বেশ্যার বারমাস্যা

পর্ব:১৬৫

জেমসন উইড। এক বিষাক্ত গাছ। এদেশে ধুতরো। যার ফুল ফল , বীজ , পাতার রস মৃত্যুর কারণ হতে পারে।

সুজিৎ চট্টোপাধ্যায় : লাই ডিটেক্টরমেশিন দিয়ে পলিগ্রাফ টেস্টের মাধ্যমে অভিযুক্ত বা চিহ্নিত আসামিকে পরীক্ষার করা হয় আদালতের সম্মতিতে। প্রাচীন যুগের এমন ব্যবস্থা ছিল। ইউরোপে ডাইনি বা ওঝারা ধুতরোর বীজ ও পাতার রস রোগীকে পান করিয়ে তাদের মনের অবচেতন গোপন কথা বার করতে। ধুতরোকে ‘জেমসন উইড ‘ নামে ডাকা হয়। এর পেছনে একটি ইতিহাস লুকিয়ে আছে। ড: গৌরীশঙ্কর দে তাঁর নিবন্ধে লিখেছেন,১৭০৫ সালে ব্রিটিশ সৈন্যরা জেম শহরে অবস্থানকালে ধুতরো পাতার স্যালাড খেয়ের ১১ দিন ও উন্মত্ত অবস্থায় ছিল।সেই থেকে ধুতরোর অপর নাম জেম উইড।

কৌটিল্যের বর্ণনায় বিষ কন্যা তৈরির বহু ভেষজ গাছের উল্লেখ মিলেছে।

লেখক আরও লিখেছেন, কৌটিল্য যে অত্যন্ত বাস্তববাদী ছিলেন তাঁর গ্রন্থ যে কতটা তীক্ষ্ম পর্যবেক্ষণ ও সুগভীর অভিজ্ঞতাভিত্তিক ‘অর্থশাস্ত্রে’ নানা বিষয়ের তাঁর প্রভূত জ্ঞান ছিল । প্রতিটি অধ্যায় তার অকাট্য প্রমাণ। বিষকন্যা প্রস্তুত করার জন্য তিনি যেসব উদ্ভিদের নিদান দিয়েছেন, যেমন ভল্লাতক, অরলগুজা, হেম বা ধুতরো, বিদায়ী প্রভৃতি একটিও কাল্পনিক গাছপালা নয়। এইসব গাছপালা সম্পর্কে প্রকৃতির তথ্য ডিটের পারেন কেবল উদ্ভিদবিজ্ঞানী।
প্রাচীন ভারতে রাজ অনুগৃহীতা গণিকারা ছিল কলাবিদ্যায় পারদর্শিনী। এজন্য বালিকা বয়স থেকেই তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো।

বিষকন্যার চুম্বনে মৃত্যুর বিধান ছিল ।

বিষকন্যারা ছিল এমনই প্রশিক্ষণপ্রাপ্তা বিশেষত ধরনের গণিকা গুপ্তচর। যেহেতু তারা বিষকন্যা তাদের শরীরে বিশেষ ধরনের বিষ থাকত,সেহেতু তাদের সঙ্গে যৌন মিলনের মুহূর্তে তাদের শরীরে দাঁত দিয়ে আঘাত করা ও মুখে চুম্বন মুহূর্তে বিষকন্যার দেহজাত বিষ সেই পুরুষের শরীরে প্রবেশ করতে, যার ক্রিয়ায় তার সংজ্ঞা লুপ্ত হতো অথবা মৃত্যু হতো। (চলবে)

পরবর্তী পর্ব আগামী সোমবার ১৭ নভেম্বর,২০২৫

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *