পর্ব ৯৩

পৌরাণিক চরিত্র ইব্রাহিম।
সুজিৎ চট্টোপাধ্যায়: গত পর্বে হারেম ও রক্ষিতার প্রসঙ্গে আলোচনায় করছিলাম। দেশ ছেড়ে গিয়েছিলাম গ্রীসে।যায় পর্বের গ্রীস ভ্রমণ করব। গ্রীসের রক্ষিতা প্রসঙ্গে নিকলাওস এর প্রাচীন গ্রীসে প্রেম ও যৌন জীবন গ্রন্থের অনুবাদ করতে গিয়ে অনুবাদক আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু লিখেছেন,এক্ষেত্রে আমরা ইব্রাহিমের কথা স্মরণ করতে পারি, যিনি তার স্ত্রী সারাহ কর্তৃক প্ররোচিত হয়ে মিশরীয় পরিচারিকা হাগারকে রক্ষিতা হিসেবে গ্রহণ করেন, তার গর্ভে সন্তানের জন্ম দেয়ার জন্য। ইব্রাহিমের স্ত্রী সারাহ তাঁকে সন্তান দানে ব্যর্থ হন। হাগার নামে তার এক পরিচারিকা ছিল এবং সারাহ ইব্রাহিমকে বলেন, আমার কথা শুনুন, ঈশ্বর আমাকে সন্তান ধারণের ক্ষমতা দেননি। আপনি আমার পরিচারিকাকে গ্রহণ করুন। আমি হয়তো তার গর্ভে আমার সন্তান লাভে সক্ষম হবো। ইব্রাহিম মনোযোগ সহকারে সারাহর কথা শ্রবণ করেন। ইব্রাহিম দশ বছর কেনানে অবস্থান করার পর স্ত্রী সারাহ মিশরীয় পরিচারিকা হাগারকে তার স্বামীর স্ত্রী হিসেবে প্রদান করেন।

পৌরাণিক চরিত্র ইব্রাহিম, স্ত্রী সাবাহ, রক্ষিতা হাগার
লেখক লিখেছেন,কিন্তু বাস্তবে ইব্রাহিমের একাধিক রক্ষিতা ছিল: ইব্রাহিম আরেকজন স্ত্রীকে গ্রহণ করেন, যার নাম কেতুরাহ। তার গর্ভে ইব্রাহিমের সন্তান জিমরান , জকশান, মেডান, মিডিয়ান, ইশবাক ও শুয়াহ’র জন্ম হয়। ইব্রাহিম তার সবকিছু দান করেন ইসহাককে। কিন্তু রক্ষিতাদের দান করেন কিছু উপহার সামগ্রী এবং তার জীবদ্দশাতেই পুত্র ইসহাকের কাছে থেকে অবশিষ্ট পুত্রদের দূরে পাঠিয়ে দেন দেশটির পূর্বদিকে ( বাইবেল)।
এই ঘটনা থেকে এটা পরিষ্কার সেই যুগের স্ত্রীরা জানতেন সন্তান জন্ম না দিতে পারলে স্বামী মুখ ফিরিয়ে নেবেন। তাই স্বামী সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই স্ত্রী স্বামীকে উৎসাহিত করতেন অন্যত্র স্ত্রী বা রক্ষিতার সাহায্যের সন্তান উৎপাদনের। গ্রীক মহাকাব্য হোমারের ইলিয়াডে রক্ষিতার উল্লেখ আছে ভুরিভুরি। ফনিক্সের পিতা রাজা অ্যামিন্তর তার রক্ষিতাকে ভালোবাসতেন স্ত্রীর চাইতেও বেশি এবং স্ত্রী প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য ও স্বীয় অধিকার রক্ষার জন্য নিজ পুত্রকে প্রলুব্ধ করেন স্বামীর রক্ষিতাকে সঙ্গম করার জন্য, যাতে তিনি তার বৃদ্ধ স্বামীর প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করতে পারেন ( চলবে)
আগামী পর্ব ৭ মার্চ , শুক্রবার ২০২৫

****