বেশ্যার বারমাস্যা

পর্ব:১৭৫

গ্রীক শিক্ষকের বালক ছাত্রের প্রেম ছিল সমাজস্বীকৃত।

সুজিৎ চট্টোপাধ্যায়: একটা সময় এমন এলো যখন বালকদের পশ্চাৎদেশে উপগত হওয়ার অনুমোদন রদ হলো। কারণ তারাই তো ভবিষ্যত নাগরিক। সুতরাং মহিলাদের মত তাদের ভোগের সামগ্রী ভাবা যাবে না। বিকল্প ব্যবস্থা হলো বালকদের উরুর মাঝে প্রেমিকরা বীর্য স্খলন করতে পারবেন। এই পরিস্থিতিতে বালকদের মধ্যে কিন্তু কোনো যৌন উত্তেজনা হতো না। যেসকল প্রাচীন পাত্র বিজ্ঞানীরা পেয়েছেন মাটি খুঁড়ে সেখানে যেসব চিত্র অঙ্কিত আছে , সেই সব ছবির নিরীক্ষণ করে প্রত্নতত্ত্ববিদেরা জানিয়েছেন, প্রেমিক শিক্ষকের লিঙ্গ যখন উত্থিত এবং প্রিয়তম বালকের উরুর মাঝে যৌনকর্মে লিপ্ত তখন বালকের লিঙ্গ থাকত আবেগহীন। অথচ যদি সেই বালক, কিশোর বা যুবক যদি বিষয়টিতে তৃপ্তি অনুভব করছে এমন অনুভূতি প্রকাশ পায় সেক্ষেত্রে তাঁকে নিন্দার করে পুরুষ বেশ্যা হিসেবে গণ্য করা হয়।

বিভিন্ন পাত্রে এই শিক্ষক ও ছাত্রের প্রেম ও যৌনতা শিল্পের আকারে ফুটিয়ে তোলা হতো।

এই সামাজিক প্রথা খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ থেকে চতুর্থ শতক পর্যন্ত উচ্চ শ্রেণীর ব্যক্তিদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। নিম্নশ্রেণীর কৃষক, শ্রমজীবী, বিদেশি ও দাসদের এর বাইরে রাখা হতো। তবু কোনো বিদেশি বা দাস যাদের রাজনৈতিক অধিকার ছিল না তারা যদি বালক প্রেমের সংগঠনে যুক্ত হতে চাইত সেক্ষেত্রে তাদের আর্থিক যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হতো। নিকলাওস এ ভ্রিসিমটজিস লিখিত প্রাচীন গ্রীসে প্রেম ও যৌন জীবন গ্রন্থের বঙ্গানুবাদ যিনি করেছেন সেই আনোয়ার বিশেনীর মঞ্জু এই বিষয়টির উল্লেখ করতে গিয়ে ৭৪ পৃষ্ঠায় লিখেছেন, বালকের প্রতি আসক্তি প্রকাশ করতে যেমন অফুরন্ত সময় ব্যয় করতে হতো তেমন আর্থিক সাবলম্বিতাও থাকতে হতো প্রচণ্ড। ফলে গ্রীক নিম্ন সমাজের পক্ষে সম্ভব ছিল না বালক বা কিশোরদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করা

সমাজস্বীকৃত হলেও শিক্ষকের সঙ্গে বালক ছাত্রের প্রেম ও যৌনতা রাষ্ট্রের চোখে স্বীকৃত ছিল
না।

আসলের বালক প্রেম যৌনতাতেই পরিণতি পেত তবে রাষ্ট্র এটি আইনত মেনে নিত বলা যায় না। বরং শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতো। এক আইন ছিল, যদি কোনো এথেনিয় নিজেকে কারো যৌনসঙ্গী হিসেবে উপগত হতে দেয়, তাহলে সে কখনো নয়জন নির্বাচিত প্রতিনিধির একজন হিসেবে প্রতিনিধিত্বের অনুমতি পাবে না।, কিম্বা যাজকের পদলাভ করতে পারবে না (চলবে)

পরবর্তী পর্ব শুক্রবার ২৬ ডিসেম্বর,২০২৫

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *