পর্ব:১৫৬

মদ্রদেশের কন্যা ছিলেন মহাভারতের পাণ্ডু রাজার স্ট্রিট। মাদ্রীর পুত্র নকুল ও সহদেব।
সুজিৎ চট্টোপাধ্যায়: মহাভারতের চরিত্র রাজা পান্ডুর স্ত্রী ছিলেন মাদ্রী। যিনি সহমরণে গিয়েছিলেন। মদ্রদেশের কন্যা। মদ্র পাঞ্জাবের রবি ও চেনাব নদীর মধ্যবর্তী একটি দেশ। রাজধানী ছিল সাকল। সম্ভবত যা পাকিস্থানের বর্তমান শিয়ালকোট অঞ্চল। কারও কারও মতে , মদ্রদেশের নাম বাহ্লিক বা বাহিক। হেমচন্দ্রের অভিধান চিন্তামণির মতে, মদ্রকে টক্ক দেশও বলা হত। বাহ্লিক স্থানটি ছিল বিপাশা ও শতুদ্র নদীর অন্তর্বর্তী।

মদ্রদেশ। পূর্ব নাম ছিল সাকল।অনেকের বলেন টক্কদেশ। এই মুহূর্তে যা পাকিস্থানের শিয়ালকোট অঞ্চলে।
লেখকদ্বয় সুরেশচন্দ্র বন্দোপাধ্যায় ও রমলাদেবী তাঁদের ভারতীয় সমাজের প্রান্তবাসিনী গ্রন্থের ১৮ পৃষ্ঠায় লিখেছেন,, গণিকা যে নগর সংস্কৃতিকে গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করত, তা মহাভারতের নানা ছত্রে উল্লেখ আছে। এটা আমরা লক্ষ্যে করেছি। কুরুপাঞ্চাল অঞ্চল অর্থাৎ পূর্ব পাঞ্জাব ও পশ্চিম-উত্তরপ্রদেশ মহাভারতের ঘটনাবলীর অকুস্থল। উল্লিখিত সামাজিক চিত্র এই অঞ্চলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট । সুতরাং অনেকের অনুমান যে, এই অঞ্চলের গণিকাবৃত্তির উদ্ভব হয়। আবার পাঞ্জাবেও সিন্ধুদেশে মদ্রজাতি ও সিন্ধু সৌবীরকেরা বেদোত্তর যুগে বাস করত।

মহাভারতে কর্ণ মদ্র দেশ সম্পর্কে কটূক্তি করে বলেছেন, এই স্থানের নারী-পুরুষ মদ্যপান, গোমাংস ভক্ষণ ও অবাধ যৌন লাম্পট্যে মেতে থাকে।
অতএব এটা খুবই সম্ভব যে, এইসব জাতিরাই নরনারীর অবাধ প্রেম এমনকি গণিকাবৃত্তির উদ্ভবে ও প্রসারে সহায়ক হয়েছিল। এই প্রসঙ্গে শল্যরাজের মদ্যদেশ সম্বন্ধে কর্ণের কটূক্তি ( মহাভারত ৮/২৭) প্রণিধান যোগ্য। কর্ণ বলেছেন, যে মদ্রদেশের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় , অতিথি, ক্রীতদাস যথেষ্ট নারীসম্ভোগ করে এবং সেই দেশের নারীগণ বন্ধু ও অজ্ঞাত-কুলশীল লোকের সঙ্গে অবাধে মিলিত হয়। মদ্রদের খাদ্যতালিকার মধ্যে আছে সীধু নামক কড়া মদ এবং গোমাংস। এসব খাওয়ার পরেই তারা লিপ্ত হত লাম্পট্যে। মদমত্তা নারীরা বিবসনা হয়ে পশুর মত অসংযত সম্ভোগে রত হত। (চলবে)
আগামী পর্ব , শুক্রবার,১৭ অক্টোবর,২০২৫
