন্দী নারীদের স্থান হত হারেমে ।
নবাবদের হারেম পরিপূর্ণ থাকত বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন জাতের জেনানাদের নিয়ে। তাদের যাচাই বাছাই হতো নবাবদের খামখেয়ালী আচরণে। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীর বুদ্ধদেবের সময় পর্যন্ত তথ্য মেলেনি। পরবর্তী কালে জানা গেছে সুন্দরীএই জেনানাদের যোগাড় করা হত দালাল, উমেদার ও বিদেশী বণিকদের মাধ্যমে। এছাড়াও যুদ্ধবন্দী নারী ও সুলতানী রাজত্বে কোন প্রজার ঘরে সুন্দরী মহিলা আছে সেসবের খোঁজ রাখত নবাবের গুপ্তচর বিভাগ। তাদের তুলে আনা হত হারেমে। অবশ্য অভিভাবকদের নগদ দক্ষিণা দিয়েই কেনার হত আলু পটল মুলোর মতোই।মজার বিষয়, সেযুগে জেনানা নিয়োগের কাজটি করা হতো ধর্মীয় পণ্ডিত ও আলেমদের পরামর্শে।

সুলতান ফিরোজ শাহ বাহমিনি শরিয়তি বিধান মেনে তিনশ জেনানাকে হারেমে রাখেন।
গুলবর্গের সুলতান ফিরোজ শাহ বাহমিনি (১৩৯৬-৯৭) সম্পর্কে ফিরিশতা লিখেছেন, নবাব মদ্যপান আর গানবাজনা নিয়ে মিটার থাকলেও ধর্মে কর্মের মতি ছিল অগাধ। শরিয়তি আইন মেনে চলতেন। একবার কয়েকজন মোল্লার কাছে জানতে চেয়েছিলেন ইসলামি আইন অনুযায়ী চারটি বিয়ের অনুমতি আছে। বেশি বিয়ের করলে কি গুনাহ হবে? শিয়া মোল্লারা অনেক পুঁথি ঘেঁটে নিদান দেন নবাব তিনশ টি পর্যন্ত বিয়ে করতে পারেন। ব্যস। একরাত্রেই নিবেবি তিনশ টি বিয়ে করে তাদের হারেমে রাখেন। ( চলবে)
পরবর্তী পর্ব ২১ এপ্রিল , সোমবার,২০২৫
