পর্ব: ১৭১

প্রাচীন যুগে গ্রীকে নারীরা ছিল গৃহের অন্তরালে।
সুজিৎ চট্টোপাধ্যায় : গ্রীসে প্রাচী যুগে নারী বারাঙ্গনা ছাড়াও বালকদের প্রতি পুরুষ সমাজের আসক্তি নিয়ে গ্রন্থে লিখেছেন নিকোলাওস এ ভ্রিসিমটজিস। বঙ্গানুবাদ করেছেন আনোয়ার হোসেনই মঞ্জু। তাঁর অনুবাদ গ্রন্থে বালকের প্রতি আসক্তি অধ্যায়ে ৬৮ পৃষ্ঠায় লিখেছেন, মাতৃতান্ত্রিক যুগের অবসানেরু পর থেকেই সংশ্লিষ্ট সমাজগুলোতে পুরুষ সমকাম জনপ্রিয় ও বিকশিত হয়ে উঠতে থাকে , যা প্রাচীন সমাজে ছিল ও সমাজেও রয়ে গেছে, বিশেষত: যেখানে মহিলারা সামাজিকভাবে ও যৌন দিক থেকে অবদমিত ও নিয়ন্ত্রিত। কার্যত সকল প্রাচীন সমাজে সমকামের অস্তিত্ব ছিল।বিশেষ করে যাযাবর প্রকৃতির লোকদের মধ্যে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাদের একস্থান থেকে আরেক স্থানে স্থানান্তরের পর্যায়ে, যুদ্ধের সময়ে যখন পুরুষদের সাথে মহিলারা থাকতো না অথবা পুরুষের সংখ্যাধিক্যের মধ্যে নিতান্তই স্বল্প সংখ্যক থাকতো ।

প্রাচীন যুগে গ্রীক বালকেরা ছিল বয়স্ক পুরুষদের যৌনতার সঙ্গী।
লেখক অনুবাদক আনোয়ার হোসেনই মঞ্জু লিখেছেন, স্পার্টা, থেবস, অথবা ক্রিটের মতো অধিকতর সামরিক মানসিকতাসম্পন্ন সমাজে বালকেরা খুব কম বয়সে তাদের পরিবারকে ছেড়ে যেতো এবং সেনানিবাসে তাদের সমবয়সী বালক বা বয়স্ক পুরুষদের সাথে অবস্থান করে সৈনিকের জীবন শুরু করার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করত।

প্রাচীন গ্রীসে পুরুষদের সমকামিতা ছিল সামাজিক প্রথা।
সেনানিবাসে মুষ্টিযুদ্ধ ও মল্লযুদ্ধ প্রশিক্ষণের স্থানে ও জিমনেশিয়ামে তাদের প্রশিক্ষণ নিতে হতো নগ্ন অবস্থায়। এসব স্থানেই বিকশিত হয় pederasry বা বালকের প্রতি আসক্তি।এর অর্থ এমন নয় যে,এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সমকামিতার উৎপত্তি হয়েছে। সমকামিতা সমাজে সবসময়ের প্রচলিত ছিল এবং বালকদের প্রতি আধ্যাত্মিক প্রেমের সূচনা হয় খ্রিস্টপূর্ব ৬ ষ্ঠ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে এবং খ্রিস্টপূর্ব ৪র্থ শতাব্দীর শেষভাগ পর্যন্ত এর বিকাশ অব্যাহত ছিল। এধরণের সম্পর্কের আরো প্রাচীনত্বের দাবি উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কিন্তু তা প্রমাণ করার মতো প্রয়োজনীয় তথ্য দুর্লভ।( চলবে)
পরবর্তী পর্ব ৮ ডিসেম্বর, সোমবার,২০২৫

