বেশ্যার বারোমাস্যা

পর্ব : ৭৮

সিনেমা প্রযুক্তি আবিষ্কার করে বিজ্ঞানী টমাস আলভা এডিসন নিজেই কোম্পানি খুলে যৌন উত্তেজক ছবি বানান দি কিস্ (১৮৬৬)

সুজিৎ চট্টোপাধ্যায়: গত সপ্তাহে আলোচনা শুরু করেছিলাম স্বদেশচর্চা লোক পত্রিকার শারদ সংখ্যা ২০২৬তে প্রকাশিত স্বাতী ভট্টাচার্যের শেষ পারানির কড়ি – নগ্ন নারীদেহ শীর্ষক প্রতিবেদনটি দিয়ে। সেখানে লেখিকা লিখেছেন,,, গণমাধ্যমে এর পরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ সম্ভবত ফটোগ্রাফি আবিষ্কার।১৮৩২ সালে ফটোগ্রাফির চল শুরু হওয়ার চল্লিশ বছর পর,১৮৭৪ সালে পুলিশ লন্ডনে ফটোগ্রাফার হেনরি হেলারে বাড়িতে রেড করে এক লক্ষ তিরিশ হাজার অশ্লীল ছবিএবং পাঁচ হাজার স্লাইড উদ্ধার করে। ততদিনে পড়াশোনা জানা লোকের সীমিত গণ্ডি পেরিয়ে পর্ণোগ্রাফি ছড়িয়ে পড়েছে অনেক বেশি মানুষের মধ্যে। আমেরিকার টমাস আলভা এডিসন আবিষ্কার করলেন মুভিং পিকচার্স। তাঁর নিজের ছবি তৈরির কোম্পানিও বানালেন। সিনেমায় সেই প্রথম শৈশবেই তৈরি হয়েছিল যৌনতাঘন এক ছবি, করেছিলেন এডিসন নিজেই। ছবির নাম দ্য কিস (১৮৬৬)। একেও পর্ণোগ্রাফি বলা চলে না, কিন্তু ত নিয়ে সেসময় যথেষ্ট হইচই হয়েছিল, আর যৌনতাময় ছবি তৈরির ধারাটির গোড়াপত্তনও সেখানেই। অচিরেই নানা দেশে, বিশেষত দক্ষিণ আমেরিকায় তৈরি হতে লাগল ব্লু ফিল্ম।

লেখিকা প্রশ্ন তুলেছেন, একি ভালো না খারাপ? একে কি কাঁধ ঝাঁকিয়ে মেনে নেওয়া চলে নাকি এর বিরুদ্ধে কাঁধে কাঁধ ঠেকিয়ে প্রতিরোধ তৈরি করতে হবে? এই প্রশ্নটির উত্তর সহজ নয়। আপাতদৃষ্টিতে মনে হয়, মানুষের দেহকে অবমাননাকরে, তাকে একটি পণ্য, একটা আটেম করে তুলে মানুষকেই অপমান করতে শেখায় পর্ণোগ্রাফি। ভারতের এক সাংবাদিক দুটি মেয়ের অভিজ্ঞ্যতা উদ্ধৃত করেছেন। প্রথম মেয়েটি স্বাবলম্বী, উচ্চ শিক্ষিতা। সে বলছে, ভিডিওতে তার বয়ফ্রেন্ড যে ধরনের কাজ মেয়েদের করতে দেখে, যেমন নাচ নাচতে দেখে , মেয়েটির কাছে তেমন নাচ , তেমন আচরণ আশা করে মেয়েটি তাকে কিছুতেই বুঝিয়ে উঠতে পারে না যে যৌনতার এক কল্পিত জগৎ তাকে দেখানো হচ্ছে এবং সব মেয়েই এক ধরনের যৌন আচরণ করতে প্রস্তুত নয়। ফলে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।

বাইজিদের ছলাকলা উপভোগ করতে রাতে বাঙালি বাবুরা যেতেন বাগানবাড়িতে।

এই সমস্যা আজকের নয়। বাংলায় বাবু কালচারের সময় রাতে বাবুরা রাত কাটাতেন বাগানবাড়িতে। কারণ স্ত্রী যে যৌন সুখ দেন সেটা একঘেয়ে। নাচ গান, উর্দুতে যাকে বলে নখরা কৌশলে শরীরের উত্তেজক অংশকে দেখানোর পটুত্ত্ব বাড়ির বৌদের কই ? এতো এক অনুশীলনের ব্যাপার। ( চলবে)


পরবর্তী পর্ব: ১৩ জানুয়ারি , সোমবার ,২০২৪

***********

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *