
****
দিগদর্শন ওয়েব ডেস্ক : তেত্রিশ বছর আগে দক্ষিণ কলকাতার শেষপ্রান্তে ইস্টার্ন বাইপাসের ধারে মাকরদহ অঞ্চলে প্রাতভ্রমণে বেরিয়ে প্রয়াত সমাজসেবী নলিনী মুখার্জি গাছতলায় একদল কচিকাঁচাদের দেখেন খেলতে। তিনিও কিছুটা সময় কাটান তাদের সাথে। এরপর থেকে তাঁর প্রতিদিনের রুটিন হয়ে দাঁড়ায় এই শিশুদের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটানো। একদিন একটি শিশুর প্রশ্ন, তুমি কি আমাদের পড়াবে? মুহুর্তের জন্য অবাক প্রশ্নে অবাক হলেও না বলতে পারেননি তিনি।
নলিনী মুখার্জির পারিবারিক বন্ধু মনস্তাত্ত্বিক চিকিৎসক শত্রুজিৎ দাশগুপ্ত পরিচয় করিয়ে দেন স্বামী বিবেকানন্দ অনুগামী উদ্যোগী কমল প্রকাশের সঙ্গে। কমলবাবু বোঝেন, মাকড়দহ অঞ্চলে সমাজের বঞ্চিত সম্প্রদায়ের পরিবারের শারীরিক ও মানসিক পুষ্টির জন্য দরকার শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও স্বনির্ভরতা।১৯৯৩ সালে গড়ে উঠল দক্ষিণী প্রয়াস। মাত্র চারজন ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে যে চারা রোপণ হয়েছিল আজ তা মহীরুহ। গড়ে উঠেছে মাদুড়দহ সত্যাভৃত্তি বিদ্যালয়।
ক্রমশ বিদ্যালয়ের পরিধি বাড়তে থাকে ।এই মুহূর্তে ছাত্রছাত্রী সংখ্যা ৩১৭। শিক্ষক শিক্ষিকা ৩৭।৫ জন শিক্ষাকর্মী ,১২ জন স্বাস্থ্য ও সচেতনতা কর্মী এবং ৩৫ জন স্বনির্ভরশিবিরের মহিলা । শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি মহিলা অভিভাবকদের আর্থিক স্বনির্ভর গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সাফল্য আসছে। মহিলা স্বনির্ভরউদ্যোগীদের তৈরি হাতের কাজ বিপণনে বাজারজাত করার প্রয়াস ক্রমশ বাড়ছে।

দক্ষিণী প্রয়াসের ৩৩ তম প্রতিষ্ঠবার্ষিকী উৎসব পালিত হলো বাইপাসের ধারে কলকাতা সেন্টার ফর ক্রিয়েটিভিটিতে। উপস্থিত ছিলেন বিশেষ অতিথি এম পোকেট সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও মহা পরিচালক গৌতম জালান। দক্ষিণী প্রয়াসের এই বছরের থিম সোশ্যাল মিডিয়া ও ডিজিটাল আউটলেটের বাস্তবিকতা অনুধাবন। সংগঠনের পক্ষে বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা নৃত্য ও একটি নাটক পরিবেশন করে। বিষয়, এই মুহুর্তের কর্পোরেট প্রভাবিত মূল মিডিয়া সংস্থার কার্যকলাপ।
সংগঠনের পক্ষে সভানেত্রী অনুভূতি প্রকাশ বলেন, আমাদের লক্ষ্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য, স্বনির্ভরতা এবং স্থায়ীত্ব। আমাদের এটি শুধুমাত্র কোনো সংগঠন নয় এটি আমাদের পরিবার। সমাজের ব্যবসায়ী সমাজ ও বিভিন্ন স্তরের আর্থিক অনুদান ও মানসিক সহযোগিতাই আমাদের সাফল্যের চাবিকাঠি।