পর্ব: ৮৫

মধ্যযুগে বিখ্যাত গ্রিক যৌনকর্মী লেইস।
সুজিৎ চট্টোপাধ্যায়: গত পর্বে শুরু করেছি গ্রিসে যৌনকর্মীদের আইনগ্রাহ্য করার ইতিহাস জানিয়ে। গ্রিস লেখক নিকলাওস এ ভ্রিসিমটিজ লিখেছেন, হেটাইরি বা বারঙ্গনাদের উৎপত্তি সাধারণ বেশ্যাদের মতোই ক্রীতদাস ও বিদেশিদের মধ্যে থেকে। বহু সাবেক পতিতা বা রাজ রক্ষিতা তাদের কন্যাদের বারাঙ্গনা হওয়ার জন্যই।তাঁরা আশা করত যে কোনো একদিন তাদের কন্যারা বিত্তের অধিকারী হবে এবং তাদের বার্ধক্যের দিনে দেখাশুনো করবে। ক্লাসিক্যাল যুগের এক খ্যাতিমান যৌনকর্মী লেইস ছিল অ্যালসিবিয়াডেস – এর রক্ষিতা টিমান্দ্রার কন্যা। সিম্পোজিয়ামে নর্তকী ও বাঁশি বাজানোর ভূমিকাই পালন করত। সবাই প্রায় মেয়েরা। তাদের নৃত্য ও বাঁশির সুরে পুরুষদের ইন্দ্রিয় উত্তেজিত হয়ে উঠলে বারাঙ্গনারা পুরুষদের বাহুডোরে বাঁধা পর্তু। সিম্পোজিয়াম শেষ হতো যৌন উদ্যমতার মধ্য দিয়ে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল মারমারিয়ান, হেডিয়া, ইরোটন, ডেমলেট আসপাসিয়ার, হিপার্চিয়ারের মতো রাজরক্ষিতারা।

মধ্যযুগে গ্রিক যৌনকর্মী ফ্রাইনে ছিলেন সবচেয়ে দামী।
এটাও ঠিক, সব রাজরক্ষিতাদের দক্ষিণা এক ছিল না। যেমন ফ্রাইনে নিত একশ ড্রাচমা তো গ্রাথেনা তার শরীর তুলে দিত খদ্দেরদের হাতে এক হাজার ড্রাচনায়। ইতিহাস বলে , আলেকজান্ডারের সৈন্যরা থেরস নগরী ধ্বংস করার পর যৌনকর্মী ফ্রাইনে বলেছিল, তার ব্যক্তিগত খরচে তিনি নগরীর পুনর্নির্মাণ করে দেবেন। তবে শর্ত, নগরীর প্রবেশদ্বারে ফ্রাইনের নাম নবনির্মিত নগরীর রূপকার হিসেবে খোদাই করে প্রস্তর ফলক রাখতে হবে। সুতরাং বুঝতে অসুবিধে হয় না একজন যৌনকর্মীর কত সঞ্চয় থাকলে একথা একজন যৌনকর্মী বলতে পারেন। এই ইচ্ছা তার পূরণ হয়নি বটে , কিন্তু ডেলফিতে অ্যাপেলোর মন্দিরে ভাষ্কর প্রাক্সি টেলসকে দিয়ে নিজের একটি মূর্তি বানিয়ে স্থাপন করেন যেখানে খোদিত হয়েছিল এপিক্লেস এর কন্যা ফ্রাইনে কর্তৃক থেস্পিয়াই থেকে নিবেদিত। এই মূর্তি বসানো হয় রাজা আর্কিমিডিস ও ফিলিপের মূর্তির মধ্যবর্তী স্থানে। এই রাজ রক্ষিতা ফ্রাইনে এররের একটি মূর্তি নির্মাণ করিয়ে স্থাপন করেন নিজে শহর বোয়েশিয়ার থেসপিয়াই -এ। (চলবে)
আগামী পর্ব : ১০ জানুয়ারি, শুক্রবার,২০২৫

******