পর্ব: ১১২

লিঙ্গপুরাণে সাত ধরণের বেশ্যার কথা আছে।
সুজিৎ চট্টোপাধ্যায়: লিঙ্গপুরাণে বেশ্যা সাতপ্রকার।১) গুপ্তবেশ্যা, তন্ত্রসাধক বংশজাতা, লজ্জাহীনা , কামার্তা ।২) কুলবেশ্যা – তন্ত্রক্রিয়া থেকে জাতা বেশ্যা কুলবেশ্যা নামে খ্যাতা।৩) কুলবেশ্যা স্বেচ্ছায় দিগম্বরী হলে মহাবেশ্যা নামে পরিচিতা হন।৪) কুলবেশ্যা যদি তান্ত্রিক সাধনরতা হয়ে বীরভাবের সাধকের পত্নী হন, স্বেচ্ছায় বিপরীতগামিনী অর্থাৎ নিবৃত্তি মার্গগা হন, তাহলে তিনি মহোদয়া নামক বেশ্যা বলে খ্যাতা হন।৫) যে বেশ্যা রাজার মত অর্থাৎ স্বাধীন , তাঁকে রাজবেশ্যা বলা হয়।৬) দেববেশ্যা।৭) দেববেশ্যা যদি তান্ত্রিক রহস্য পূজাদি সাধনকারিণী হন তাহলে তিনি ব্রহ্মবেশ্যা বলে খ্যাতা হন।

হিন্দু শাস্ত্রে বেশ্যার অর্থ তন্ত্র সাধিকা।
একটা জিনিষ পরিষ্কার, শাস্ত্রে বেশ্যার অর্থ কুলটা বা গণিকা নন। বেশ্যা= পূর্ণাভিষিক্তা সাধিকা আর বেশ্যাদ্বারমৃত্তিকা ওই সাধিকার দ্বারমৃত্তিকা। ভ্রমবশত: আমরা কুলটা বা পতিতার দ্বার মৃত্তিকা দ্বারা দেবী দুর্গার মহাস্নান সম্পন্ন করি, মা অসিদ্ধ। পূর্ণাভিষিক্তা সাধক ও সাধিকা সাক্ষাৎ শিব – পার্বতী।

দশ মহাবিদ্যা শাস্ত্রমতে বেশ্যা।
যে গৃহে পূর্ণাভিষিক্তা সাধক – সাধিকাসহ বীরাচারী মতে সাধনভজন ও চক্রানুষ্ঠানাদি গুহ্য তন্ত্রসাধনা নিষ্পন্ন করেন, সেই গৃহের দ্বারমৃত্তিকা প্রকৃত বেশ্যা দ্বারমৃত্তিকা। এই তথ্যগুলি পরিবেশন করেছেন সন্দীপ ঘোষ বাংলা ও বাঙালি সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকার ১৬ মার্চ ২০১২ সংখ্যায়। তিনি লিখেছেন, কালী তারা ত্রিপুরাদি দশ মহাবিদ্যা এবং তাঁদের আবরণ দেবতাকে বেশ্যা বলা হয়। মহাকালসংহিতায় কালীখণ্ডে কালীককারাদি সহস্রনামস্তোত্রম – এ কালীকে সর্বজ্যেষ্ঠা বেশ্যা বলা হয়েছে। তন্মাদ বেশ্যা বরা মতা। পূর্ণাভিষিক্তা শক্তি কোনও মহাবিদ্যার আবরণ দেবতার মধ্যে সন্নিবিষ্টা হন বলে তিনি বেশ্যা -; এই উচ্চ উপাধিভূষিতা হন। (চলবে)
আগামী পর্ব ১৬ মে, শুক্রবার,২০২৫
