পর্ব : ৭২
বীর বানররাজ বালীর জন্ম ইন্দ্র ও সূর্য সারথি অরুণের সমকামিতায়।
সুজিৎ চট্টোপাধ্যায় : এবারের পর্বে একটু আলোচনা করব পুরাণে যৌনতা নিয়ে। তথ্য সৌজন্য স্বপন ঘোষীর। পত্রিকার নাম বাংলা ও বাঙালির। সাপ্তাহিক এই পত্রিকার প্রথম বর্ষের ১৯_২১ সংখ্যা। কামসিক্ত পুরাণ শীর্ষক একটি প্রবন্ধে লেখকI লিখেছেন, স্কন্দ পুরাণ, ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ, লিঙ্গ , শিব ইত্যাদি আঠেরোটি পুরাণ থেকে কামবিষয়ক যা বর্ণনা পাওয়া যায়, তা থেকে আর একটি পুরাণ হতে পারে কামপুরাণ। পরে বাৎস্যায়ন ঋষি সেট কাজটি সমাধা করেছিলেন। লেখক প্রথম বর্ণনা দিলেন বিষ্ণুর বাহন গরুড়ের বড় ভাই অরুণ প্রসঙ্গে। তিনি তখনও মাতৃগর্ভে পূর্ণ হননি। মা মায়া অতির উৎসাহে ডিমের খোলসটি ভেঙে ফেললেন। মা দেখলেন, অর্ধস্ফুটিত সন্তানকে। ভীষন সুন্দর রূপ। রূপের আভায় একটি জ্যোতি প্রকাশ পাচ্ছে, পরে যে সূর্যের সারথি হবে ।
নারদের নারী রূপে মোহিত সম্ভোগ করে ষাট সন্তানের জন্ম দেন।
এবার নিজের সৌন্দর্য পরীক্ষার জন্য অরুণ ইন্দ্রসভায় গেলেন নারীর রূপ ধরে। ইন্দ্র তাঁকে দেখে কামনায় তার মধুর অধরসুধা পান করার জন্য ব্যগ্র হলেন। অরুণের সঙ্গে সঙ্গমে লিপ্ত হলেন। বালির জন্ম হল। সূর্য অরুণকে বললেন, তুমি আর একবার যাও ইন্দ্রের কাছে। ইন্দ্রের সঙ্গে যৌনমিলনে রপ্ত হও। এবার জন্ম হলো সুগ্রীবের।
ব্রহ্মা ও শূকরী মিলনে জাম্বুবানের জন্ম
লেখক স্বপন ঘোষ লিখছেন, নারদও একবার স্ত্রীরূপ ধারণ করেছিলেন।কৃষ্ণ তাকে দেখে তাঁর যৌন প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেন না। তাঁদের ষাটটি সন্তান জন্ম নিয়েছিল। বিশ্বকর্মা তিলোত্তমাকে সৃষ্টি করলেন। ব্রহ্মা তাঁকে দেখে আর স্থির থাকতে পারলেন না। কামনায় দগ্ধ হয়ে তিনি তিলোত্তমাকে সম্ভোগ করতে চাইলেন। তিলোত্তমা সেখান থেকে পালালেন। ব্রহ্মাও পিছু পিছু ছুটলেন। এবং জোর করে ধর্ষণ করলেন। বিশ্বকর্মা তাই দেখে তিলোত্তমাকে বললেন, তুমি এখান থেকে চলে যাও। একদিন ব্রহ্মা কামনায় পীড়িত হয়ে নদীর ধারে ভ্রমণ করছিলেন, যদি কোনও যৌবনবতী কন্যার দেখা পান। ঝোপের মধ্যে এক নারী শূকরী ছিল। তিনি তাকেই শৃঙ্গারে তৃপ্ত হলেন। যার পুত্র হল জাম্বুবান। অর্থাৎ সীতা উদ্ধারে যারাই রামকে সাহায্য করেছিলেন, তারা সবাই ধর্ষণে বা সমকামের শিকারদের সন্তান। ( চলবে)
আগামী পর্ব ২৩ ডিসেম্বর, সোমবার,২০২৪
******