*
নারীর ক্ষমতায়ন আলোচনায় সঞ্চালিকা সুদেষ্ণা রায়, গৌতম চক্রবর্তী ডা: কুণাল সরকার , অনুরাধা কাপুর ও দামিনী বেনি বসু।
দিগদর্শন ওয়েব ডেস্ক : কথায় বলে সরষের মধ্যেই ভূত। নাহলে আন্তর্জাতিক ঐতিহ্যশালী সমাজসেবী সংগঠন রোটারি ক্লাবের অন্যতম রোটারি ক্যালকাটা মহানগরের প্রধান চিত্রা আগরওয়াল যখন মধ্য কোলকাতার এক বিলাসবহুল হোটেলে নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে বক্তব্য রাখছেন তখন মঞ্চের পিছনে এল ই ডি স্ক্রিনে তাঁর পরিচয় ভেসে উঠছে চেয়ারম্যান হিসেবে।
রোটারি ক্যালকাটা মহানগর রবিবার সন্ধ্যায় আসন্ন দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে ২১ শতাব্দীতে নারীর ক্ষমতায়নকে স্রদ্ধা জানিয়ে সমাজের ,৯ টি ক্ষেত্রে সফল ৯ জন নারীকে সম্মানিত করলেন। বাড়তি পাওনা ছিল একটি আলোচনা। সঞ্চালনায় ছিলেন চলচ্চিত্র পরিচালিকা সুদেষ্ণা রায়। যিনি রাজ্যের শিশি সুরক্ষা কমিশনের প্রধানও। তাঁর অপর প্রান্তে ছিলেন কোলকাতার প্রাক্তন নগরপাল গৌতম চক্রবর্তী, চিকিৎসক কুণাল সরকার, নারী আন্দোলনের নেত্রী অনুরাধা কাপুর ও চলচ্চিত্র অভিনয় প্রশিক্ষক বেনি বসু।
যে ন’জন নারী স্ব স্ব ক্ষেত্রে সাফল্যের নিরিখে এদিন নবশক্তি স্বীকৃতি পেলেন তাঁদের মধ্যে ছিলেন সমাজসেবী ও ফ্যাশন ডিজাইনার পারুল বাজোরিয়া, মাতৃস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও পুষ্টিবিদ প্রিয়াঙ্কা গোয়েঙ্কা , সাংবাদিক অন্বেষা ব্যানার্জি , আইনবিদ যশমিন নাজিয়া,আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্না ক্যারাটে খেলোয়াড় ও আত্মরক্ষা বিশেষজ্ঞা শারায়না ব্যানার্জি ও পুলিশ আধিকারিক অনসূয়া ব্যানার্জি , সাঁতারু তাহরিনা নাসরিন , নারী সচেতনতা কর্মী পায়েল ভার্মা ও লেখিকা সোমা বোস।
মুশকিল হলো যেহেতু কলকাতাকেন্দ্রিক সংগঠন তাই স্বীকৃতির তালিকায় নেই কোনো সমাজের পিছিয়ে পড়া সফল নারী। উচ্চবর্ণের ঘনঘটা। তবে দুজন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মহিলা তালিকায় স্থান পেয়েছে। সফল নারীদের যেসব জুরি বেছে নিয়েছেন তাঁরাও সমাজের উচ্চবর্ণের। শিক্ষাবিদ সত্যম রায়চৌধুরী , ডা: কুণাল সরকার ও পরিচালিকা সুদেষ্ণা রায়।
সংগঠন হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি রয়েছে রোটারি ক্লাবের।সামাজিক কাজের ক্ষেত্রেও রয়েছে জগৎজোড়া খ্যাতি। কিন্তু শহুরে এই সব নারী ক্ষমতায়ন নিয়ে যেসব অনুষ্ঠান হয় সোজা কথায় নারীদের হাতে ললিপপ ধরানো অনুষ্ঠান।
এদিনের অনুষ্ঠানে সংগঠনের সভানেত্রী প্রমিতা দুগার,চেয়ারপারসন চিত্রা আগরওয়াল নারীদের দেবী দুর্গার মত দশ হাতে সংসার ও বিশ্বজয়ের কথা উল্লেখ করেন। অথচ যে কথাটি অনুচ্চারিত হয়ে থাকে সেটা দুর্গা কোনো স্বাবলম্বী নারী নয়। পুরুষ দেবতারা স্ব স্ব যৌথ ক্ষমতায় দেবীর সৃষ্টি করেছেন। পৌরাণিক তথ্যতো সেটাই বলে। পুরুষের গুণ ও বলে যাঁর সৃষ্টি।স্বীকৃতির তালিকায় পাওয়া গেল না প্রান্তিক গ্রামাঞ্চলে ডাইনি প্রথার বিরুদ্ধে যে সাহসিনী লড়াই চালাচ্ছেন, পাওয়া গেল না প্রান্তিক গ্রামাঞ্চলে সেই লড়াকু মহিলাদের একজন যিনি বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে সমাজের বিরুদ্ধে জীবন সংশয় হতে পারে জেনেও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন এমন একজনকে। আসলে তেলা মাথায় তেল দিয়েই শহুরে বিত্তবান ও বিদ্বজন সমাজ সমাজবন্ধুর ঠেকা নিয়ে আছেনসর্বত্র ।অবশ্য এঁদের ঝুলিতে আছে প্রান্তিক অঞ্চলে সমাজসেবার নানা প্রমাণ। কিন্তু সেটা জীবে দয়া । প্রান্তিক প্রান্তরে লড়াই করা কোনো প্রান্তিক গেঁয়ো নারী কি তারাখচিত হোটেলে মানানসই?