পর্ব: ১২৭

বৈদিক যুগে গণিকা প্রশিক্ষণ ছিল বাধ্যতামূলক।
সুজিৎ চট্টোপাধ্যায় : আজকের গণিকার কিন্তু সামাজিক দায়বদ্ধতা নেই যে কামশাস্ত্রে তাকে পটু হতে হবে। কিন্তু প্রাচীন ভারতে গণিকাবৃত্তিতে প্রবেশের আগে কঠোর অনুশীলনের ব্যবস্থা থাকত। বিভিন্ন রুচির বিভিন্ন বয়সে গ্রাহকদের সঙ্গে কিভাবে সঙ্গ দিতে হয় তার আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। শিক্ষা ছিল। রীতিমত প্রশিক্ষণ নিতে হতো। এমনকি গণিকা কিভাবে সাজবেন সেটাও একটা বিষয়। সাধারণত গণিকারা দিনে রাতে বহু পুরুষের শয্যাসঙ্গী হতে হয় তাই যৌনতায় তাঁদের থাকে না কোনো স্বাভাবিক ভালোবাসা। সেক্ষেত্রে ছলাকলা ও অভিনয়ে আন্তরিকতা দেখাতে হয়। সেটাও একটা শিক্ষণীয় বিষয়।

মূলদেব।
প্রাচীন ভারতে গণিকাদের প্রশিক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত গবেষণা করে লেখকদ্বয় সুরেশচন্দ্র বন্দোপাধ্যায় ও রমলাদেবী তাঁদের ভারতীয় সমাজে প্রান্তবাসিনী গ্রন্থে গণিকার প্রশিক্ষণ শীর্ষক অধ্যায়ে ১৪০ নং পৃষ্ঠায লিখেছেন,,,,,,, প্রাচীন ভারতীয় ঐতিহ্যে মূলদেব নামটি অপ্রচলিতr ছিল। তাকে মূলদেবও বলা হয়। মূলদেব শব্দের তাৎপর্য বোধ হয় এই যে, মূলই যাঁর দেবতা। অর্থাৎ গাছের মন্ত্রপূত মূল বা শিকড় দিয়ে তিনি লোককে বশীভূত করতেন। তাঁকে কর্ণীসূত বা গণিকাপুত্রও বলা হয়। চৌর্যশাস্ত্রের প্রণেতা হিসেবে এবং কামকলায় অভিজ্ঞ এবং প্রশিক্ষক হিসাবে তিনি বিখ্যাত বা কুখ্যাত হতেন। সুবিদিত যাদুকর রূপেও তাঁর পরিচয় পাওয়া যায়। তাছাড়াও তাঁর অনেক গুণ ছিল।

মূলদেব ( কার্তিক) দেবসেনার প্রেমাসক্ত।
তিনি ভীষণ জুয়াড়ি এবং অতীব বেশ্যাশক্তব্যক্তি হতেন। চতুভার্ণীর অন্যতম ভাণ পদ্মপ্রাভৃতকে কর্ণীপুত্র মূলদেবকে দেখা যায় তাঁর প্রিয় গণিকা দেবদত্তার ভগ্নী দেবসেনার প্রেমাসক্তা।পরম্পরাক্রমে মূলদেব যে সুপরিচিত ছিলেন , তার একজন প্রধান সাক্ষী বাণভট্ট; তিনি কাদম্বরীতে পিটারসনের সংস্করণ ,১৯০০, পৃষ্ঠা ১৯,২/১৬-১৭) এই ধূর্ত শিরোমণি গণিকাসেবীর উল্লেখ করেছেন। ( চলবে)
পরবর্তী পর্ব ৭ জুলাই , সোমবার
