দিগদর্শন ওয়েব ডেস্ক : ২১ জানুয়ারি, ২০২৫-এ কলকাতার চিনা কনসুলেট চাইনিজ নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে হায়াত রিজেন্সি কলকাতায় এক বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করে। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ‘সাপের বছরকে’ স্বাগত জানানো হয় এবং চীন ও ভারতের মধ্যেকার কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭৫তম বার্ষিকী উদযাপন করা হয়, যা দুই দেশের গভীর সম্পর্কের পরিচায়ক।
কনসাল জেনারেল সু ওয়েই-এর প্রতিনিধিত্বকারী কার্যনির্বাহী কনসাল জেনারেল কিন ইয়ং উপস্থিত সকলকে আন্তরিক নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান। তিনি তাঁর বক্তব্যে চীন-ভারত সম্পর্ক দৃঢ় করার ক্ষেত্রে গত বছরের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মধ্যে হওয়া গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের কথা উল্লেখ করেন, যা দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব আরও সুদৃঢ় করার প্রতিশ্রুতি দেয়।
২০২৪ সালের সাফল্যের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে কিন ইয়ং চীনের অর্থনৈতিক অগ্রগতির কথা বলেন। তিনি জানান, চীনের বার্ষিক জিডিপি ১৩৫ ট্রিলিয়ন ইউয়ানে পৌঁছেছে, যা বছরে ৫% বৃদ্ধি প্রদর্শন করে। তিনি মহাকাশ, নবউদ্যত শক্তি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে চীনের বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতি এবং প্যারিস অলিম্পিক গেমসে চীনা ক্রীড়াবিদদের অসামান্য সাফল্যের কথাও তুলে ধরেন।
তিনি সাংস্কৃতিক বিনিময়ের গুরুত্বও তুলে ধরেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চীন সফরের ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে যৌথ উদযাপনের কথা স্মরণ করেন। পূর্ব ভারতের পণ্ডিত, শিল্পী, বৌদ্ধ ভিক্ষু এবং যুব প্রতিনিধিরা চীন ভ্রমণ করেন, আবার চীনা পণ্ডিতরা পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুজোর অভিজ্ঞতা লাভ করেন। এই বিনিময় দুই দেশের সভ্যতার মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়াকে আরও গভীর করেছে।
ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে কিন ইয়ং বলেন,“২০২৫ সাল চীন-ভারত কূটনৈতিক সম্পর্কের পঁচাত্তরতম বার্ষিকী। চলুন আমরা একসঙ্গে ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাই, দুই দেশের নেতাদের গুরুত্বপূর্ণ মতৈক্য বাস্তবায়ন করি এবং চীন-ভারত বন্ধুত্বকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাই।”
এই অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, চাইনিজ ঐতিহ্যবাহী সংগীত এবং চাইনিজ খাবারের প্রদর্শনী ছিল, যা অতিথিদের চাইনিজ ঐতিহ্যের এক অনন্য অভিজ্ঞতা প্রদান করে। অনুষ্ঠানটি শুধু চন্দ্র নববর্ষ উদযাপনেই থেমে থাকেনি, বরং চীন ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্ব এবং সহযোগিতার বন্ধনকে আরও দৃঢ় করেছে।