পর্ব ১৩৩

মোঘলদের হারেমের মত হিন্দু রাজাদের অন্ত:পুরিকা।
সুজিৎ চট্টোপাধ্যায় : এই পর্বে আলোচ্য বিষয়, মোঘল আমলে যা হারেম নামে পরিচিত, ভারতে অন্ত:পুরিকা, সেই সম্পর্কে সুরেশচন্দ্র বন্দোপাধ্যায় ও রমলাদেবী তাঁদের ভারতীয় সমাজে প্রান্ত বাসিনী গ্রন্থে গণিকা সংক্রান্ত তথ্যের আকর অধ্যায়ে লিখেছেন,,, অন্ত:পুরিকাগণের পক্ষে পরপুরুষদর্শন ঘটে ওঠে না। অথচ শুধু পতিকে দিয়ে কাম প্রবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে চরিতার্থ হয় না। তারা ধাত্রী , সখী বা দাসীকে পূরুষের মতো সাজিয়ে কদলী প্রভৃতির কন্দ, তাল প্রভৃতির মূল, লাউ প্রভৃতির অংশইত্যাদি বা অন্য দ্রব্য দ্বারা কামজ্বালা নির্বাপিত করে থাকে। যাঁরা স্ত্রীর দ্বারা কাম চরিতার্থ করতে পারে না, তারা বিযোনিতে অর্থাৎ এড়ি বড়বাদি যোনিতে, কিংবা সমুৎকীর্ণ স্ত্রীলিঙ্গাদি স্ত্রী -প্রতিমাদিতে অভিপ্রায় নিবৃত্তি করে।

ভারতের কোঙ্কন ও মালাবার রাজ্যে রাজার অন্তঃপুরে বাইরের পুরুষের প্রবেশের অধিকার ছিল।
এরমধ্যে দেশাচারের কথাও আছে। লেখকদ্বয় লিখেছেন , অপরান্তক দেশ অর্থাৎ কোঙ্কন ও মালাবার। এখনকার রাজ কুলচারিণী নারীরা সুন্দর পুরুষগণকে অন্তঃপুরে প্রবেশ করায়। আভী রক দেশ ( গুজরাটের দক্ষিণ- পূর্ব অঞ্চল) সেখানে ক্ষত্রিয় সংজ্ঞক ব্যক্তি বা অন্তঃপুর রক্ষীদের সঙ্গে অন্ত:পুরিকারা সম্ভোগ করে।

হিমালয় অঞ্চলের স্ত্রী শাসিত অঞ্চলে শুধু স্থানীয় পুরুষদের অন্তঃপুরে প্রবেশের অধিকার ছিল।
বাৎস্যগুল্মক দেশ ( মহারাষ্ট্রের। নাসিক ও মেবারের বাকাটক রাজবংশের একটি শাখার নাম বৎসগুলা; সম্ভবত এই নামানুসারে দেশের নাম ) প্রেষ্যানারীদের সঙ্গে সেই বেশধারী নাগরক পুত্রগণকে অন্তঃপুরমধ্যে প্রবেশ করতে হয়।
বিদর্ভদেশ যা বর্তমানে মেবার ও সন্নিহিত অঞ্চল সেখানে কামার্ত নিজপুত্রগণই মূখ্যমাতোকে বর্জন করে সকল অন্ত:পুরিকা মাত্রেই অভিগমন করে।
স্ত্রী রাজ্য ( সম্ভবত হিমালয় অঞ্চলে কোন স্ত্রী প্রধান রাজ্য ) প্রবেশক্ষম জাতি সম্বন্ধীদের সঙ্গে অন্তঃপুরনারীগণ অভিগত হয়। (চলবে)
পরবর্তী পর্ব আগামী সোমবার ,২৮ জুলাই,২০২৫
