দিগদর্শন ওয়েব ডেস্ক : উল্টা বুঝিলি রাম। একদিন জাত ছিল গরীবের খানা , আজ তা রাজকীয় ভোজ। হ্যাঁ বাঙালির পছন্দের ভাত যদি জাফরানিরঙে স্নান সেরে পেটের ভেতরে লুকিয়ে রাখা আলু ও মাংসের টুকরো দিয়ে হাতছানির দিয়ে ডাকে কোন বাঙালি সম্মোহিত না হবেন। বিরিয়ানির সৌরভে কাত সৌরভ গাঙ্গুলিও। বিরিয়ানি বা কাবাব নাকি মোঘলাই খানা। ইতিহাস বলছে, দক্ষিণ ভারতে ২০০ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ উন সোরু নামে যে ভাত মাংসের যুগলবন্দী খানার প্রচলন ছিল বিরিয়ানি নবতম সংস্করণ নয় তো?
বৈদিক যুগে মাংস দিয়ে রাঁধা ভাতকে বলা হয় মাংসৌদন। মোরগ , ময়ূর, ছাগ, বৃষ, বরাহ, মৃগ এইসব প্রাণীদের মাংসে দিয়ে সুস্বাদু পলান্ন তৈরি হতো। এমনই উল্লেখ আছে বৃহদারণ্যক উপনিষদে। বৈদিক যুগে বিয়ে বা সামাজিক অনুষ্ঠানে বন্ধ্যা গাভী শূলে গেঁথে মাংস বিভিন্ন মশলা ওর কোলের রস ,দৈর মাখিয়ে ঝলসানো হতো। পানিনি শাস্ত্রে ও সুশ্রুত সূত্রে মাংস চটকে লেচি বানিয়ে মশলা ও ফলের রস দিয়ে জারিত করে কাবাব তৈরি হতো। ফার্সি শব্দ হলেও কাবাব উত্তর আমেরিকায় পথ চলতি শাশলিক ও ডোনার কাবাব নামে জনপ্রিয়।কলকাতায় বাঙালি খানার দোকানে ক্রমশ পরিচিত হয়ে উঠেছে আহারে বাঙালি। দমদম নাগের বাজারে মোড়ে একই ছাদের নিচে দোতলায় বাঙালি খানা আর একতলায় কলকাতা ১৮৫৬।
এই বছরেই লখনৌর নবাব ওয়াজেদ আলী গৃহবন্দী হিসেবে আসেন মেটিয়াবুরুজে। তাঁর হাত ধরেই কলকাতা পেল আলু সহযোগে বিরিয়ানির স্বাদ। শুধুআমিষ নয়, নিরামিষ বিরিয়ানির সঙ্গে মিলছে ভেজ টিক্কা। মাংস তো বটেই মৎস্যপ্রেমী বাঙালির জন্য আছে তন্দুরি ফিস টিক্কা ও অমৃতসরি ফিস টিক্কা। অবশ্যই ভেটকি মাছের টিক্কা। এছাড়া খাসি ও মুরগির নানার পদ তো আছেই। আছে রুটি, নান, কুলচা। থাকছে নানা স্বাদের স্যালাড।যায় খিদেকে বাড়িয়ে তুলবে । কলকাতা ১৮৫৬ এর মেন শেফ বিকাশ সর জানালেন, সেরা মাছ মাংস, মশলা, ঘি দিয়ে তৈরি এই মোঘলাই খানা আট থেকে আশি সবার জন্য নিরাপদ।