পর্ব:১৫২

দেবী দূর্গা তানজোরেপূজিতা হন কোররাবাই নামে। দেবীর বাহন হরিণ।
সুজিৎ চট্টোপাধ্যায়: এই পর্বে দুর্গাপুজোর প্রেক্ষিতে দুর্গা বৃত্তান্ত নিয়ে একটু আলোচনা করব। সাহায্য নেবো সমুদ্র বিশ্বাসের লেখা দুর্গাপুজোর অন্তরালে বইয়ের ৬৩ নম্বর পৃষ্ঠা থেকে। লেখক লিখেছেন,,,,,,,,অনেক পণ্ডিত মনে করেন b, দেবী দুর্গা শুধুই যৌনতার প্রতীক। বহু শাস্ত্রে , পুঁথিতে প্রজননের দেবী দুর্গাকে উদ্দাম যৌবনের ও অবাধ মদ্যপানের দেবীরূপে বর্ণনা করা হয়েছে। তানজোরের পুণ্ডমঙ্গেশ্বর ও পূজাইয়ের মন্দিরের দেবীর নাম কোররাবাই । সিংহ ও হরিণ তাঁর বাহন। দেবীর চারহাতে শূল চক্র শঙ্খ ও বরাভয়। এই কোররাবাই দেবী দুর্গার আরেক নাম।

বিন্দ্যবাসিনী দেবী।
প্রাচীনকালে মাদুরাই শবর যোদ্ধারা নিজেদের গলার চামড়া চিরে স্বরক্তে দেবীর অঞ্জলি দিতেন এবং অবাধ যৌনাচারে লিপ্ত হতেন। জীমূতবাহনের কালবিবেক, রঘুনন্দনের অষ্টাবিংশশতিতত্ত্ব, শূলপানির দুর্গোৎসববিবেক প্রভৃতি গ্রন্থে দুর্গাপুজোয় আমোদ- প্রমোদই প্রধান ও অবাধ মদ্যপানের কথা বলা হয়েছে। গ্রন্থগুলিতে এই নগ্ন পর্ণ পরিহিতা দেবী দুর্গা সম্পর্কে বলছে , আদিম রিপুর প্রবৃত্তি এবং অবাধ যৌনাচারের হুল্লোড় না থাকলে দেবী প্রসন্ন হতেন না। বরং কুপিতা এই দেবী উপাসকদের প্রাণভরে অভিশাপ দিতেন।

কথাসরিৎসাগর গ্রন্থে আঠারো হাত বিশিষ্টা মদ্য ও রক্তপ্রিয়া দেবীর উল্লেখ আছে।
লেখক সমুদ্র বিশ্বাস তাঁর গ্রন্থে লিখেছেন,,,,,, শ্রীশ্রীচণ্ডী অনুযায়ী দেবী দুর্গা মহিষাসুর বধের পূর্বে মদ্যপান করেছেন। হরিবংশ -এর আর্যাস্তব অনুযায়ী বিন্ধ্যবাসিনী এই দেবীর মদ্য ও মাংসে ছিল অপরিসীম আসক্তি। সপ্তম ও অষ্টম শতকের কবি বাণভট্ট ও বাকপতিরমতেও এই দেবী পশু ও মনুষ্যরক্ত পিপাসু ছিলেন। কথাসরিৎসাগর -এর অংশ বেতাল পঞ্চবিংশতিতে একাদশ শতাব্দীর পণ্ডিত সোমদেব ভট্ট রাজা যশকেতুর রাজ্যে আঠারো হাত বিশিষ্ট মদ্য ও মানুষের রক্তপ্রিয় দেবী দুর্গা মহিষের কাটা মাথার ওপর সদা নৃত্যরতা বলেছেন। (চলবে)
পরবর্তী পর্ব আগামী শুক্রবার ৫ অক্টোবর ,২০২৫

*********
