*
শ্রীজিৎ চট্টরাজ: সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছিলেন ঈশ্বর ভারতীয়দের উপহার দেয়ার জন্য একটা তালিকা তৈরি করেছিল। আর শাড়ি ছিল সেই তালিকায় শীর্ষে। রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন ঘরেতে এলো না সে তো, মনে তার নিত্য আসা যাওয়া, পরণে ঢাকাই শাড়ি কপালে সিঁদুর। মৈত্রেয়ীদেবী বলেছিলেন আমি আধুনিকা নারীদের চেয়ে ছয় গজ এগিয়ে থাকি , কারণ আমার পছন্দের পোশাক শাড়ি।
ব্রিটিশ ফ্যাশন ডিজাইনার অ্যালেক্সা চুং বলেছেন, আমি ভারতীয়দের হিংসা করি কারণ ওদের কাছে শাড়ির মত একটা অসামান্য ফ্যাশনেবল পোশাক রয়েছে। এই ঐতিহ্যের পোশাক শাড়ির বিপুল স্টক নিয়ে হাওড়ার বোটানিক্যাল গার্ডেনের কাছে দানেত শেখ লেনের মোড়ে সাইবালাজি কমপ্লেক্সে ২০০৮ সাল থেকে পোশাক বিপণি নির্মাণ করেছেন গৃহবধূ সংহিতা রায়চৌধুরী।
স্বামী সোম রায়চৌধুরীর উৎসাহে সাধ ও সাধ্যের সঙ্গে সমন্বয় রেখে বেশ কয়েকজন কর্মীর দায় কাঁধে নিয়ে শাড়ি, কুর্তি ও ছেলেদের পাঞ্জাবি, শার্টের ব্যুটিক পোশাকের সঙ্গে মেয়েদের একটি টেলারিং বিপণিও পরিচালনা করছেন সংহিতা। চাকরি ছেড়ে দুচোখে স্বপ্ন নিয়ে ‘এসো কিছু করে দেখাই’ সংকল্পে পথ চলা শুরু হয়েছিল। ইচ্ছে ছিল আই পি এস হওয়ার। কিন্তু নারী সত্ত্বার তাড়নায় হৃদয়ে পুষে রেখেছিলেন শুধু নিজের নয় , বেশ কয়েকজনের সম্মানের সঙ্গে জীবনযুদ্ধের সহযোগী হওয়ার। আজ তাঁর বিপণির ক্রেতারা শুধু ক্রেতা নন, যেন পরিবারের সদস্য এমনটাই জানালেন বিপণিতে আসা বেশে কয়েকজন ক্রেতা।
সংহিতা জানালেন, আমার দোকান রুমস্ অ্যান্ড মুনস্ এর ট্যাগলাইন সাধ ও সাধ্যের সমন্বয় ঘটিয়ে শুধু তোমাকে নয়, তোমার জীবনকে সাজিয়ে তোলো। স্টাইল বা ফ্যাশন দামী পোশাকে নির্ভর করে না , নির্ভর করে রুচি নির্ভরতার ওপর। বছর বছর ফ্যাশন বদলায় এটা ব্যবসার ধারা। কিন্তু আমি যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে স্থান কাল পাত্র ও সময়কে মনে রেখে যেমন পোশাকের স্টক নিজে পছন্দ করে সংগ্রহ করি, তেমন নিজের টেলারিং বিভাগে পোশাক নির্মাণে শৈল্পিক রূপ দিই। নানা ধরণের শাড়ি, কুর্তি ও ছেলেদের নিজেদের ব্র্যান্ডের ডিজাইনে পাঞ্জাবি আমরা নির্মাণ করি।
আমরা পুরানো ধারণা পাল্টে দিতে পেরেছি। ব্যুটিক মানে দুর্মূল্য নয়। সাধ্যের মধ্যেই পোশাক হয়ে উঠতে পারে ব্যক্তিত্বের সঙ্গী। তিনশ থেকে তিরিশ হাজার টাকা পর্যন্ত মূল্যের পোশাক থাকলেও গুরুত্ব দিই ক্রেতার সাধপূরণের। সারা বছর একদর থাকলেও স্বাধীনতা দিবসে জন্মদিন উপলক্ষে সেদিন থেকে সপ্তমী পর্যন্ত প্রয়োজনীয় উপহার যেমন দিই, তেমন এবার পুজোয় নতুন ক্রেতাদের ৯৯৯ টাকার কেনাকাটা করলে অতিরিক্ত ১০ শতাংশ ছাড় মিলছে।
সংহিতা জানালেন ,বিশ্বের যে প্রান্তেই থাকুন না ক্রেতারা ফেসবুকে ও ইনস্টাগ্রামে নিয়মিত আমাদের পেজে আমাদের পোশাকের বিবরণ দেখে যোগাযোগ করতে পারেন। আপনার চাহিদা পূরণে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। রুমস্ অ্যান্ড মুনস্ নামে ডিজিটাল মাধ্যমে লেনদেন করা যায়।আমরা পৌঁছে দেব বাড়িতে।