ব্যবহারিক জীবনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও অপ্রকৃত বাস্তবতা বিপণনে উদ্যোগী ধৃতি চ্যাটার্জি

**

শ্রীজিৎ চট্টরাজ : বিশ্ব সৃষ্টির পর বিজ্ঞানের ধারণা যখন মানুষের এলো সময়ের ব্যবধান ঘটেছে অনেক। গ্রিক গণিতবিদ ইরাটোস্থীনিস স্রেফ জ্যামিতি ব্যবহার করেই পৃথিবীর ব্যাস যে ৪০০ মাইল আবিষ্কার করেছিলেন। এরপর অ্যারিস্টটল , ইউক্লিড টলেমির হাত ধরে মানুষ বিজ্ঞানের বিবর্তন ঘটিয়েছে। সম্ভবত ৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে ইরাকের বিজ্ঞানী ইবন আল হইতাম পিনহোল ক্যামেরার উদ্ভাবন করেছিলেন। মানব সভ্যতায় বিজ্ঞান যত বিস্ময়কর আবিষ্কার করেছে কল্পনায় ইচ্ছে ডানা মেলেছে ততই সাহিত্যে তাই কল্প বিজ্ঞানে ১৯ শতকের শেষে জুলস ভার্ন ও এইচ জি ওয়েলস সৃষ্টি করেছেন কল্প বিজ্ঞানের গল্প। বাঙালির অনুসন্ধানী মনকে প্রশ্রয় দিয়ে বাংলা সাহিত্যে শান্তিনিকেতনের শিক্ষক জগদানন্দ রায় লেখেন শুক্র ভ্রমণ। সময়টা ছিল ১৮৭৯। সত্যজিৎ রায়ের প্রফেসর শঙ্কুর কথা আজ আর নতুন করে বলার নেই।

বিজ্ঞানের এক বিস্ময়কর আবিষ্কার ভার্চুয়াল রিয়েলিটি। এটি এমন একটি অনুভূতি যা বিশেষ ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বাস্তব বা অতি বাস্তব কোনো অভিজ্ঞতা যা কম্পিউটার প্রযুক্তিতে বিপ্লব এনে দিয়েছে। মহাভারতে সঞ্জয় ধৃতরাষ্ট্রকে সুদূর হস্তিনাপুরের প্রাসাদে বসে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের বিবরণ শুনিয়েছেন প্রতি মুহূর্তের ধারাবিবরণী কি ইল্যুইশন তৈরি করত অংশ ধৃতরাষ্ট্রের? কিম্বা পাণ্ডবদের বিশ্বকর্মার তৈরি ইন্দ্রপ্রস্থ দেখতে এসে জলকে স্থল স্থলকে জল অনুভব করেছিলেন দূর্যোধন। সেক আজকের ভার্চুয়াল রিয়েলিটি,? এমনটাই কল্পনা করছিলেন মহাভারতের রচয়িতা? আজ সেই কল্পনা বাস্তব । আমাদের দেশেও সিনেমা বা ডিজিটাল গেমস্ এ ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ও এ আই অর্থাৎ অপ্রকৃত বাস্তবতা ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারিক জীবনে এক মুশকিল আসানের ভূমিকা নিয়েছে।

বঙ্গতনয়া ধৃতি চ্যাটার্জি পেশাগত ভাবে সাইবার সাইকোলজি নিয়ে কাজ করেন। চিন ভ্রমণে গিয়ে যখন দেখেন ক্লাস সেভেন এইটের ছাত্রছাত্রীরা জিনগত ডি এন এ নিয়ে প্রবল আগ্রহে পড়াশুনো করছে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রযুক্তির সাহায্যে। করোনা পরিস্থিতিতে বাড়িতে বসে স্বপ্নের জাল বুনেছেন ধৃতি কলকাতায় ভার্চুয়াল রিয়েলিটির এক সংসার গড়ে তুলতে। এখন বেশ কয়েকজন সঙ্গীকে সঙ্গে নিয়ে গড়ে তুলেছেন ডি সি ভিশন। স্থাপত্য , গৃহ নির্মাণ ও গৃহের অন্দরসজ্জায় ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ও এ আই প্রযুক্তিতে এক শৈল্পিক উদ্ভাবন বিপণন করছেন। মেশিন লার্নিং অ্যালোগরিদম ব্যবহার করে কল্পনাকে দ্রুত বাস্তবের উপস্থাপনা প্রদান যেমন গ্রাহকের সময বাঁচাচ্ছে তেমনই এক সীমাহীন রূপরেখা তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। ঘরে বসে ভবিষ্যতের নির্মাণের এক ত্রিমাত্রিক রূপ গ্রাহক উপলব্ধি করছেন মুহূর্তের মধ্যে। মঙ্গলবার বিকেলে কলকাতা সংলগ্ন সেক্টর ফাইভের নিজস্ব অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মিলিত হলেন ধৃতি চট্টোপাধ্যায়। জানালেন ভার্চুয়াল রিয়েলিটি নিয়ে তাঁর কর্মযজ্ঞ চলছে। চক্ষু , কর্ণ আর মস্তিষ্কের অনুভুতির যৌথ ইন্দ্রিয়ের প্রশ্রয় দুনিয়াকে এক নতুন উপলব্ধি দিচ্ছে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি। সাংবাদিকদেরও সুযোগ ঘটে চোখে বিস্ময় চশমা লাগিয়ে অনুভুতির অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *