বেশ্যার বারমাস্যা

পর্ব ১৪৫

এনজিও -র আশ্রয়ে যৌনকর্মীদের সন্তানেরা।

সুজিৎ চট্টোপাধ্যায়: নারী হিসেবে ঘর বাঁধা ও মা হওয়ার ইচ্ছে সব মেয়েদের মত যৌনকর্মী মেয়েদেরও থাকে। কিন্তু সামাজিক প্রতিকূলতায় সব মেয়ের স্বপ্ন সফল হয় না। অনেক যৌনকর্মীরা মেয়েরা বিয়ে করে অন্য জায়গায় গিয়ে সংসার পেতেছে । খুব কম সংখ্যক মেয়ে জীবনে নতুন স্বাদ পেয়েছে। বেশিরভাগের জীবন হয়েছে ট্র্যাজিক। অনেকে ফিরে গেছেন পুরানো পেশায়।

সম্মানের সঙ্গে পেশাগত অধিকারে যৌনকর্মী হিসেবে স্বীকৃতির দাবিতে পথে নিষিদ্ধপল্লীর মেয়েরা।

বিতর্ক ওঠে এই পেশা নির্মূল হওয়া প্রয়োজন। তারপর? এদের পুনর্বাসন? সমাজে স্বীকৃতি? দেবের কি সভ্য শিক্ষিত সমাজ? বরং যুগযুগ ধরে শোষণ আর বঞ্চনার মধ্য দিয়ে যৌনকর্মীদের জীবন অতিবাহিত হচ্ছে । কোলকাতার কিছু সামাজিক সংগঠন বা রাজনৈতিক নেতানেত্রীদের কিছু উদ্যোগ থাকে। কিন্তু মফস্বল বা গ্রামাঞ্চলে? বাড়ির কোনো আপনজন হয়ত শহর দেখাতে বা কাজ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে কলকাতায় নিয়ে গিয়ে মেয়ে বা বৌকে বেচে দেয়। হাত ঘুরে সেই মেয়েই হয়ত পৌঁছে যায় দিল্লি, মুম্বাই, চেন্নাই।

যৌনপল্লীতে পুলিশের হানা হপ্তা আদায়ের জন্য?

এই যৌনকর্মীদের সন্তানদের আজও পিতৃ পরিচয় নিয়ে সমাজের প্রশ্নের মুখে দাঁড়াতে হয়। অনেক যৌনকর্মী মায়েরা চান তাঁর কন্যাকে এই পেশা থেকে সরিয়ে সুস্থ জীবনে রাখতে। পড়াশুনা শিখিয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে। কয়েকজন পারেন। অধিকাংশই পারেন না যৌনপল্লীর মাসি , দালাল সেই স্বপ্ন ভেঙে চুরচুর করে দেয়। অনেকসময় দালাল ও মাসিদের যোগসাজগে পুলিশের খাতায় ওয়ান্টেড সমাজবিরোধীরা থাকে এই মেয়েদের ঘরে। ইচ্ছে না থাকলেও মেয়েদের বাধ্য হতে হয়। একসময় পুলিশ হানা দেয় । গ্রেপ্তার করে অপরাধীদের। আশ্রয় দেওয়ার জন্য সেই ঘরের মেয়েদের গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়ে পয়সার হাতিয়ে নেয়। এছাড়াও খদ্দেরদের যাতে নিষিদ্ধ পল্লীতে আসার সময় হয়রানি না করে তাই পুলিশকে হপ্তাও দিতে হয়। দালাল মাসি, পুলিশ সবাইকে খুশি করে বাকি থাকে খদ্দেরকে খুশি করার ভার।কখনও কখনও খদ্দেরদের বিকৃত যৌন আচরণও নিঃশব্দে মেনে নিতে হয়। (চলবে)

পরবর্তী পর্ব আগামী সোমবার ৮ সেপ্টেম্বর,২০২৫

*******

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *