বেশ্যার বারমাস্যা

পর্ব: ১১৮

পুরাণ মতে অগ্নিকে সারা জীবন জ্বলার অভিশাপ দেন মহাদেব।

সুজিৎ চট্টোপাধ্যায়: শিব অগ্নিকে শাপ দিলেন, এই বীর্য ধারণ করতে না পেরে আজীবন তুমি জ্বলবে। এবার লেখক স্বপন ঘোষ আলোচনা করেছেন তাঁর কামসিক্ত পুরাণে ভগবান বিষ্ণু সম্পর্কে। বিষ্ণু যেহেতু মর্তে দ্বাপর যুগে কৃষ্ণ হয়ে জন্মাবেন তাই নিজের জন্মের দ্বায়িত্ব নিজেই নিলেন। মাথার দুটি সাদা কালো চুল ছিঁড়ে একটিমাতা দেবকীর গর্ভে স্থাপন করলেন। অন্যটি রোহিনীর গর্ভে। সাদা চুল থেকে বলরামের জন্ম, কালো চুল থেকে কৃষ্ণের জন্ম।

পরাশর মুনি আর জেলেনি সত্যবতীর যৌনতায় মহাভারত রচনাকার ব্যাসদেবের জন্ম।

বায়ুপুরাণের সৃষ্টিকার ব্যাসদেব। সেই ব্যাসদেবের জন্মবৃত্তান্ত কী? পরাশর মুনি একবার নদী পার হতে ঘাটে এসে দেখলেন মাঝির বদলে এক শ্যামলা সুন্দরী । ব্যাসদেব পিতার সেই নারীর রূপমাধুর্যের মোহ সম্পর্কে বায়ুপুরাণে লেখেন নূপুররূপী রাজহংসের কলধ্বনিতে শব্দায়মান যার পাদপদ্ম, চঞ্চল নয়ন। পরাশর মুনি দর্শনে কামার্ত হলেন। তিনি বলেন, হে কন্যা আমি তোমাকে পুত্র দিতে ইচ্ছুক। আমার বংশরক্ষার জন্য। সত্যবতী ধীবরের পালিতা কন্যা m, তিনি বলেন তা সম্ভব নয়। পিতা জানতে পারলে আমাকে ত্যাগ করবেন। পরাশর মুনি বললেন , যৌন সম্পর্ক স্থাপিত হলেও তুমি আবার কুমারী রূপ ফিরে পাবে। সত্যবতী বলেন, প্রকাশ্যে যৌনমিলন কতটা শোভনীয়? পরাশর নৌকা মাঝনদীতে নিয়ে কুয়াশার সৃষ্টি করেন। সকলের অগোচরে নিজের যৌনক্ষুধা নিবারণ করেন। সত্যবতীর শরীরের মাছের গন্ধ দূরীভূত হয। সত্যবতীর শরীর ভরে ওঠে স্বর্গীয় সুগন্ধে। যে সুগন্ধিতে আবার ছুটে আসবে কোনো রাজা। সেই সব আখ্যান মিলবে মহাভারতে।

পুরাণে লিখিত ঋষি জায়াদের ভক্তি পরীক্ষা করতে শিব নিজে লিঙ্গ প্রদর্শন করেন।

ভাগবত পুরাণে নজর দেওয়া যাক। শিবতত্ত্ব প্রদীপিকায় শৈব বলে উদ্ধৃত অংশে বলা আছে, দারুক বনে শিবভক্ত ঋষিরা যখন ত্রিসন্ধ্যা শিব আরাধনায় রত , শিব তাঁদের ভক্তি পরীক্ষার জন্য দিগম্বর মূর্তিতে নিজের লিঙ্গ উত্থিত করে ঋষিজায়াদের সামনে নানারকম অঙ্গভঙ্গি শুরু করেন। ঋষিপত্নীরাও শিবের অঙ্গভঙ্গিতে মজা পেতে থাকেন। ঋষিরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অবাক হন। সেই উলঙ্গব্যক্তির পরিচয় জানতে চান। শিব আত্মপরিচয় দিতে অস্বীকৃত হলে ক্রোধে ঋষিরা শিবকে শাপ দেন। তোমার লিঙ্গ ধরাতলে পতিত হোক। (চলবে)

পরবর্তী পর্ব আগামী শুক্রবার ৫ জুন ,২০২৫

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *