শ্রীজিৎ চট্টরাজ: আর জি করের ঘটনায় দেশ যখন উত্তাল , বিজেপি যখন বিষয়টিকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহারের ছক কষে চলেছে তখন বিজেপি শাসিত হরিয়ানায় গো মাংস খাওয়ার অভিযোগে এক সংখ্যালঘু বঙ্গ সন্তানকে জনসমক্ষে পিটিয়ে মারা হল। সেই খবরটি ধামা চাপা পড়ে গেছে। দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার বাসন্তীর যুবক পরিবারের ভরণপোষণের জন্য রাজ্যে কাজ না পেয়ে হরিয়ানায় যায়। সেখানে তাকে কট্টর হিন্দুত্ববাদী কিছু নৃশংস মানুষ ধর্মান্ধতায় গরুর মাংস খাওয়ার অপবাদে জনসমক্ষে পিটিয়ে মারে। উপস্থিত জনতার কেউ তার আর্তচিৎকারে এগিয়ে আসেনি। বরং উপভোগ করেছে নরমেধ যজ্ঞ।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যয় অবশ্য নিহত যুবকের স্ত্রীকে একটি চাকরির নিয়োগপত্র দিয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে ২৭ আগষ্ট দিল্লি থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে হরিয়ানার চরখি দাদরির বাঁধরা এলাকায়। নিহত মুসলিম যুবক পেশায় ছিলেন পরিচ্ছন্নতা কর্মী। হরিয়ানা পুলিশ সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে। দুজন ছিল নাবালক। তাদেরও গ্রেপ্তারের করা হয়েছে। অন্যদিকে হরিয়ানায় মুখ্যমন্ত্রী নায়াব সিং সাইনি ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলেছেন। হরিয়ানার বিরোধী দলগুলি প্রতিবাদ জানিয়েছে।ঘটনার প্রতিবাদে উত্তর কলকাতার গিরিশ পার্কের কাছে হরিয়ানা ভবনে প্রতিবাদ মিছিল নিয়ে পৌঁছে যায় সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশন।
মঙ্গলবার হরিয়ানা ভবনের সামনে বিক্ষোভ সভায় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, দেশজুড়ে গো-রক্ষার নামে বাঙালি মুসলিম শ্রমিককে নৃশংসভাবে গরু খাওয়ার অপবাদে জনসমক্ষে পিটিয়ে খুন করেছে। বিজেপি শাসিত রাজ্যে বেশি ঘটছে। আমরা তীব্রতর নিন্দা করছি গৈরিক সন্ত্রাসের। দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি চাই। পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে হরিয়ানা সরকারকে। সংসদে আনতে হবে গো-রক্ষা বাহিনীকে নিষিদ্ধ করার বিল ।গণপিটুনির বিরুদ্ধে কঠোর আইন আনতে হবে। মহারাষ্ট্রে বৃদ্ধ হাজি সাহেবের ওপরও অত্যাচারের জন্য দায়ী দুষ্কৃতীদের শাস্তির বিধান দিতে হবে।
হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টিকে জনরোষ আখ্যা দিয়েছেন। গণপিটুনি মানতে রাজি নন। তবে কি তাঁর পরোক্ষ সমর্থন আছে গো-রক্ষা বাহিনীর পক্ষে?
সংগঠন সভাপতি আনোয়ার হোসেন কাসেমী বলেন, বিজেপি মদতপুষ্ট অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। সভায় অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন- সংগঠনের সহ সম্পাদক শিক্ষক আলি আকবর, গোলাম রহমান, মুস্তাহিদ ইসলাম, জিয়াউর রহমান গাইন, মণিরুল ইসলাম প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব খলিল মল্লিক, সালাউদ্দিন আহমেদ আব্দুর রউফ, নাসিরউদ্দিন ঘরামী, মোহাম্মদ আলী সহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। সংগঠনের পক্ষে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয় হরিয়ানা ভবনের কর্তৃপক্ষের হাতে।