দিগদর্শন ওয়েব ডেস্ক: বাংলা টিভি সংবাদ চ্যানেল কনিষ্ঠ হলেও ধারে ভারে আলাদা নজর কেড়েছে। ইতিমধ্যেই সময়োপযোগী অনুষ্ঠান টিভি নাইন বাংলা নিউজ সিরিজ ভোট যুদ্ধ দেশের- লড়াই বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এই অনুষ্ঠানে শুধু তথ্যের ভিত্তি নয়, সঙ্গে থাকে বিশিষ্ট জনের চুলচেরা বিশ্লেষণ। রবিবারের বিষয় টা একটু ঝালিয়ে নেওয়া যাক। নয়ের দশকে জোট রাজনীতির উত্তাল হাওয়া তখন দিল্লিতে। সদ্য সদ্য দেবগৌড়া ও গুজরাল সরকারের পতন ঘটেছে। অন্তর্বর্তী নির্বাচন। শরিকদের সমর্থনে মসনদে অটল বিহারী বাজপেয়ী। জনতা সরকারের বিদেশমন্ত্রী থাকার সুবাদে কূটনৈতিক অভিজ্ঞতায় বৈরী প্রতিবেশী পাকিস্থানের দিকে বন্ধুত্বে হাত বাড়িয়ে দিল্লি – লাহোর বাস যাত্রা সূচনা করে ছিন্নমূল মানুষের আশীর্বাদ পেলেন। কিন্তু বন্ধুত্বের সম্পর্কে বিশ্বাসঘাতকতা করে কার্গিল সেক্টরে ঢুকে ভারতের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত হানতেই সমুচিত জবাব পেল পাকিস্থান ৬৫ ও ৭১ এর মতো। কিন্তু টলোমলো হল অটল প্রশাসন। ১৯৯৯ সালে বন্ধু শরিক এ আই ডি এম কে সমর্থন ফিরিয়ে নেওয়ায় রাজনীতির চালে বিজেপি হাতধরল এ আই ডি এম কের শত্রু ডি এম কের। কিন্তু তামিল কংগ্রেসের বিরোধিতায় ১ পতন হল ১৩ মাসে বাজপেয়ী সরকারের।
১৯৯৯ থেকে ২০০৪। বন্ধুর পথ পরিক্রমায় বিজেপি।২০০১ সালে ১৩ ডিসেম্বর পাকিস্থানি জঙ্গীরা আক্রমণ হানল সংসদে। নভেম্বরে একই কায়দায় হামলা হল নভেম্বর মাসে জম্মু কাশ্মীর বিধানসভায়। দু বছরের মধ্যেই ২৪ ডিসেম্বর ২০০৩সালের ইণ্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ৮১৪ হাইজ্যাক কন্দহর নিয়ে গেল জঙ্গীরা। ছিনতাইকারীদের দাবি, সন্ত্রাসবাদীদের নেতা মাসুদ আখতার সহ আরও ৩৫ জন জঙ্গির মুক্তি। সমস্ত জঙ্গী সন্ত্রাসের মধ্যে এন ডি এ সরকারের গুটি গুটি পায়ে এগোনো।২০০৩ সালে ছত্তিশগড়, রাজস্থান, ও মধ্য প্রদেশের বিধানসভা ভোটে বিপুল জয় পেল বিজেপি। উপ প্রধানমন্ত্রী আডবাণী এবং বিজেপি সভাপতি বেঙ্কাইয়া নাইডু মনে করেন লোকসভা নির্বাচন করে কেন্দ্রে ফিরেআসার উপযুক্ত সময়। দেশের অর্থনীতিও তখন স্থিতিশীল। শ্লোগান উঠল শাইনিং ইন্ডিয়া। কিন্তু বিপর্যয় হল বিজেপির। এক নম্বরেএল কংগ্রেস। দেশজুড়ে তখন বামেরা মুখ্য শক্তি। বিজেপি বিরোধীদের নিয়ে কংগ্রেস গড়ল ইউ পি এসরকার। কিন্তু ম্যাজিক ফিগারের জন্য বাম সমর্থন দরকারহল বাইরে থেকে। প্রশ্ন উঠল প্রধানমন্ত্রী কে? সোনিয়া গান্ধী আসন ছেড়ে দিলেন বর্ষীয়ান অর্থনীতিবিদ ড; মনমোহন সিংকে। যিনি ভারতের উদার অর্থনীতির জনক।
ইউ পি এ আমলে প্রশ্ন এল জাতীয় সুরক্ষা নিয়ে।২৬ নভেম্বর ২০০৮। মুম্বাই শহরে হামলা পাকিস্থানি জঙ্গিদের। শহর জুড়ে সন্ত্রাস। তাজ হোটেল, কামা হাসপাতাল ., বাস টার্মিনাস পুড়ল। রক্তে আরও লবণাক্ত হল আরব সাগর। সমালোচনায় সরে গেলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শিবরাজ পাতিল। শিল্পায়ন b নিয়ে সি পি এম নাজেহাল। আমেরিকার সঙ্গে পরমাণুচুক্তি নিয়ে বিরূপ বামেরা সমর্থন প্রত্যাহার করল। কিন্তু আস্থা ভোটে উত্তীর্ণ হলেন মনমোহন সিং।২০০৯। বিপুল সমর্থন নিয়ে আবার প্রত্যাবর্তন ইউ পি এ টু সরকারের। বামেদের আসন কমল। তৃণমুলের উত্থান। এরাজ্যে রেকর্ড আসন পেল তাঁরা ২০০৯ সালের নির্বাচনে। ক্ষমতায় আসতেই বিপুল দুর্নীতিতে জড়ায় শরিক দলসহ কংগ্রেস। টু জি স্পেকট্রা, কেলেঙ্কারি, কলগেট স্ল্যাম, নীরা রাদিয়া টেপ, ন্যাশনাল হেরাল্ড কেলেঙ্কারি, কমনওয়েলথ গেমস কেলেঙ্কারির অভিযোগে বিদ্ধ কংগ্রেস। জনলোকপাল বিল নিয়ে অনশনে বসলেন আন্না হাজারে। সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ হাজারের আন্দোলনে যুক্ত হলেন। বাবা রামদেব পথে নামলেন কালো টাকার বিরূদ্ধে। উল্টো দিকে শিল্পবন্ধু স্বচ্ছ ভাবমূর্তি আর গুজরাট মডেলকে সামনে এনে দেশের রাজনীতিতে প্রভাব ফেললেন নরেন্দ্র মোদী। ডাক দিলেন তিনি আচ্ছে দিনের। সেই শ্লোগানের টাইফুনঝড়ে উড়ল দ্বিতীয় ইউ পি এ সরকার। ডিজিটাল ইন্ডিয়ার সূচনা ২০১৫ সালে। নোটবন্দী, উরি পুলওয়ামাতে জঙ্গি হামলার জবাব। পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ঢুকে জঙ্গি নিধন। হল সার্জিকাল স্ট্রাইক।২০১৯ এ নতুন ভারতের স্বপ্ন দেখিয়ে ফিরলেন মোদী।
এই ভারতের রাজনীতির কোলাজে আবার লোকসভার নির্বাচন। টিভি নাইন বাংলার অনবদ্য উপস্থাপনায় আকর্ষক অনুষ্ঠান ভোট – যুদ্ধ দেশের লড়াই পর্ব ৬ আগামীকাল রবিবার বৈশাখি প্রথম রাতে ১০ টায় টিভির চ্যানেলে সুইচ অন করুন ।