বেশ্যার বারমাস্যা

পর্ব:১৭৪

সুজিৎ চট্টোপাধ্যায় : সেই প্রাচীন যুগে মধ্যবয়সী শিক্ষালয়ের শিক্ষকেরা বালক ও কিশোর ছাত্রদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে যাদের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়তে তাদের উপহার দিত সেকথা আগে পর্বেই উল্লেখ করেছি। যেসব পানপাত্র তারা ছাত্রদের উপহার দিত সেইসব পানপাত্রে পছন্দের যৌনসঙ্গী ছাত্রীর নাম লিখে দিত। ফলে এই পাত্র নির্মাণ এক শিল্প হয়ে দেখা দেয়। যারা সেই পাত্রে সুন্দর অক্ষরে নাম লিখত । সেরা সুন্দর দেখতে ও দেহ সৌষ্ঠবে সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয় ছিল তাদের চাহিদা বাড়ায় পুরুষ শিক্ষকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা কেটের যেত। আনোয়ার হোসেনই মঞ্জু তাঁর অনূদিত প্রাচীন গ্রীসে প্রেম ও যৌন ভীবন গ্রন্থে এমনই উল্লেখ করেছেন ৭১/৭২ পৃষ্ঠায়।

প্রাচীনযুগে গ্রীকের পানপাত্রে আঁকা হতো শিক্ষক ও ছাত্রদের যৌনতার ছবি।

এই সম্পর্কে ছাত্রদের পছন্দ অপছন্দের কোনো অধিকার ছিল না। মোটামুটি ভি১৮ বছরটি বয়স পর্যন্ত এই কিশোরদের উপভোগ করার অধিকার মধ্যবয়সী শিক্ষকদের ছিল। তবে এরপরেও কিছুক্ষেত্রে ব্যতিক্রমও ছিল। সেক্ষেত্রে কিশোররা আর ছাত্র থাকত না, তাই বিষয়টা সমাজের চোখে ছিল দুই পূর্ণ বয়সের পুরুষের সমকামিতা। কিন্তু এই বিষয়ে সামাজিক স্বীকৃতি ছিল না। যতদিন বালক থেকে কিশোর না হয়ে উঠত ছাত্ররা শিক্ষকরা তাদের প্রেমিক যৌনসঙ্গী হিসেবে দেখার পাশাপাশি সামাজিক শালীনতা, বিনম্রতা, নৈতিক বোধ, শৃংখলা, আইন, বৈদেশিক নীতি বিষয়ে শিক্ষাদান করত।

প্রাচীন গ্রীসে দুই পরিণত পুরুষের যৌনতা সমাজ স্বীকৃত ছিল না।

বালক ও কিশোর ছাত্রদের পায়ু পথে যৌন সঙ্গম করে তাদের নারীর বিকল্প ভাবা হতো। এই
ছিল বিনোদনের ব্যবস্থা। শিক্ষকেরা ছাত্রদের শিল্পজগত ও নাট্যালয়ে নিয়ে যেত। শিক্ষালয়ে এই বিষয়গুলি সংযোজিত নয় থাকলেও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে এই বিষয়গুলি প্রয়োজনীয় বলে সমাজে স্বীকার করা হতো। ইতিহাসবিদেরা ছাত্র শিক্ষকের সম্পর্কের ক্ষেত্রে যৌনতাকে তেমন প্রাধান্য দেননি। কেননা বিষয়টি ছিল স্বাভাবিক। প্রত্নতত্ত্ব স্মারক হিসেবে সেযুগের যেসব পাত্র পাওয়া গেছে কিম্বা যেসব দেয়াল চিত্র আবিষ্কার হয়েছে সেখানে মিলেছে শিক্ষকেরা বালক ছাত্রদের যৌন অঙ্গ ছুঁয়ে পর্যবেক্ষণ করার চিত্র। গৃহে পরিবারের নারী, দাসী দের মতো এই যৌনতাকে একপক্ষ ছিল ভোগীর ভূমিকায়। অন্যদল ভোগের বস্তু। (চলবে)

পরবর্তী পর্ব ২২ ডিসেম্বর, সোমবার,২০২৫

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *