বেশ্যার বারমাস্যা

পর্ব: ১৪৩

সন্ধে নামলেই নিষিদ্ধপল্লী হয়ে ওঠে যৌনতার মীনা বাজার।

সুজিৎ চট্টোপাধ্যায় : নিষিদ্ধপল্লীর বাড়িওলারা এমনিতেই বেশি ভাড়া পান বাজার দরের চেয়ে বেশি। মাঝে মাঝে ভাড়াটিয়া যৌনকর্মীদের বাড়িওলার শখ মেটাতে বিনে পয়সায় দেহদান করতে হয়। সেক্ষেত্রে মদের টাকাও সেই যৌনকর্মীকে দিতে হয়। বাড়িওলা খুশি না থাকলে তাদের পোষা গুণ্ডা দিয়ে তাড়িয়ে দিতে পারে। এই ভয় তো থাকেই। অনেক বাড়িওলাকে আবার মাসির ভূমিকাতেও দেখা যায়। দালালরা কোনোআশ্রয়হীন মেয়েকেটে এনে বাড়িওলার কাছে জমা দেয়। বাড়িওলাই সেই মেয়েদের ভরণপোষণের ভার নেয়। মেয়েটি যদি কুমারী হয় সেক্ষেত্রে প্রথম চেখের দেখার কাজটাও বাড়িওলাই করে।

কুমারী মেয়েদের শৃঙ্গার , প্রথম খদ্দেরের মনোরঞ্জনের জন্য।

এরপর পুজোআচ্চা করে শুভদিন দেখে খদ্দের মনোরঞ্জনে নেমে পড়ে মেয়েরা। রোজগারের পুরোটাই যায় বাড়িওলার পকেটে। মেয়েদের সান্ত্বনা দেয় তারা, টাকা যেন চুরি না যায় তাই ব্যাংকের ভূমিকায় থাকছে। সময়মত খাইখরচ ও ঘর ভাড়ার টাকা বাদ দিয়ে ফেরৎ পাবে। বাস্তবে সে টাকার মুখ যৌনকর্মীরা আর দেখতে পায় না।

পুলিশের হাতে মাঝেমাঝেই ধরা পড়ে দালালরা নারী পাচারের অভিযোগে।

একই কথা প্রযোজ্য দালালদের ক্ষেত্রে। তাদেরও অনেক অন্যায় আবদার মানতে হয়। অনেক মেয়েই চায় সংসার করতে। সন্তান স্বামী। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্বামী হয়ে যারা আসে কিছুদিন পর পালিয়ে যায়। সেক্ষেত্রে একদিকে খদ্দের মনোরঞ্জন অন্যদিকে সন্তান প্রতিপালন দুই যৌনকর্মীদের সামলাতে হয়। আজকাল কিছু এন জি ও ওই বাচ্ছাদের পড়াশুনা ও খাওয়াদাওয়ার দায়িত্ব নেয়। শহরাঞ্চলে এসবের সুযোগ থাকলেও পিছিয়ে পড়া মফস্বল বা শিল্পাঞ্চলে অবস্থা করুণ। আজকাল তো রাজনৈতিক দলের বিশেষ করে শাসক দলের টাকা খাটে এই সব নিষিদ্ধপল্লীতে। দলে সমাজবিরোধীদেরপুষতে হয় নেতাদের প্রতিপত্তির রক্ষা করার জন্য তাদের বিনোদনেও যৌনকর্মীদের বিনা পয়সায় বা কম পয়সায় দেহদান করতে হয়।২১ শতাব্দীতেও অবস্থার খুব বেশি একটা পরিবর্তন হয়নি। ( চলবে)

পরবর্তী পর্ব ১ সেপ্টেম্বর, সোমবার,২০২৫

*********

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *