পর্ব:১৫৩

হিন্দু পুরাণে দেবী অম্বিকা কথার শিবের বোন। কোথাও তিনি শিবের স্ত্রী।
সুজিৎ চট্টোপাধ্যায় : সব মাছ পাঁক খায়, কিন্তু বদনাম পাঁকাল মাছের। তেমন দেব সমাজে সম্পর্ককে লঙ্ঘন করে যৌনতায় অবাধ বিচরণ এক ঐতিহ্য হিসেবে বর্ণিত হয়েছে।সমুদ্র বিশ্বাস একটি বই লিখেছেন দুর্গাপুজোর অন্তরালে।১০ নং পৃষ্ঠায় লিখেছেন,,,, বৈদিক সাহিত্যে পৃথিবীর আরেক নাম অম্বিকা। এই অম্বিকা রুদ্রের সাথে সম্পর্কিতা ছিলেন। কোথাও ভগিনী রূপে, আবার কোথাও স্ত্রী বা পত্নীরূপে। শুক্ল যজুর্বেদের রাজসনেয়ী সংহিতায় (১/৮,৬/১১) এবং তৈত্তিরীয় আরণ্যকে (১০/১৮) অম্বিকা হলেন রুদ্রের পত্নী বা স্ত্রী। হিন্দু ব্রাহ্মণ্য ধর্মের বেশিরভাগ শাস্ত্রকারদের অদ্ভুত পাগলামি এমন যে, দুর্গা এক শাস্ত্রে ভগিনী তো আর এক শাস্ত্রে পত্নী। হিন্দু ব্রাহ্মণ্য শাস্ত্রকারেরা বোন আর বউয়ের মধ্যে কোনও ফারাক রাখেননি। তবে মাতা -কন্যা , বধূ- ভগিনী বোধ যে ব্রাহ্মণ্য দেবতাদের বেদের যুগে ছিল , তা নিশ্চিত রূপে বলা যায় না।

দেবরাজ ইন্দ্রের লুটেরা দলের অন্যতম ছিলেন সরমা।
লেখক আরও লিখেছেন, ঋগ্বেদের দশম মন্ডলের বর্ণনায় দেখা যায়- ইন্দ্রের প্রেরিত দূত সরমা সুন্দরী পণিগণের অর্থাৎ ভারতীয় বণিকদের ভয় -ভীতি দেখিয়ে , গো সম্পদ নিয়ে যাওয়ার জন্য এসেছিলেন। সরমা সুন্দরী , ইন্দ্র ও অঙ্গীরার পুত্রদের নামে হুমকি দিলেও পণিগণ ( সিন্ধুবাসী বা হিন্দুবাসী বণিক) ভয় না পেয়ে সরমাকে ভগিনী সম্বোধন করেন এবং বলেন, আমরা তোমাকে গোধন দিচ্ছি। তুমি তাই নিয়ে আমাদের এই দেশে সুখের শান্তিতে বাস কর। প্রত্যুত্তরে সরমা সুন্দরী বলেন, আমি ভ্রাতা- ভগিনী সংক্রান্ত কথা বুঝতে পারি না।

বৈদিক যুগে দেবতাদের নারী গুপ্তচর ছিলেন সরমা।
সুরমা প্রসঙ্গে লেখক আরও বিস্তারিত তথ্য দিয়ে লিখেছেন, প্রাচীন বা পুরাণকালে দেবতা বা আর্য দস্যুদের প্রেরিত দূত বা গুপ্তচর হলেন সরমা সুন্দরী। প্রাচীন বা পুরাণকালে দেবতা বা আর্য দস্যুরা নারী ও ব্রাহ্মণ্য ঋষিদের গুপ্তচর হিসেবে ব্যবহার করতেন। পুরাণ শাস্ত্রে তার ভুরি ভুরি প্রমাণ রয়েছে। তবে নারীরা একাজ করতে বছর থাকত। আর্ট ঋষিরা একাজ করে রাজ পরিবারে থেকে মহামূল্যবান পুরষ্কার পেত। (চলবে )
পরবর্তী পর্ব ৬ অক্টোবর, সোমবার,২০২৫
