সুজিৎ চট্টোপাধ্যায়: শোলে ছবিতে স্যাঙাতদের কাজে গব্বর সিং জানতে চেয়েছিল হোলি কব হ্যায়? কব হ্যায় হোলি? আমরা ইতিমধ্যে জেনে গেছি এবার ২০২৪ সালে হোলি পড়েছে ক্যালেন্ডারের বিচারে ২৫ মার্চ। সারা ভারতে হোলি উৎসব পালিত হবে। বাংলা ও বাঙালির সঙ্গে কিন্তু হোলির সম্পর্ক নেই। বাঙালি দোল যাত্রা উৎসব পালন করে দোল পূর্ণিমায়। বাঙালির দোল প্রতিবারের মতই একদিন আগে। অবশ্য এবছর পূর্ণিমা ২৪ মার্চ একই দিনে পালিত হবে পূর্ব ভারতের দোল আর উত্তর পশ্চিম ভারতের হোলি। কিন্তু কেনএই পার্থক্য? ভেবে দেখেছেন কি? ঋত্বিক ঘটক বলেছিলেন, ভাবো, ভাবো, ভাবা প্র্যাকটিস কর। চলুন এজ জেনে নিই অজানা তথ্য, না জানা ইতিহাস। ভাবা প্র্যাকটিস করা অনেক সহজ হয়ে যাবে।
দোল উৎসব বাংলায় কবে শুরু তার ঐতিহাসিক সূত্র নেই। তবে বৈষ্ণবীয় ধারায় ৫০০ বছরের কিছু আগে শ্রী চৈতন্যদেব শুরু করেছিলেন এমনটাই মনে করা হয়। পুরাণের হোলিকা রাক্ষসী উপাখ্যান সবাই জানেন। কিন্তু হিন্দু পুরাণ অনুসারে রাধা কৃষ্ণ নয়, প্রথম দোল খেলায় মেতে ছিলেন শিকি সেই কাহিনী একটু অন্যভাবে খুঁজে দেখা যাক। হরিহর পুরাণে বলা হয়েছে তারকাসুর নামে এক বলশালী অসুর স্বর্গ আক্রমণ করে। কৈলাশে ধ্যানে মগ্ন ছিলেন দেবাদিদেব মহাদেব।
দেবতারা সবাই কৈলাশে হাজির বিপদমুক্ত হতে। কিন্তু শিবের ধ্যানভঙ্গ করার সাহস কার? সকল দেবতার অনুরোধে স্বয়ং কামদেব ও তাঁর স্ত্রী রতি অনিচ্ছুক হলেও শিবের ধ্যান ভঙ্গের দায়িত্ব নেন। শুরু করেন কামোদ্দীপক নৃত্য ও গীত। ধ্যান ভঙ্গ হওয়ায় বিরক্ত শিব তৃতীয় নয়ন খুলে মদনদেবকে দেখে ক্রোধে তাঁকে ভস্ম করেন। স্ত্রী রতির কান্নায় শিব কামদেবের প্রাণ ফিরিয়ে দেন। নব জীবন লাভ করে দেবলোকে কামদেব মদন এক পার্টি থুড়ি ব্রহ্ম ভোজের আয়োজন করেন। সব দেবতারা নিমন্ত্রিত হন। শিব বাজান ঢোল।বিষ্ণু বাজান বাঁশি। পার্বতী বাজান বীণাসরস্বতী গান বসন্তের গান। সময় টা ছিল বসন্ত। শিব সবাইকেই আবির মাখান। তাই দোলের দিন বলা হয় শিব লিঙ্গে আবির মাখিয়ে দোল খেলা শুরুর। শিবের উপাসক কাশীতে অঘোর যোগীরা শ্মশানের মৃতের চিতা ভস্ম নিয়ে নিজেদের মধ্যে দোল খেলেন। ভক্তদেরও মাখান সেই ভস্ম। এই প্রসঙ্গে আসব পরবর্তী পর্বে।
বৈষ্ণব ধর্মের অনুগামী কোলকাতার ধনী গোষ্ঠীর দোলখেলার প্রচলনও চৈতন্যদেবের অনুসারী হিসেবে। কোলকাতায় লালমোহন শেঠ ছিলেন সম্ভ্রান্ত ধনী। দোল খেলার জন্য মহাকরণের পাশে তিনি দীঘি খনন করেন। দোল খেলে এখানে মানুষ স্নান করতেন। লাল রঙে জলের রঙ হত লাল। তাই নাম হয় লালদিঘী। দীঘির অদূরে বসত আবির আর রঙের বাজার। তাই সেই বাজারের নাম রধাবাজার। বড়িষার সুবর্ণ চৌধুরীদের বাড়িতে দোল খেলতে যেতেন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সাহেব মেমরা। বাঙালি দোল উৎসব পালন করতেন মদ্যপান করে, সিদ্ধির সরবৎ খেয়ে, গালি গালাজ করে , খেউড় গান করে। কারণ কালিকা পুরাণ মতে এদিন রবি বা সূর্যের উত্তরায়ণ।
এদিন চোখ, কান জিভ ত্বক অশুচি রাখলে যমদূত স্পর্শ করে না। মদ্যপান এমন পর্যায়ে হত যে ১৮৫৬ সালে দণ্ডবিধির ১ নং ধারায় তখনকার হরিণবাড়ি বর্তমানের লালবাজারের পুলিশ গারদে স্থান হত। অভিযোগ রাস্তায় প্রকাশ্যে মাতলামি। জোড়াসাঁকো দাঁ বংশ বৃত্তান্ত গ্রন্থের লেখক হারাধন দত্ত লিখেছেন কলিকাতার রাজা রাজড়া, জমিদার বাড়ি ও বনেদি বাড়ি গুলিতে দোলযাত্রা একটা নতুন ঐতিহ্য সৃষ্টি করেছিল। কৈলাস বসু, মল্লিক পরিবার, শেঠ বসাক, মল্লিক সাহা, শোভাবাজার দেব পরিবার বাগবাজারের মিত্র পরিবার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ির অর্থ কৌলিন্যে বাংলার সংস্কৃতির ধারক হয়ে উঠেছিলেন। কলটোলার মতি শীলের বাড়ি থেকে নগর সংকীর্তন বেরোত। মার্বেল প্যালেসে ধুমধাম করে ছয়দিন ধরে দোল উৎসব চলত।
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তখন দোলের ছুটি দেওয়া হত ছয়দিন। বরং দুর্গাপুজোর ছুটি ছিল মাত্র দুদিন। নবমী ও দশমী। বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের দোল উৎসব সম্পর্কে শাস্ত্র বলছে গীতায় অর্জুনকে বিভূতি যোগ দেখাতে গিয়ে কৃষ্ণ বলছেন ঋতু নং কুসুমাকর। অর্থাৎ ঋতুদের মধ্যে আমিই বসন্ত। পুরাণ বলছে শকুন্তলার আংটি হারিয়ে ক্ষোভে দুঃখে রাজা দুষ্মন্ত তাঁর রাজ্যে হোলি নিষিদ্ধ করে দিয়েছিলেন। বাংলার ইতিহাস বলছে , হোলি ছিল শিব দুর্গার মদনোৎসব। পরিষ্কার বাংলায় যাকে বলে যৌন কামনার উৎসব।
বাংলাদেশের জনতা ক্যাপিটাল অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান ড: রমণীমোহন দেবনাথ ঢাকার নবযুগ প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত বঙ্গদেশে ধর্মীয় সমাজ ইতিহাস ও বিবর্তন গ্রন্থে লিখেছেন এ তথ্য এখন অনেকটা পরিষ্কার যে আদিতে হোলি ছিল কৃষি সমাজের পূজ্য, সু শস্য উৎপাদন কামনায় নরবলি ও যৌন লীলাময় নৃত্য গীত উৎসব ছিল তাহার অঙ্গ। তারপরের স্তরে কোনও সময়ে নরবলির বদলে পশুবলি ও হোম যজ্ঞ ইহার অঙ্গীভূত হইল। ঐতিহাসিক ড: নীহাররঞ্জন রায়ের বাঙালির ইতিহাস আদি পর্ব ( প্রকাশক দে’জ) থেকে তথ্য সংগ্রহ করে লেখক দেবনাথ উল্লেখ করে লিখেছেন,,, এর সাথে পরে যোগ হয় বসন্ত বা মদন বা কামোৎসব।
তাঁর মতে ষোড়শ শতকের পর বসন্ত কমোৎসব ফাল্গুনী হোলির উৎসবের সঙ্গে মিশে যায়। কামোৎসব বন্ধ হয়ে যায়। ঐতিহাসিক ড: রায় মনে করেন, এভাবেই প্রাক বৈদিক আদিম কৃষি সমাজের বলি ও নৃত্য গীত উৎসব হোলিতে রূপান্তরিত হয় । ভারতের নানা স্থানে এখনও হোলি বা হোলক উৎসবকে বলে শুদ্রোৎসব ; হোলির আগুন এখনও ভারতের অনেক স্থানে হোলির আগুন অস্পৃশ্য মানুষের ঘর থেকে আনা হয়।
বাঙালির ইতিহাস আদি পর্ব গ্রন্থে ড: রায় এই প্রসঙ্গে আরও লিখেছেন ধর্ম পূজা ও চড়কের সঙ্গে একই পর্যায়ভুক্ত আমাদের হোলি বা হোলক ধর্মোৎসব জীমূতবাহনের দায়ভাগ গ্রন্থে লেখা আছে। আলবেরুনীর সাক্ষ্যে মনে হয়, এই উৎসব অনুষ্ঠিত হইত চৈত্রমাসে। গরুড়পুরাণ ও পদ্মপুরাণেও সাক্ষ্য তাহাই। পরবর্তী কোনো সময়ে এই উৎসব ফাল্গুনী পূর্ণিমাতে আগাইয়া আসে ( পদ্মপুরাণ পাতাল খণ্ড, স্কন্ধপুরাণ, উৎকল খণ্ডে) এবং হোলির সঙ্গে মিশিয়া এক হইয়াছে।
শৈব সম্প্রদায়ের উৎসব বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের উৎসবে বিবর্তিত হওয়া প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বক্তব্য দেখা যাক। রবীন্দ্রনাথ বিশ্বভারতীর ১৪০১ সালে প্রকাশিত সাহিত্য গ্রন্থে লিখেছেন শিবের যখন প্রথম আবির্ভাব হয়েছিল তখন বৈদিক দেবতারা তাঁকে স্থান দিতে চায়নি। দক্ষযজ্ঞই তার প্রমাণ অর্থাৎ শিবকে সর্বোচ্চ পদে মহাদেবের আসনে বসিয়ে পরে আপোষ রফা হয়। স্বামী বিবেকনন্দের বাণী ও রচনা গ্রন্থে বিবেকানন্দের মন্তব্য উল্লেখ করে বলা আছে , তিনি বলেছেন অতি প্রাচীনকালে চালু মদনোৎসব বর্তমানের দোলযাত্রা। উত্তর ও পশ্চিম ভারতের ধর্মীয় উৎসব হোলি অনার্য রাক্ষস পোড়ানোর গল্প। কিন্তু বাংলার দোল শব্দটি এসেছে সংস্কৃত দোলি বা দুল শব্দ থেকে।
দোল বছরে দুদিন। শ্রাবণে ঝুলন। ফাল্গুনে রং আবিরের খেলা। রাধাকৃষ্ণকে দোলায় বসিয়ে এই উৎসব। হিন্দু মতে নেড়া পোড়া বিকৃত উচ্চারণ। আসলে মেড়া পোড়া। মেড়া মানে ভেড়া। মেড়াপোড়াকে ওড়িয়া ভাষায় বলে মেন্টা পোড়েই । কিছুদিন আগে পর্যন্ত জ্যান্ত ভেড়া পোড়ানো হত। প্রমাণ দোল পূর্ণিমায় পুরীর মন্দিরের পাশে একটি ভেড়ার গায়ে সামান্য আগুন ছুঁইয়ে দেওয়ার রীতি আছে। গুজরাটে পোড়ানো হয় মানুষের অবয়ব। মথুরাতে আগুনের ওপর দিয়ে মানুষ হেঁটে যায়। দক্ষিণ ভারতে চৈত্র মাসেই দোল উৎসব হয়। দক্ষিণ ভারতের আগের রাতে অর্থাৎ চতুর্দশীতে আগুনের উৎসব হয়। বলা হয় কামদহনম। কাম রিপু পোড়ানোর উৎসব বাৎস্যায়নের কাম শাস্ত্র গ্রন্থে দোলায় বসে নানা আসনে যৌন সম্ভোগের উল্লেখ আছে। যে দোলায় শৈব দেবতা শিব পার্বতী বসতেন , বৈষ্ণব ধর্মের আগ্রাসনে এখন সেই দোলার আরোহী হয়েছেন রাধা কৃষ্ণ।
দোল বা হোলি শুধু হিন্দু উৎসব নয় । বিশ্বের বহু দেশেই বসন্ত উৎসব পালিত হয় যৌন আকাঙ্খায় । লাতিন আমেরিকায় ডাঙ্ক ও তেন্সু পাতার রস থেকে এক ধরণের ফিকে লাল রং তৈরি করে রঙ খেলা হয়।যে গাছ থেকে পাতা নেওয়া হয় সেই গাছের নাম বুতিয়া। নারী পুরুষের অবাধ মেলামেশা সেই উৎসবের অঙ্গ। ১ এপ্রিল বা ১ মে আদি ইউরোপীয়রাও রঙের উৎসব পালন করেন। বেন্টিকরা করেন বেলতান উৎসব। মে মাসের শুরুতে সূর্য বন্দনা করে জ্বালানো হত অগ্নিকুন্ড। আগে হত মানুষ বলি। এখন ছাগল ভেড়া। তৈরি হয় বিশাল কেক। দুধে ডিম মিশিয়ে মানুষকে সেই মিশ্রণ মাখানো হয়। সঙ্গে অবশ্যই মদ্যপান, নাচগান। আমেরিকার পিটার্সবার্গ ওহিযো, পেনসিলভেনিয়া, পশ্চিম ভার্জিনিয়ায় হয় রঙ খেলা। আজও মরিশাসে শিব রাত্রির পরেই হয় রঙ খেলার উৎসব।
বাংলায় লৌকিক ধর্ম পুজো,নাথ ধর্ম ও বৌদ্ধ ধর্মের শেষে শৈব ধর্মের বিস্তৃতি। শৈব ধর্মের ওপর প্রভাব ফেলে আগ্রাসন ঘটে বৈষ্ণব ধর্মের উত্তর ও পশ্চিম ভারতের আর্য সংস্কৃতির প্রভাবে। দীনেশ চন্দ্র সেন তাঁর বৃহৎ বঙ্গ প্রথম খণ্ড,( দে’জ পাবলিশিং, কলকাতা ২০০৬) গ্রন্থে বৈষ্ণব ধর্মে কৃষ্ণ অবতার প্রসঙ্গে লিখেছেন, শেষদিকের শৈব ধর্ম বঙ্গীয় বৈষ্ণব যুগের অগ্রদূত। গৌরীর সঙ্গে শিবের যে সকল প্রেমলীলা আমরা রাজাদের তাম্র ফলকের স্তোত্রে বর্ণিত দেখিতে পাই এবং সেই যুগের শিব ও গৌরীরপরস্পর আলিঙ্গনবদ্ধ প্রস্তরনির্মিত যুগল রূপ দেখিতে পাইতেছি, তাহা রাধা কৃষ্ণের লীলার আদি যুগের সূচনা করে। বৈদিক রুদ্র দেবতা পরবর্তী বৌদ্ধ যুগে বুদ্ধের গুণগুলি গ্রহণপূর্বক জ্ঞানীর আদর্শরূপে প্রতিষ্ঠিত হইলেন শিব ক্রমশ জ্ঞানের এলাকা ছাড়িয়া প্রেমের পথে অগ্রসর হইলেন এবং যখন হরগৌরীর যুগল মূর্তিতে এই প্রেম কতটা পূর্ণতা প্রাপ্ত হইল তখন রাধা কৃষ্ণ বঙ্গের মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত হইয়া সেই প্রেমের পরিপূর্ণ পরিণতি প্রদর্শন করিলেন।,,, ঐতিহাসিক দীনেশচন্দ্র সেনের বক্তব্যে বোঝা যায় বাঙালির প্রাচীন লৌকিক কামোৎসব শৈব উৎসবে প্রথম পরিবর্তিত হয়। পরে সেই শৈব সংস্কৃতি বৈষ্ণব সংস্কৃতি গ্রাস করে।
কিন্তু চৈতন্যদেবের গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্মে উত্তর ও পশ্চিম vহোলি ব্রাত্য হল। স্থান নিল দোল। মূলত ঋতুরাজ বসন্ত কালের যৌন উৎসব যা বাঙালি কামোৎসব হিসেবে পালন করত , চৈতন্যদেবের হস্তক্ষেপে সেই লৌকিক উৎসব হলো হিন্দু উৎসব। শোনা যায় পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে দোল উৎসবের আয়োজনে প্রভাবিত নদীয়ায় ফিরে দোল উৎসবের আয়োজন করেন। অন্যদিকে টেক্সাস হিউস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক বিজ্ঞানী বডি ক্লক তাঁর সহযোগী বিজ্ঞানী মাইকেল স্মলেন স্কিনরের সঙ্গে যৌথভাবে লেখা গাইড টু বেটার হেল্থ গ্রন্থে লিখেছেন, জীবজগতে ঋতু বৈচিত্রের সঙ্গে দেহছন্দের একটা সম্পর্ক আছে। বসন্তকালে কোকিলের ডাক স্ত্রী কোকিলকে সম্মোহিত করে ডেকে আনে যৌনতার জন্য। মানবদেহেও এই ঋতুতে যৌনতার অনুভূতি বাড়ে।
প্রাণ রসের ক্ষরণ বিজ্ঞানীর ভাষায় অক্সিটোসিন নামে হরমোনের ক্ষরণ। বিজ্ঞানীদের সঙ্গে একমত হয়েই ঐতিহাসিকেরা বলেন শীতকালে মানুষ স্নান করত না দিনের পর দিন। ফলে শীত হত চর্মরোগ। সেই চর্মরোগের বিধান ছিল হলুদ জলে স্নান। হলুদের সঙ্গে পলাশ ফুলের রস মিশিয়ে টোটকা। ধর্মে বোঝানো হল বসন্তের শুরুতে গায়ে হলুদ আর আবির মেখে স্নান করলে মেলে দৈব আশীর্বাদ।( বিষ্ণু খণ্ড , পুরুষোত্তম মাহাত্ম্য)। সবশেষে বলি কালিদাসের মালবিকা গ্লিমিত্রম গল্পটি পাঠকের মনে আছে? দোলের দিনই মালবিকা ও মহারাজ অগ্নিমিত্রের চার চোখের হয় চোখাচুখি। এবারের দোল ও হোলিতে এমন কত আধুনিক অগ্নিমিত্র ও মালবিকার অক্সিটোসিন ক্ষরণ হবে , তৈরি হবে কত নতুন সম্পর্ক। কত পরকীয়া পাবে পারস্পরিক সম্মতি। আইনে যখন বাধা নেই তখন , বলতে বাধা কি বেশ করেছি প্রেম করেছি করবই তো।