দিগদর্শন ওয়েব ডেস্ক: গভীর রাতে মাতাল হয়ে বিজেপি সরকারের মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর মতুয়া সম্প্রদায়ের পরম আরাধ্যা প্রয়াত বড়’মার ঘরের দরজা ভেঙে ঢোকেন সম্পত্তি দখলের জন্য। সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও গুন্ডারা। জুতো পড়েই তারা ঢুকে পড়েন বড়’মার ঘরে।হিন্দি সাম্রাজ্যবাদী দলের পোষা সৈনিক হিসেবে ঠাকুরবাড়ির সদস্য হয়ে মতুয়া ধর্মে বিশ্বাসী মানুষদের
মনে আঘাত দিয়েছেন ব্যক্তি স্বার্থে। এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য বাংলা পক্ষের অধিনায়ক গর্গ চ্যাটার্জির। শুক্রবার বিকেলেকলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে মতুয়া মহাসংঘ ডক্টরস সেল ওইয়ার সেল। এই সন্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন গর্গ চ্যাটার্জি। উপস্থিত ছিলেন অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের চিকিৎসক সংগঠনের পদাধিকারী ডা,: পার্থ প্রতিম মণ্ডল, মহাসংঘের সাধারণ সম্পাদক নলিন বিশ্বাস , অল ইন্ডিয়া সিডিউল কাস্ট ফেডারেশনের সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় মল্লিক, সমীর চট্টোপাধ্যায়, মতুয়া সম্প্রদায়ের সুনীল গোঁসাই ও গৌরাঙ্গ গোঁসাই প্রমুখ।
সম্মেলনের প্রথম বক্তা বাংলা পক্ষের প্রধান গর্গ চ্যাটার্জি তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বলেন, কয়েকদিন আগে রাজ্যে এক ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে যা বাঙালি জাতির ভক্তিবাদী সংস্কৃতিকে অপমান করেছে দিল্লির হিন্দুত্ববাদী নামধারী বাঙালি বিদ্বেষী বিজেপি সরকার। স্থানীয় কিছু দালালদের দিয়ে মতুয়া ধামের সর্বজন শ্রদ্ধেয়া প্রয়াত বড়’ মার ঘর ভেঙে ঢোকে সম্পত্তি হাতাতে। এটা কল্পনার বাইরে। পবিত্র স্থান ঠাকুরবাড়ির কেউ সদস্য এমন করতে পারে কেউ ভাবে নি। আপনারা জানেন, রাজ্যসভায় শপথ নিতে যান ঠাকুর পরিবারের মমতাবালা ঠাকুর। সেখানে তিনি গুরু হরিচাঁদ গুরুচাঁদ ঠাকুরের নামে শপথ নিতে গেলে তাঁকে রুখে দেন একদা রাজ্যের রাজ্যপাল ও বর্তমান উপ রাষ্ট্রপতি আরেক বাঙালি বিদ্বেষী ধনকর।
বিজ্ঞাপন
সংগঠনের অন্যান্য নেতারা বলেন, ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী মোদী ঠাকুরনগরে এসে বড় মা বীণাপাণি দেবীর পায়ে পড়ে যান। এই ভক্তি স্রেফ মতুয়া ভোট ব্যাংক পকেটে পুরতে। সেসময় মতুয়াদের আশ্বাস দেওয়া হয় উদ্বাস্তু মতুয়া সম্প্রদায়কে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। কিন্তু সম্প্রতি সি এ এ বিল পাশ হতেই বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতারা শুধু নন ,তাদের অন্যতম দলদাস শান্তুনু ঠাকুর সরল মতুয়াদের ভুল বোঝান সি এ এ মতুয়াদের নাগরিকত্বের নিরাপত্তা দেবে।কিন্তু মতুয়ারা বুঝে গেছেন বিজেপি ও তাঁদের ঠাকুর বাড়ির দালালরা ভুল বোঝাচ্ছেন। তাই মতুয়া নিঃশর্ত নাগরিকত্বের দাবি জানানোয় বিপদে পড়ে গেছেন শান্তুনু ঠাকুর। মমতাবালা ঠাকুর সম্পর্কে জ্যেঠিমা। তবু সম্পত্তির লোভে তাঁকে আক্রমণ করছেন।
এবারের নির্বাচনে রাজ্যের মতুয়া সম্প্রদায় শান্তুনু ঠাকুর ও তাঁর প্রভুদের বুঝিয়ে দেবেন বড় মা এবং মতুয়া সম্প্রদায়কে অপমান করার ফল কি হতে পারে? এই। প্রতিবেদকের প্রশ্ন ছিল, মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা বৈদিক বা হিন্দু পৌত্তলিক ধর্মের বিরোধী। ব্রাহ্মণ্যবাদী বর্ণ বিভাজনের বিরোধী এক আলাদা ধর্মের প্রতিষ্ঠা করেন হরিচাঁদ ঠাকুর ও গুরুচাঁদ ঠাকুর। তাহলে হিন্দুত্ববাদী জয় শ্রীরাম ধ্বনি দেওয়া দলকে সমর্থন দিয়েছেন মতুয়াদের এক বড় অংশ।একাংশ এখনও দিচ্ছেন। তাহলে তো মতুয়া সম্প্রদায়ের একাংশ নিজেরাই নিজেদের আরাধ্য দেবতাকে অমান্য করে অপমান করছেন। এবার কি শান্তুনু ঠাকুর বা মতুয়া অধ্যুষিত এলাকায় মতুয়া ভোট কি বিজেপি পাবে না? উদ্যোক্তা সংগঠন সরাসরি এই প্রশ্ন এড়িয়ে বলেন, ভোট ব্যাক্তিগত মতামত প্রদানের বিষয়। সেখানে আমরা হস্তক্ষেপ করব না।