পর্ব : ৭৩
সুজিৎ চট্টোপাধ্যায়: আমাদের যৌবনে একটি বিখ্যাত বচন ছিল, কেষ্ট করলে লীলা, আমরা করলে বিলা। বিলা শব্দের কোনো আভিধানিক অর্থ খুঁজে পাইনি। সম্ভবত শস্ল্যাং ল্যাঙ্গোয়েজ। অর্থাৎ অপরাধ। বারবনিতা অর্থাৎ পয়সার বিনিময়ে যে সব মেয়ে পুরুষের শয্যাসঙ্গিনী হয় তাঁরা পাপী । কৃষ্ণ স্বয়ং তো সব মেয়েদেরই উদ্দেশ্যে গীতায় নবম অধ্যায়ের ৩২ নম্বর শ্লোকে লিখেছেন, নারী পাপযোনি থেকে উদ্ভুত। অথচ পুরাণ সাহিত্যে দেবতাদের ও আর্য পুরুষদের ভোগের বস্তু হিসেবে নারী সম্ভোগ ছিল জলভাত।
এই বইতে মিলবে দেবতাদের যৌনতার কথা।
স্বপন ঘোষ বাংলা ও বাঙালি সাপ্তাহিক পত্রিকায় বর্ষ ১ সংখ্যা ১৯/২১ ৪৬ পৃষ্ঠায় কামসিক্ত পুরাণ শীর্ষক প্রবন্ধে লিখেছেন, যম অগ্নির পুত্রবধূর প্রেমে পড়েন। তিনি ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে আশ্রমে গেলেন। কারণ তিনি জানতেন অগ্নিপুত্র তাঁর স্ত্রীকে বলেছিলেন, ব্রাহ্মণ অতিথি এলে যেন তাঁকে তৃপ্ত করা হয়। তিনি যেন অতৃপ্ত হয়ে ফিরে না যান। যম ব্রাহ্মণ বেশে আসতেই পুত্রবধূ তাঁকে যথাসাধ্য অ্যাপ্যায়ন করলেন। কারণ তিনি পরিব্রতা। ব্রাহ্মণ যখন তাঁকে সম্ভোগ করতে চাইলেন তিনি বিছানায় ডেকে নিলেন যাতে ব্রাহ্মণ অতৃপ্ত না হন।
গুরু বৃহস্পতির স্ত্রীর সঙ্গে ছাত্র চন্দ্রের প্রেম পুরাণের উপাখ্যান।
তারা দেবতাদের গুরু বৃহস্পতির স্ত্রী। বৃহস্পতির শিষ্য চন্দ্রের সঙ্গে পরকীয়ায় তারা এক সন্তানের জন্ম দেন । যার নাম বুধ। কেলেঙ্কারিbরুখতে মাঠে নামেন স্বয়ং ব্রহ্মা। সমঝোতা হয়। চন্দ্র ফিরে যান। কিন্তু বুধকে মেনে নিতে হয় গুরু বৃহস্পতির। এরকম বহু দেবতা ও মুনি ঋষির যৌন লাম্পট্যের হাজার তথ্য আছে।একটু লিঙ্গ পুরাণে চোখ রাখা যাক। সন্দীপ ঘোষ ওই একই পত্রিকায় লিঙ্গপুরাণে বেশ্যা শীর্ষক একটি প্রবন্ধ লেখেন ৪৪ পত্রিকায়। তিনি লিখেছেন,,, শ্লীল -অশ্লীল -এর সহবস্থান সর্বত্রই। লিঙ্গপুরাণে আছে ঋষি ও দেবতাগণের প্রশ্নের উত্তরে ব্রহ্মা জানান, প্রকৃতি হচ্ছে লিঙ্গ এবং সাক্ষাৎ পরম ব্রহ্ম হচ্ছে লিঙ্গি। প্রলয় মূহূর্তে এই লিঙ্গ আবির্ভূত হয়। বেশ্যা শব্দের সঠিক অর্থ সম্বন্ধে অবহিত না হয়েই আমরা শব্দটিকে ব্যবহার করি বটে কিন্তু চৌষট্টি কলায় পারদর্শিনী, অসামান্য রূপবতী v, গুণবতী, শিলবতী হলেও বাৎস্যায়নের মতে তাঁরা কম্ভদাসী, রূপাজীবা -, কূলটা, স্বৈরিণী, নটী, শিল্কারিকা,পরিচারিকা, প্রকাশবিনষ্টা ছাড়াও গণিকা হতে পারেন কিন্তু বেশ্যা নৈব নৈব চ। (চলবে)
পরবর্তী পর্ব , আগামী শুক্রবার ২৭ ডিসেম্বর,২০২৪
**************