পর্ব : ১৪৯

সুজিৎ চট্টোপাধ্যায় : বেশকিছু বছর ধরে সমকামী কিছু মানুষ যৌনকর্মী হিসেবে নিষিদ্ধ পল্লীতে নাম লিখিয়েছেন। এছাড়াও মেয়েলি কিছু পুরুষ যাঁরা অন্তরে নারী, দেহে পুরুষ তাঁরাও আসছেন নিষিদ্ধপল্লীতে। একদিকে যৌনসুখ প্রাপ্তি । বাড়তি সুযোগ রোজগার। অনেকে যুক্ত নাচের গ্রুপে বা মডেলিংয়ে। পোশাক ডিজাইন বা মেকআপেও দক্ষ। কিন্তু ধারাবাহিক স্বচ্ছল থাকার কাজ কোথায়? অনেকে কাজের সুযোগ পেয়ে উত্তরপ্রদেশ ও বিহারে যান রথদেখা, কলা বেচা দুটোই হয়। এই সমকামীরা স্বাভাবিক সমাজে ব্রাত্য। তাঁরা বিশ্বজুড়ে নিজের অধিকার্ট বুঝে নিতে সংঘবদ্ধ হচ্ছেন।

নিষিদ্ধপল্লীর বাইরেও এই সমকামিতা ক্রমশ বাড়ছে। পুরুষে পুরুষে। নারীতে নারীতে।অনেকের আবার উভকামী। তাঁরা পুরুষে পুরুষে , পুরুষে নারীতে বা নারীতে পুরুষে বা নারীতে নারীতে অভ্যস্ত।শোনা যায়, টলিউডের এক প্রয়াত অল্পবয়সী প্রতিভাবান পরিচালক তাঁর বেশ কয়েকটি ছবিতে মুখ্য পুরুষচরিত্রের সুযোগ দেন। শর্ত ছিল তাঁর সঙ্গে বিছানার পুরুষের ভূমিকায় আসতে হবে। একথা বলিউড সম্পর্কেও শোনা যায়। এই সমকাম বা উভকাম যুগযুগ ধরে চলছে।

ইতিমধ্যে দিল্লি হাইকোর্টের রায়ে সমকামিতা অপরাধ নয়। কিন্তু ধর্মীয় বিধান? হিন্দু ধর্মের কথাই ধরা যাক। বলা হয়েছে নিষিদ্ধ , প্যপ। মনু সংহিতায় বলা হয়েছে , সমকামিতা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সমকামী ব্রাহ্মণের জাত ভ্রষ্ট হয়। অব্রাহ্মনের মৃত্যু হতে পারে ব্রহ্মশাপে। নারীদের জন্যআরও কঠোর নির্দেশ। মনুস্মৃতিতে বলা হয়েছে সমকামী স্ট্রাইডির মাথা কামিয়ে, হাতের আঙ্গুল কেটে , গাধার পিঠে চড়িয়ে শাস্তির বিধান। ভারতের ইতিহাস বলছে যতই কঠোর নিদান থাক, দেশে বরাবর সমকামিতা ছিল। সাধারণত নাপিত, মুচি ইত্যাদি নিম্নে শ্রেণীতে যেমন সমকামিতা ছিল তেমন প্রভুর ভৃত্যের মধ্যে রাণী ওর প্রিয় পরিচালিকারে মধ্যেও সমকামিতা ছিল। অনেকেই। এই সম্পর্কে বিয়েও করতেন। অনেক নারী স্বামী ত্যাগ করে সমকামী হতেন। কখনও গোপনে, কখনও প্রকাশ্যে। (চলবে)
আগামী পর্ব সোমবার ,২২ সেপ্টেম্বর,২০২৫

*******
