বেশ্যার বারমাস্যা

পর্ব: ১৪৬

নিষিদ্ধপল্লীতে সন্ধ্যা নামার আগেই সস্তা পাউডার লিপস্টিকে সেজে মেয়েরা দাঁড়িয়ে থাকে খদ্দেরের আশায়। এদের পুনর্বাসনের চিন্তা করবে কে?

সুজিৎ চট্টোপাধ্যায় : যৌনকর্মীরা যেভাবে ২১ শতাব্দীতেও শোষনের শিকার সেখানে প্রশ্ন ওঠে এঁদের কি সুস্থ জীবনে ফেরানো সম্ভব? এই প্রসঙ্গে কাজী মুরশিদুল আরেফিন একটি নিবন্ধ লেখেন স্বদেশচর্চা লোক শারদ ২০১৬ সংখ্যায়। পত্রিকার ৩৭৩ পৃষ্ঠায় লেখক লিখেছেন, এই সামাজিক ব্যাধিকে নির্মূল করার চেয়ে গণিকাবৃত্তিকে উৎসাহ দেওয়ার দিকেই যেন আমাদের ঝোঁক। ভদ্রলোকেরা পতিতাদের ঘৃণা করতেই অভ্যস্ত। পতিতাবৃত্তির সঙ্গে যুক্ত মেয়েদের করুণ জীবনের বেদনার্ত ইতিহাস জানার চেষ্টা আমরা করি না, তাদের প্রতি সহানুভূতিরও লোকও নেই আমাদের মনের কোণে।

মফস্বলের নিষিদ্ধপল্লীর ছবি সর্বত্র একই।

লেখক লিখেছেন,শুধু শহরাঞ্চলেই নয়, গ্রামগঞ্জের সবুজভূমির আশেপাশেও নিষিদ্ধপল্লীর সংখ্যা দিনে দিনে বেড়েই চলেছে।। কাকদ্বীপের বাজারে অস্পৃশ্যা মেয়েরা সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে দুটাকার খরিদ্দারের অপেক্ষায়। ডায়মন্ডহারবার কিংবা বসিরহাট শহরেও একটি অবস্থা। সেখানে রেট একটু বেশি। আবাদ অঞ্চল থেকে মহকুমা শহরে এসে মামলা -মোকদ্দমা অথবা অন্যান্য কাজ সেরে একটু পতিতালয়ে না গেলে অনেকের ঠিআশ মেটে না। মাষ্টারমশাই , ব্যবসায়ী, অফিসার , কেরানি, কবি , সাহিত্যিক, অভিনেতা b, সমাজসেবী, নেতা- সবাই পতিতালয়ের খদ্দের।

ভবিষ্যতের চিন্তায় নগর নটী।

চব্বিশ পরগণার খোলাপোতা বাজারের নিষিদ্ধপল্লীতে বসবাসকারিণী কয়েকজন পতিতার সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলাম একটি সমাজকল্যাণ সংস্থার পক্ষ থেকে। জন- পনেরো মেয়ে ওই পল্লীতে আদিম পেশায় নিযুক্ত রয়েছে। নিষিদ্ধপল্লীর বাসিন্দারা কেউ আসল নাম বলে না। লেখক লিখেছেন, পতিতাদের জিজ্ঞাসা করেছি অসহায় অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য তারা সরকারের সমাজকল্যাণ সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে না কেন! উত্তরে তারা বলল: অনেক চেষ্টা করেছি। বহু জায়গায় আবেদন জানিয়েছি। কেউ কাজে নেবে না আমাদের উদ্ধারে আশ্রমে যেতে চেয়েছি। সেখানেও আমাদের স্থান নেই।( চলবে)

পরবর্তী পর্ব আগামী শুক্রবার ১২ সেপ্টেম্বর,২০২৫

*****

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *